ই-পেপার রোববার ৬ অক্টোবর ২০২৪
রোববার ৬ অক্টোবর ২০২৪

খেয়ানৌকা ডুবে দুই শিক্ষার্থীর মৃত্যু
সামিয়াদের স্মরণে শোক সাগরে স্কুল, লাইফ জ্যাকেটের ঘোষণা ইউএনওর
প্রকাশ: মঙ্গলবার, ১০ সেপ্টেম্বর, ২০২৪, ৬:৫৮ পিএম  (ভিজিট : ৩৩৪)
কুমিল্লার হোমনায় স্কুল ছুটির পর বাড়ি ফেরার পথে খেয়া পার হতে গিয়ে তিতাস নদীতে খেয়ানৌকা ডুবে মারা যাওয়া সামিয়াদের স্কুলে নেমে এসেছে শোকের ছায়া। কাকতালীয়ভাবে সামিয়া আক্তার নামেরই দুই ছাত্রী সেদিন খেয়া পার হতে গিয়ে পাশ দিয়ে যাওয়া ট্রলারের ঢেউয়ের তোড়ে নৌকাডুবিতে মারা যান। দুজনের বাড়িও একই গ্রামে। 

নিহত দুই শিক্ষার্থী পার্শ্ববর্তী বাঞ্ছারামপুর উপজেলার চরলহনীয়া গ্রামের মো. গোলাম মোস্তফার মেয়ে সামিয়া আক্তার (১২) ও মো. মুসা মিয়ার মেয়ে সামিয়া আক্তার (১৪)। এরা দুজনেই হোমনা উপজেলার রামকৃষ্ণপুর কামাল স্মৃতি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের ষষ্ঠ শ্রেণির ছাত্রী। গতকাল সোমবার বিকেলে উপজেলার কানাই সাহা ঘাট সংলগ্ন তিতাস নদীতে এ দুর্ঘটনা ঘটে। ওই দিন রাত ১০টায় তাদের জানাজা শেষে স্থানীয় কবরস্থানে দাফন করা হয়েছে।

মঙ্গলবার (১০ সেপ্টেম্বর) খেয়ানৌকা ডুবে মারা যাওয়া সামিয়াদের স্কুলে ছিল শোকের সাগরে ভাসা। প্রতিটি শিক্ষার্থীর চোখে ছিল বেদনাশ্রু। এ্যাসেম্বলিতে দাঁড়িয়ে সব শিক্ষার্থীই কেঁদেছেন। নিহত সামিয়াদের স্মরণে নীরবতা পালন, দোয়া-মোনাজাত ও স্মৃতিচারণের মাধ্যমে শোক প্রকাশ করেছেন শিক্ষক-শিক্ষার্থীসহ উপস্থিত সকলেই। এসময় উপস্থিত ছিলেন হোমনা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ক্ষেমালিকা চাকমা, স্থানীয় চান্দেরচর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. মোজাম্মেল হক, বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. আনোয়ার হোসেনসহ শিক্ষক ও স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ। 

বিদ্যালয় এবং দুর্ঘটনাস্থলটি পুনরায় পরিদর্শন করেছেন ইউএনও ক্ষেমালিকা চাকমা। এসময় তিনি বলেন, ‘দুর্ঘটনা কবলিত নৌকাটি তুলনামূলক ছোট ছিল। নদীতে একটু ঢেউ উঠলেই নৌকা হেলে-দুলে যায়। আমি বলেছি, এ স্থানটিতে একটি বড় খেয়ানৌকা দেওয়ার কথা এবং সর্বোচ্চ ১০ জনের বেশি যেন নৌকায় না উঠানো হয়। পাশাপাশি এভাবে যে সকল শিক্ষার্থী যাতায়াত করেন তাদের সবার জন্য লাইফ জ্যাকেট ব্যবস্থা করা হবে। আসা-যাওয়ার সময় যেন সেটি অবশ্য পরেন তা নিশ্চিত করতে হবে।’

স্থানীয়রা জানান, স্বাভাবিক নিয়মে ছাত্রীরা প্রতিদিনই খেয়ানৌকায় নদী পার হয়ে স্কুলে আবার স্কুল ছুটির পর একইভাবে নদী পাড়ি দিয়ে বাড়ি ফেরেন। প্রতিদিনের মতো ওই দিনও ২০-২৫ জন শিক্ষার্থী খেয়ানৌকা যোগে নদী পার হয়ে বাড়ি ফিরছিলেন। 

প্রত্যক্ষদর্শী মো. মনির হোসেন জানান, ২০-২৫ জন ছাত্রী বোঝাই খেয়ানৌকাটি কানাই সাহ ঘাট থেকে ছেড়ে নদীর মাঝামাঝি যেতেই পাশ দিয়ে একটি ইঞ্জিনচালিত ট্রলার দ্রুত গতিতে রামচন্দ্রপুরের উদ্দেশ্যে যাচ্ছিল। ওই ট্রলারে সৃষ্ট প্রকাণ্ড ঢেউয়ে খেয়ানৌকাটি হেলে-দুলে একদিকে কাঁত হয়ে ডুবে যায়। সঙ্গে সঙ্গে নৌকায় থাকা সব ছাত্রী পানিতে পড়ে যায়। এর মধ্যে তিন শিক্ষার্থী পানিতে ডুবে যায়। ঘাটে থাকা স্থানীয় লোকজন ও সাঁতার কাটতে জানা অন্য শিক্ষার্থীরা ডুবে যাওয়া একজনকে মুমূর্ষু অবস্থায় উদ্ধার করতে পারলেও বাকী দুজনকে উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি। স্থানীয় লোকজন নদীতে খোঁজাখুঁজি করে এক ঘণ্টা পর তলিয়ে যাওয়া সামিয়া নামের দুই শিক্ষার্থীকে উদ্ধার করেন। সঙ্গে সঙ্গে তাদের হোমনা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাদের মৃত ঘোষণা করেন। মুমূর্ষু শিক্ষার্থীটি সুস্থ আছেন। 

এ ব্যাপারে বাঞ্ছারামপুর থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. কামাল হোসেন বলেন, খেয়ানৌকায় নদী পার হতে গিয়ে দুই জন শিক্ষার্থী তিতাস নদীতে ডুবে মারা গেছেন। কারও কোনো অভিযোগ না থাকায় আইনি কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি। 

সময়ের আলো/আরআই


আরও সংবাদ   বিষয়:  খেয়ানৌকা ডুবে শিক্ষার্থীর মৃত্যু   হোমনা-কুমিল্লা  




https://www.shomoyeralo.com/ad/1698385080Google-News-Update.jpg

সর্বশেষ সংবাদ

সর্বাধিক পঠিত


ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক: সৈয়দ শাহনেওয়াজ করিম, আমিন মোহাম্মদ মিডিয়া কমিউনিকেশন লিমিটেড এর পক্ষে প্রকাশক গাজী আহমেদ উল্লাহ
নাসির ট্রেড সেন্টার, ৮৯, বীর উত্তম সি আর দত্ত সড়ক (সোনারগাঁও রোড), বাংলামোটর, ঢাকা।

ফোন : +৮৮-০২-৯৬৩২৩৬৮-৭৪, ফ্যাক্স : +৮৮-০২-৯৬৩২৩৭৫ | ই-মেইল : shomoyeralo@gmail.com
close