ই-পেপার রোববার ৬ অক্টোবর ২০২৪
রোববার ৬ অক্টোবর ২০২৪

সওজের জায়গায় অবৈধ স্থাপনা, বিএনপি নেতা বললেন ‘নিজের জমি’
প্রকাশ: বৃহস্পতিবার, ১২ সেপ্টেম্বর, ২০২৪, ৫:৩৮ পিএম আপডেট: ১৩.০৯.২০২৪ ৮:০৩ পিএম  (ভিজিট : ২৮২)
বরিশালের গৌরনদী উপজেলার টরকীতে সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তরাধীন বরিশাল-ঢাকা মহাসড়কের জমি দখল করে অবৈধ স্থাপনা নির্মাণ করছেন গৌরনদী উপজেলা বিএনপির নেতা আবুল হোসেন মিয়া। ঘটনাটি দেখেও প্রভাবশালী ওই বিএনপি নেতার ভয়ে নির্মাণ কাজে বাঁধা দিচ্ছেনা কেউ।

জানা গেছে, আইয়ুব খানের শাসন আমলে এ মহাসড়কটি নির্মিত হওয়ার পর থেকে বিভিন্ন সময় এ মহাসড়কের কোলঘেঁষে অবৈধ দোকান পাটসহ নানা অবৈধ স্থাপনা নির্মাণ করে ব্যবসা-বাণিজ্যের পাশাপাশি বসবাস করে আসছেন স্থানীয় প্রভাবশালীরা। নানা সময়ে সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তরের উদ্যোগে অবৈধ দখলদারদের উচ্ছেদ অভিযান চালিয়ে ওই অবৈধ স্থাপনাগুলো ভেঙ্গে দেয়া হয়। কিন্তু কিছুদিন যেতে না যেতেই অবৈধ দখলদাররা ভেঙ্গে দেয়া ওই যায়গাগুলোতে পুনরায় অবৈধ স্থাপনা গড়ে তোলে। 

দীর্ঘদিন এভাবে চলে আসলেও গত ২/৩ বছর পূর্বে তৎকালীন সরকার এ মহাসড়কটিকে ফোরলেনে উন্নীত করার ঘোষণা দেয়ার পর মহাসড়কটির দু’পাশের সওজের জমিতে নতুন করে অবৈধ স্থাপনা নির্মাণ ঠেকাতে কঠোর অবস্থান নেয় সড়ক ও জনপথ বিভাগ এবং স্থানীয় প্রশাসন। কিন্তু জনরোষে শেখ হাসিনার সরকারের বিদায়ের পর পরিবর্তিত রাজনৈতিক পরিস্থিতির সুযোগ নিয়ে গত প্রায় একমাস ধরে উপজেলার টরকী বন্দর সংলগ্ন নীলখোলা এলাকায় সওজের অধিগ্রহণকৃত বরিশাল-ঢাকা মহাসড়কের ঢালের জমিতে বালু ফেলে ভরাট করে সেখানে মহাসড়কটির কোল ঘেঁষে একাধিক অবৈধ স্থাপনার নির্মাণ কাজ করাচ্ছেন গৌরনদী উপজেলা বিএনপির সাবেক আহবায়ক আলহাজ্ব আবুল হোসেন মিয়া।

ঘটনাটি দেখেও প্রভাবশালী ওই বিএনপি নেতার ভয়ে তার অবৈধ নির্মাণ কাজ ঠেকাতে নির্মাণ কাজে বাঁধা দিতে যাচ্ছে না সওজের কোন কর্মকর্তা বা স্থানীয় প্রশাসনের কেউ।

নির্মাণ কাজে নিয়োজিত রাজমিস্ত্রি রুহুল আমীন বলেন, বালু ভরাট থেকে শুরু করে আজ পর্যন্ত প্রায় একমাস আমরা এখানে কাজ করছি। এ সময়ে কেউ কাজ ঠেকাতে বা কাজে বাঁধা দিতে আসেনি।

এ ব্যাপারে জানতে চাইলে গৌরনদী উপজেলা নির্বাহী অফিসার আবু আব্দুল্লাহ খান বলেন, জমিটি সড়ক বিভাগের। এটি তদারকি ও রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্বও তাদের। সেখানে অবৈধ স্থাপনা নির্মাণ হচ্ছে বলে তাদের পক্ষ থেকে কেউ এখনো আমাকে অবহিত করেনি। অবৈধ স্থাপনার নির্মাণ ঠেকাতে তারা যদি স্থানীয় প্রশাসনের সহযোগিতা চায় তা হলে অবশ্যই আমরা তাদেরকে সহযোগিতা দেব।

ওই মহাসড়কটির বরিশাল থেকে ভুরঘাটা অংশের তদারকির দায়িত্বে থাকা সওজের উপ-সহকারী প্রকৌশলী অরুন কুমার বলেন, আমাদের কসবা অফিসের দেখাশুনার দায়িত্বে থাকা গ্রীজার (ফেরি বিভাগের ৪র্থ শ্রেণির কর্মচারী) আব্দুস সাত্তার হাওলাদার আজ সকালে আমাকে ঘটনাটি জানিয়েছেন। আমি আগামীকাল (শুক্রবার) সকালে সার্ভেয়ার নিয়ে সেখানে যাবো। আমাদের সীমানা চিহ্নিত করতে। আমাদের সীমানার মধ্যে কেউ কোন অবৈধ স্থাপনা নির্মাণ করলে কাজ বন্ধ করে দেব।

মহাসড়কের জমি দখল করে অবৈধ স্থাপনা নির্মাণের অভিযোগ অস্বীকার করে গৌরনদী উপজেলা বিএনপির সাবেক আহবায়ক আলহাজ্ব আবুল হোসেন মিয়া বলেন, ওটাতো আমার নিজের জমি, আমার কাছে কাগজপত্র আছে। সড়ক ও জনপথ বিভাগ অধিগ্রহণের জন্য আমার জমি রিকুইজিশন দিতে চেয়েছিল আমি রাজি হইনি। ফলে তারা মহাসড়কের পাকা অংশের পশ্চিম পাশ দিয়ে অধিগ্রহণ করেছে। পাকা অংশের পূর্বপাশে তাদের কোন জমি নেই।

অভিযুক্ত বিএনপি নেতা আলহাজ্ব আবুল হোসেন মিয়ার এ বক্তব্যের সাথে দ্বিমত পোষণ করে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক সওজের এক কর্মকর্তা বলেন, ওনি সত্য বলেননি। পাকিস্তানী শাসন আমলে আইয়ুব খানের সরকার ওই এলাকার রাস্তার পাকা অংশের উভয় পাশের জমি অধিগ্রহণ করেছে। যার প্রমাণ সওজের হাতে রয়েছে। কর্মকর্তারা সাহস করে কাগজসহ সেখানে গিয়ে মাপ দিলেই আসল সত্য বেরিয়ে আসবে।

সময়ের আলো/আরআই


আরও সংবাদ   বিষয়:  বরিশাল-ঢাকা মহাসড়ক   অবৈধ স্থাপনা নির্মাণ-সওজ   বরিশাল বিভাগ  




https://www.shomoyeralo.com/ad/1698385080Google-News-Update.jpg

সর্বশেষ সংবাদ

সর্বাধিক পঠিত


ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক: সৈয়দ শাহনেওয়াজ করিম, আমিন মোহাম্মদ মিডিয়া কমিউনিকেশন লিমিটেড এর পক্ষে প্রকাশক গাজী আহমেদ উল্লাহ
নাসির ট্রেড সেন্টার, ৮৯, বীর উত্তম সি আর দত্ত সড়ক (সোনারগাঁও রোড), বাংলামোটর, ঢাকা।

ফোন : +৮৮-০২-৯৬৩২৩৬৮-৭৪, ফ্যাক্স : +৮৮-০২-৯৬৩২৩৭৫ | ই-মেইল : shomoyeralo@gmail.com
close