ই-পেপার সোমবার ৭ অক্টোবর ২০২৪
সোমবার ৭ অক্টোবর ২০২৪

শতকোটি টাকার মালিক বদির ক্যাশিয়ার
প্রকাশ: বুধবার, ৪ সেপ্টেম্বর, ২০২৪, ৫:১৭ এএম  (ভিজিট : ২৫৪)
কক্সবাজারের উখিয়া-টেকনাফের সাবেক সংসদ সদস্য ইয়াবা সম্রাট বদির মাদক ব্যবসার ক্যাশিয়ার ইয়াবা গডফাদার সালাউদ্দিন মেম্বার শতকোটি টাকার মালিক বলে জানা গেছে বিভিন্ন সূত্রে। 

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, সমাজসেবার আড়ালে সালাউদ্দিন মাদক এবং চোরাচালানের মাধ্যমে গড়ে তোলেন বিশাল সাম্রাজ্য। তিনি শেখপাড়ায় ২ কোটি টাকায় জমি কিনে ৩ কোটি টাকা ব্যয় করে নির্মাণ করেছেন বিলাসবহুল ডুপ্লেক্স বাড়ি। কক্সবাজার শহরের বৌদ্ধ মন্দির এলাকায় ফ্ল্যাট কিনেছেন। ঢাকায় ছেলেকে পড়ানোর জন্য মাইলস্টোন কলেজের পাশে ফ্ল্যাট কেনা ছাড়াও উখিয়ায় শ্বশুরবাড়ির জায়গায় তিন তলা বাড়ি নির্মাণ করেছেন। ২ কোটি টাকা দিয়ে জমি কিনে উখিয়া স্টেশনে মার্কেট করেন। এক কোটি টাকায় জাদিমুরা এলাকায় মেইন রোডের পাশে জায়গা কিনেছেন। তার একটি প্রিমিও ২০২২ মডেল গাড়ি, নোহা স্কয়ার ২০২৩ মডেল, ২টি নোহা, ৩টি মোটরসাইকেল, ১টি কাপড়ের দোকান এবং নিজের নামে ও অন্যজনের নামে অসংখ্য জমি রয়েছে।

এ ছাড়া কক্সবাজার শহরসহ জেলার বিভিন্ন স্থানে নামে-বেনামে অঢেল সম্পত্তি আছে বলে জানা গেছে। সেই সঙ্গে নিজের তত্ত্বাবধানে ইয়াবার সিন্ডিকেট গড়ে তোলেন। তিনি রোহিঙ্গা ক্যাম্পে ইয়াবা সরবরাহকারী এবং সিন্ডিকেটের একজন সক্রিয় সদস্য। কথিত রয়েছে, ইয়াবা সম্রাট আবদুর রহমান ওরফে বদির সব অবৈধ উপার্জনের ক্যাশিয়ার হিসেবে কাজ করতেন এই সালাউদ্দিন মেম্বার। 

দেশ থেকে পালানোর সময় সিলেট বিমানবন্দর থেকে গ্রেফতার করে র‌্যাব। সোমবার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে সিলেট ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়। গ্রেফতার এই সালাউদ্দিন (৪০) রাজাপালং ইউনিয়নের ২ নম্বর ওয়ার্ডের জাদিমুড়া এলাকার জাফর আলম ওরফে জাফর ড্রাইভারের ছেলে ও রাজাপালং ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি ও রাজাপালং ইউনিয়ন পরিষদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান।

জানা গেছে, ইহরাম বেঁধে বিমান বাংলাদেশের জেদ্দাগামী একটি ফ্লাইটে চেপে বসেছিলেন সালাউদ্দিন। বিমান আকাশে উড়াল দেওয়ার কিছুক্ষণ আগে গোপন তথ্যের ভিত্তিতে ওই ফ্লাইটে অভিযান চালায় র‌্যাব। তখন ইহরাম বাঁধা অবস্থাতেই তাকে গ্রেফতার করা হয়।

কক্সবাজার র‌্যাব-১৫-এর সিনিয়র সহকারী পরিচালক (ল’ অ্যান্ড মিডিয়া) অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. আবুল কালাম চৌধুরী মঙ্গলবার এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি আরও জানান, ১৮ আগস্ট মো. আবদুল্লাহ বাদী হয়ে আবদুর রহমান বদিকে ১নং আসামি করে ৩০ জন এজাহারনামীয় এবং ৫০-৬০ জন অজ্ঞাতনামা আসামির বিরুদ্ধে কক্সবাজারের টেকনাফ থানায় একটি হত্যা চেষ্টা মামলা করেন। মামলার পর থেকে গা ঢাকা দেন বদিসহ অন্যরা। গত ২০ আগস্ট চট্টগ্রাম জেলার পাঁচলাইশ থানাধীন জিইসি মোড়ের একটি আবাসিক এলাকা থেকে গ্রেফতার হন মামলার প্রধান আসামি আবদুর রহমান বদি। বর্তমানে তিনি কক্সবাজার জেলা কারাগারে আছেন। 

ঘটনার পর থেকে আত্মগোপনে চলে যান বদির ক্যাশিয়ার সালাউদ্দিন মেম্বার। র‌্যাব চলমান গোয়েন্দা তৎপরতার মাধ্যমে জানতে পারে যে, ইয়াবা সম্রাট বদির মাদক ব্যবসার ক্যাশিয়ার ইয়াবা গডফাদার সালাউদ্দিন মেম্বার জেদ্দাগামী একটি ফ্লাইটে ওমরাহ যাত্রীর ছদ্মবেশে দেশ থেকে পলায়নের উদ্দেশ্যে সিলেট বিমানবন্দরে অবস্থান করছে। উক্ত তথ্যের ভিত্তিতে র‌্যাবের একটি চৌকস আভিযানিক দল গত ২ সেপ্টেম্বর সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার সময় অভিযান পরিচালনা করে বিমান রানওয়েতে থাকা অবস্থায় বিমান বাংলাদেশের জেদ্দাগামী একটি ফ্লাইট থেকে ইহরাম পরিহিত অবস্থায় সালাউদ্দিন মেম্বারকে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়।

মো. আবুল কালাম চৌধুরী আরও জানান, গ্রেফতার সালাউদ্দিন উখিয়া থানাধীন রাজাপালং ইউনিয়নের ২নং ওয়ার্ডের সাবেক মেম্বার। পূর্বে তার ছোট একটি কাপড়ের দোকান ছিল। ছোট্ট একটি কাপড়ের দোকান থাকলেও তার আয়ের মূল উৎস ছিল ইয়াবা। মাদক সম্রাট হিসেবে খ্যাত এই সালাউদ্দিনের বাবা পেশায় একজন সাধারণ ড্রাইভার। এলাকায় জাফর ড্রাইভার নামে পরিচিত। কিন্তু কয়েক বছরের ব্যবধানে সালাউদ্দিন রীতিমতো বিপুল অর্থ-সম্পত্তির মালিক বনে যান। 

বিভিন্ন সূত্রে জানা যায়, বাংলাদেশে রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশের পর রোহিঙ্গাদের ব্যবহারের মাধ্যমে বিভিন্ন ব্যক্তির সখ্যতায় তিনি মাদক ব্যবসায়ের সঙ্গে জড়িত হয়ে পড়েন। এর আর তাকে আর পেছনে ফিরে তাকাতে হয়নি। শত কোটি টাকার মালিক হওয়া ছাড়াও গড়ে তোলেন বিপুল সম্পত্তি।


সময়ের আলো/আরএস/ 





https://www.shomoyeralo.com/ad/1698385080Google-News-Update.jpg

সর্বশেষ সংবাদ

সর্বাধিক পঠিত


ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক: সৈয়দ শাহনেওয়াজ করিম, আমিন মোহাম্মদ মিডিয়া কমিউনিকেশন লিমিটেড এর পক্ষে প্রকাশক গাজী আহমেদ উল্লাহ
নাসির ট্রেড সেন্টার, ৮৯, বীর উত্তম সি আর দত্ত সড়ক (সোনারগাঁও রোড), বাংলামোটর, ঢাকা।

ফোন : +৮৮-০২-৯৬৩২৩৬৮-৭৪, ফ্যাক্স : +৮৮-০২-৯৬৩২৩৭৫ | ই-মেইল : shomoyeralo@gmail.com
close