ই-পেপার সোমবার ৭ অক্টোবর ২০২৪
সোমবার ৭ অক্টোবর ২০২৪

দখল-দূষণে মৃতপ্রায় খাল
 সংস্কারের দাবি প্রভাবশালীদের স্থায়ী দখলে শতবর্ষী সরকারি খাল
প্রকাশ: শুক্রবার, ১৩ সেপ্টেম্বর, ২০২৪, ৫:১৪ এএম  (ভিজিট : ১৫২)
চাঁদপুরের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ উপজেলা শাহরাস্তি। উপজেলার সাহাপুর, ঠাকুর বাজার, কাজির কামতা দিয়ে প্রবাহিত মেহের গোদা খালটি জনগুরুত্বপূর্ণ হলেও কালের বিবর্তনে ইতিমধ্যে অবৈধভাবে খালের বিভিন্ন অংশ ভরাট করে স্থায়ীভাবে দখল করে নিয়েছেন স্থানীয় প্রভাবশালী ব্যক্তিরা। আবার খালের কিছু কিছু অংশে ময়লা-আবর্জনা ফেলে দখলের পাঁয়তারা চলছে বলেও অভিযোগ পাওয়া গেছে। এভাবে দখল-দূষণে সংকুচিত হয়ে এখন মৃতপ্রায় মেহের গোদা খাল। একই সঙ্গে ময়লা-আবর্জনা ফেলায় দূষিত হয়ে পড়ছে খালপাড়ের পরিবেশ। দ্রুততম সময়ের মধ্যে খালটি দখলমুক্ত করে সংস্কারের দাবি তুলেছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। সরকারি সম্পত্তি রক্ষায় শত বছরের পুরোনো খালটি পরিষ্কার, খননসহ সম্পূর্ণ দখলমুক্ত করার জোর দাবি তাদের।

সম্প্রতি মেহের গোদা খাল পরিদর্শন করেছেন শাহরাস্তি পৌর প্রশাসক ও চাঁদপুরের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) মোস্তাফিজুর রহমান। খাল পরিদর্শনের পর তিনি বলেন, বিভিন্ন সময়ে মানুষের অসচেতনতা এবং কারও কারও দখলদারি মনোভাবের কারণে খালের বিভিন্ন পয়েন্টে পানি প্রবাহে বাধার সৃষ্টি হয়েছে। এ কারণে পানি স্বাভাবিকভাবে প্রবাহিত হতে পারছে না। অতীতে যারা খাল দখল করেছে আমরা সেগুলো দখলমুক্ত করব। খালের যেসব অংশ বেশি দখল করা হয়েছে আপাতত সেগুলো আমরা অপসারণ করব। পরবর্তী সময়ে আইনি প্রক্রিয়ায় দখলে নেওয়া খাল পুরোপুরি পুনরুদ্ধার করে অবৈধ ব্যক্তি ও দখলদারদের উচ্ছেদ করা হবে।

এ বিষয়ে জানার জন্য যোগাযোগ করা হলে শাহরাস্তি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. ইয়াসির আরাফাত বলেন, শাহরাস্তি পৌরসভা এলাকার পানি নিষ্কাশনের ক্ষেত্রে মেহের গোদা খালটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ। সাম্প্রতিককালে ও বিভিন্ন সময়ে এই খালের বিভিন্ন অংশ বেদখল হয়ে যায় প্রভাবশালীদের খপ্পড়ে পড়ে। তাই এই বিষয়ে আমরা পদক্ষেপ নিচ্ছি। অবৈধভাবে খাল দখলদারদের নোটিস দিচ্ছি। এরপরও যদি তারা না উঠে যায় তা হলে তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

সরেজমিন স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, শাহরাস্তির পৌরসভার মধ্য দিয়ে প্রবাহিত মেহের গোদা খাল দিয়ে একটা সময়ে নৌকা চলাচল করত। এলাকার পানি নিষ্কাশন হতো এই খাল দিয়েই। খালটি গিয়ে মিশেছে হাজীগঞ্জ-চাঁদপুর ডাকাতিয়া নদীতে। কিন্তু কালের বিবর্তনে খাল ও খালের আশপাশের বহু জায়গা দখল করে নিয়েছেন এলাকার প্রভাবশালী লোকজন। খালের জায়গার ওপর গড়ে উঠেছে হোটেলসহ বিভিন্ন ব্যবসা প্রতিষ্ঠান। শুধু তাই নয়, কিছু প্রভাশালী ব্যক্তি খালের জায়গা দখল করে খালপাড়েই তৈরি করেছেন তাদের দালান কোঠা ও বসতঘর। অথচ অতীতে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন এই খাল দিয়ে চাঁদপুর ও হাজীগঞ্জ থেকে বড় বড় বজরা এবং নৌকায় ব্যবসায়ীদের মালামাল আসত শাহরাস্তিতে। এই খাল দিয়েই ব্যবসায়ীরা নৌকায় মালামাল নিয়ে যেতেন মোকামে। খালের বিভিন্ন স্থানে ছিল কয়েকটি ঘাট যেখানে নৌকাগুলো থামত। খালের পানিতে এলাকার মানুষ গোসলসহ দৈনন্দিন বিভিন্ন কাজ করতেন। কিন্তু অবৈধভাবে ভরাট করায় বর্তমানে সংকুচিত হয়ে গেছে খালটি। 
রীতিমতো ময়লা-আবর্জনার ভাগাড়ে পরিণত হয়েছে। খালের পানি ও আশপাশের পরিবেশ দূষিত হয়ে গেছে। দখল ও ময়লা-আবর্জনার কারণে খালের অনেক স্থান দিয়ে পানি প্রবাহ বন্ধ হয়ে আছে। 

এলাকার কয়েকজন সাধারণ মানুষের সঙ্গে আলাপকালে তারা জানান, মেহের গোদা খালটি একসময় শাহরাস্তিবাসীর জন্য আশীর্বাদ ছিল। এই খাল দিয়ে বৃষ্টি ও বন্যার পানি দ্রুত নিষ্কাশন হতো। চাঁদপুর ও হাজীগঞ্জ থেকে বড় বড় নৌকায় নানা ধরনের পণ্য আসত। খালপাড়ে ছিল না কোনো স্থাপনা। কিন্তু সেই চিত্র আর নেই।

 এখন ময়লা-আবর্জনায় পরিপূর্ণ খালের পানি থেকে ছড়াচ্ছে দুর্গন্ধ ও রোগজীবাণু। অন্যদিকে খাল ভরাট হয়ে যাওয়ার কারণে বৃষ্টির জমে থাকা পানি কিংবা বন্যার পানি নিষ্কাশন হচ্ছে না। এতে করে স্থানীয়দের মারাত্মক দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে।

সময়ের আলো/আরএস/ 




https://www.shomoyeralo.com/ad/1698385080Google-News-Update.jpg

সর্বশেষ সংবাদ

সর্বাধিক পঠিত


ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক: সৈয়দ শাহনেওয়াজ করিম, আমিন মোহাম্মদ মিডিয়া কমিউনিকেশন লিমিটেড এর পক্ষে প্রকাশক গাজী আহমেদ উল্লাহ
নাসির ট্রেড সেন্টার, ৮৯, বীর উত্তম সি আর দত্ত সড়ক (সোনারগাঁও রোড), বাংলামোটর, ঢাকা।

ফোন : +৮৮-০২-৯৬৩২৩৬৮-৭৪, ফ্যাক্স : +৮৮-০২-৯৬৩২৩৭৫ | ই-মেইল : shomoyeralo@gmail.com
close