ই-পেপার সোমবার ৭ অক্টোবর ২০২৪
সোমবার ৭ অক্টোবর ২০২৪

জাতীয় ঐকের মাধ্যমে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে সহযোগীতার আহ্বান খসরুর
প্রকাশ: রবিবার, ৮ সেপ্টেম্বর, ২০২৪, ৬:৫৬ পিএম আপডেট: ০৮.০৯.২০২৪ ৭:১০ পিএম  (ভিজিট : ৩৬৫)
অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে সহযোগিতায় ‘জাতীয় ঐক্যে’র আহ্বান জানিয়েছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী। রোববার (৮ সেপ্টেম্বর) দুপুরে এক অনুষ্ঠানে তিনি এই আহ্বান জানান।

ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি কার্যালয়ের মিলনায়তনে এবি পার্টির উদ্যোগে ‘অন্তর্বতীকালীন সরকারের এক মাস: কেমন গেলো, কেমন যেতে পারতো’ শীর্ষক এই আলোচনা সভা হয়।

তিনি বলেন, আমরা রাজনীতি করি, আমরা অনেক কথা বলি, অনেক বক্তব্য দেই, যার যার প্রেক্ষাপট থেকে আমাদের কথাগুলো বলি এবং বলব। কিন্তু বটম লাইন হচ্ছে, আজকে অন্তর্বতীকালীন সরকারকে ঐক্যবদ্ধভাবে জাতীয় ঐক্যের মাধ্যমে আমাদেরকে সমর্থন করে কাজগুলো(সংস্কার) সম্পন্ন করতে হবে। আমি যত কথাই বলি, জাতীয় ঐক্যের এই মুহুর্তে কোনো বিকল্প নাই। জাতীয় ঐক্যের মাধ্যমে যে শক্তি বাংলাদেশকে ধবংস করে দিয়েছে রাজনৈতিকভাবে, অর্থনৈতিকভাবে, সামাজিকভাবে… সেই শক্তিকে যদি পরাহত করতে হয়… জাতীয় ঐক্যের মাধ্যমে যে ঐক্যমত সৃষ্টি হয়েছে সেটাকে অক্ষুন্ন রাখতে হবে, বর্তমান অন্তর্বতীকালীন সরকারকে সমর্থন করতে হবে। আবার আমাদের কথাগুলো আমরা বলতে থাকবো।

খসরু বলেন, আমরা আশা করি, সবাই মিলে আগামী দিনে যে বাংলাদেশের মানুষকে তার মালিকানা ফিরিয়ে দেয়ার যে ওয়াদা করছিলাম গত ১৫ বছর ধরে বক্তৃতায়, রাস্তায়, মৃত্যুর মধ্যে, গুম-খুনের মধ্যে, জেলের মধ্যে, মিথ্যা মামলার মধ্যে বলেছি,… বাংলাদেশের মালিকানা ফিরিয়ে দিতে হবে। ওই শেখ হাসিনা তার পরিবার যে মালিকানা কেড়ে নিয়েছিলো সেই মালিকানা যদি বাংলাদেশের মানুষকে ফিরিয়ে দিতে হয় সেইদিকে আমাদের কাজ করতে হবে। যারা বাংলাদেশের মালিক তারাই সিদ্ধান্ত নেবে বাংলাদেশ কিভাবে চলবে। আর আমরা যারা রাজনীতি করি আমরা তাদের কাছে গিয়ে বলব আমরা তাদের জন্য কি করতে চাই, আমরা কি পরিবর্তন চাই আমরা তাদের কাছে গিয়ে বলব…. তারাই সিদ্ধান্ত নেবে বাংলাদেশ কোনা পথে চলবে… এর ব্যাতিক্রম হওয়ার কোনো সুযোগ নাই।”

তিনি বলেন, বাংলাদেশের জনসংখ্যার ৬৫ শতাংশের বয়স হচ্ছে ৩৫ বছরের নিচে। এটা ডেমোগ্রাফি। এই ৩৫ বছরের নিচে যে জনসংখ্যা তারা কি ভাবছে? তাদের প্রত্যাশা কি, তাদের আকাংখা কি… এটা আমরা যারা রাজনীতি করি আমাদেরকে বুঝতে হবে। এটা যারা বুঝবে না আমি দুঃখের সাথে বলছি, আগামী দিনের রাজনীতির প্রেক্ষাপটে তাদের জন্য খুব বেশি জায়গা থাকবে বলে আমি মনে করিনা। আজকে যে অন্তর্বতীকালীন সরকার আছে তাদেরকে আমরা সহায়তা করতে চাই।

অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের উদ্দেশ্যে নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, যখন তারা(সরকার) বলছেন, সংস্কার করব আমরা…ততদিন সময় দিন। তখন তো বলতে হবে… কি কি এজেন্ডা সংস্কারে আছে সেটা বলেন এবং তার জন্যে কয়দিন লাগবে সেটা বলেন। এই ব্যাপারে এই এক মাসে আমি কোনো লাইফ দেখতে পারছি না। এখন হয়তবা তাদের কাছে আছে অথবা তারা মনে করছেন এখনই বলা যাবে না। এটা সত্যি যদি জাতীয় ঐক্যমত্যের ভিত্তিতে না যান তাহলে কোনোদিনই সফল হবেন না। আমি এই প্রসঙ্গে মনে করি সরকারকে বিচার করা দরকার।

তিনি বলেন, এক মাস নিশ্চয়ই মূল্যায়নের জন্য যথেষ্ট হয়। বাট স্টিল মোর বি শুড দ্য ডিড। যা দেখছি, তাতে প্রশ্নটা তৈরি হচ্ছে, সেটা বলছি। এটার জবাব যে আমরা পাবো তার তো কোনো সিস্টেম নাই, উনারা যে জবাব দেবেন এরকমও সিস্টেম নাই। অতএব একটা ডিসক্লোজড সিস্টেম চালু করতে পারেন। আপনি যদি ফ্লাগ নিয়ে এনজিও‘র সঙ্গে কথা বলতে পারেন ঘন্টা ধরে, আপনি যদি ব্যবসায়ীদের ডেকে কথা বলতে পারেন যারা বিগত স্বৈরাচারের সাথে আপোষকামিতা করে বলেছেন, যত থাকবেন ততদিন সাথে থাকবো। তাহলে আমাদের সাথে কথা বলতে পারবেন না কেনো?

বাংলাদেশের বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক বলেন, ত্রিশ দিন পার হয়েছে… এখন পর্যন্ত আপনারা কাজের কোনো এজেন্ডা প্রকাশ করেননি…. বাংলাদেশের মানুষ আমরা এখন পর্যন্ত জানতে পারেনি। আপনারা গুরুত্বপূর্ণ স্টেক হোল্ডার সকল রাজনৈতিক দলগুলোর সাথে আলাপ-আলোচনা করে কি কি গুরুত্বপূর্ণ সংস্কার করতে হবে, কোথায় হাত দিতে হবে, কোথায় আমাদের পরিবর্তন করতে হবে একটা বুঝাপরা, একটা সমঝোতা … এটা তৈরি করে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার একটা মডারেটর হিসেবে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারেন। এই কাজটা জরুরিভাবে আপনাদের শুরু করা দরকার। সংবিধানে অনেকগুলো সংশোধনী আনতে হবে, অনেকগুলো গুরুত্বপূর্ণ বুঝাপরা লাগবে, কোন কাজগুলো পরবর্তি নির্বাচিত সরকার জনগনের ম্যান্ডেট দিযে সরকার গঠন করবেন, কোনগুলো তারা বাস্তবায়িত করবে এব্যাপারেও একটা বুঝাপরা থাকা দরকার।”

তিনি বলেন, আমি আশা করব, সরকার সফল হবেন, অন্তর্বতীকালীন সরকার সফল হলে বাংলাদেশে সম্ভব যৌক্তিক সময়ের মধ্যে নির্বাচন হবে এবং এই নির্বাচনের মধ্যে দিয়ে বাংলাদেশ তার প্রয়োজনীয় স্ংস্কার পরিবর্তনের জন্য নতুন বন্দোবস্তের দিকে আমরা হাটতে পারব এবং বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক অভিযাত্রার দিকে যাত্রা শুরু করতে পারবে।”

গণফোরামের সাধারণ সম্পাদক সুব্রত চৌধুরী বলেন, জাতীয় পার্টিকে জামাই আদর দিয়ে সব জায়গায় ডাকা হচ্ছে। এটা মানা যায় না। এই পতিত স্বৈরাচারের সাথে যারা সহযোগী এই জাতীয় পার্টি একই দোষে দুষ্ট। তারা না থাকলে এতো শেখ হাসিনা ক্ষমতায় থাকতে পারতো না।

গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি বলেন, আমরা স্পষ্ট করে বলতে চাই, ছাত্র-জনতার আকাংখা এই রাষ্ট্র হবে গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র… অন্য কেউ অন্য কিছু চিন্তা করেন বাংলাদেশে সেটা বাংলাদেশের মানুষ মেনে নেবে না।

তিনি বলেন, আমরা অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে বলব, অবিলম্বে রাজনৈতিক আলোচনা শুরু করেন, রাজনৈতিক দল, শিক্ষার্থী, ছাত্র সমাজ এবং দেশের সকল শ্রেণী-পেশার সমস্ত অংশীজন স্টেকহোল্ডারদের সাথে নিয়ে আলোচনা প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে জাতীয় ঐক্যমত্য তৈরি করতে হবে কিভাবে আমরা গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র এবং গণতান্ত্রিক সংবিধানে পৌঁছাব। সেই কাজের শুরুটা আমরা দেখতে চাই। আমরা বলছি না, আগামীকালই কাজ হয়ে যাবে। কিন্তু আমরা মনে করি, এটার শুরুটা হওয়া দরকার অতিদ্রুততার সাথে যাতে করে বাংলাদেশের মানুষ তারা মনে করে সফল হবে। অন্তর্বর্তীকালীন সরকার যত দ্রুত রোডম্যাপ দিতে পারবেন ততই তাদের প্রতি মানুষের আস্থা পূর্ণতা পাবে।

এবি পার্টির আহ্বায়ক এএফএম সোলায়মান চৌধুরীর সভাপতিত্বে ও সদস্য সচিব মজিবুর রহমান মঞ্জুর সঞ্চালনায় আলোচনা সভায় জাতীয় পার্টি(কাজী জাফর) মোস্তফা জামাল হায়দার, খেলাফত মজলিশের অধ্যাপক আহমেদ আবদুল কাদের, ইসলামী আন্দোলনের মাওলানা আশরাফ আলী আকন্দ, রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের অ্যাডাভোকেট হাসনাত কাইয়ুম, ন্যাশনাল পিপপলস পার্টির ফরিদুজ্জামান ফরহাদ, গণঅধিকার পরিষদের মিয়া মোহাম্মদ মশিউজ্জামান, এবি পার্টির আব্দুল ওহাব মিনার, বিএম নাজমুল হক, নাসরিন সুলতানা মিলি এবং রাষ্ট্র বিজ্ঞানী অধ্যাপক দিলারা চৌধুরী প্রমূখ বক্তব্য রাখেন।

সময়ের আলো/জিকে




https://www.shomoyeralo.com/ad/1698385080Google-News-Update.jpg

সর্বশেষ সংবাদ

সর্বাধিক পঠিত


ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক: সৈয়দ শাহনেওয়াজ করিম, আমিন মোহাম্মদ মিডিয়া কমিউনিকেশন লিমিটেড এর পক্ষে প্রকাশক গাজী আহমেদ উল্লাহ
নাসির ট্রেড সেন্টার, ৮৯, বীর উত্তম সি আর দত্ত সড়ক (সোনারগাঁও রোড), বাংলামোটর, ঢাকা।

ফোন : +৮৮-০২-৯৬৩২৩৬৮-৭৪, ফ্যাক্স : +৮৮-০২-৯৬৩২৩৭৫ | ই-মেইল : shomoyeralo@gmail.com
close