ই-পেপার সোমবার ৭ অক্টোবর ২০২৪
সোমবার ৭ অক্টোবর ২০২৪

ফেনীর কৃষি খাতে সর্বোচ্চ ক্ষতি
প্রকাশ: বুধবার, ৪ সেপ্টেম্বর, ২০২৪, ৪:৩২ এএম  (ভিজিট : ২৩৮)
ফসলি জমি, ফিশারিজ, খামারসহ নানা ক্ষেত্রে ক্ষতিগ্রস্ত বন্যাদুর্গতদের সামনে এখন ঘুরে দাঁড়ানোর কঠিন চ্যালেঞ্জ। ফেনীতে শুধু কৃষি খাতেই ক্ষতির পরিমাণ ৪৫১ কোটি টাকার বেশি। ক্ষতিগ্রস্তদের ঘুরে দাঁড়ানোর ক্ষেত্রে সর্বাত্মক সহযোগিতার আশ্বাস দিয়েছে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ। ফেনীর বিভিন্ন জায়গায় বন্যাদুর্গতদের ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টা লক্ষ করা গেছে।

দেখা গেছে, বন্যার পানি নেমে যাওয়ায় ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টা করছেন ক্ষতিগ্রস্তরা। সবচেয়ে বেশি ক্ষতি হয়েছে কৃষিতে। এ ক্ষতি পুষিয়ে নিতে কৃষকদের সহযোগিতা করছে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর। এ ছাড়া ভাঙা বাড়ি সংস্কার, খামার, ফিশারিজ মালিকরাও ক্ষয়ক্ষতি কাটিয়ে ওঠার চেষ্টা করছেন। 

মঙ্গলবার সরেজমিন দেখা গেছে, বন্যায় ক্ষতি হওয়া আমন ধানের ক্ষেতে পুনরায় বীজ রোপণ করছেন কৃষকরা। অন্যদিকে ক্ষতিগ্রস্ত সড়ক ইতিমধ্যে সংস্কার শুরু করেছে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ। এ ছাড়া  ক্ষতিগ্রস্ত খামারিরা নতুন করে খামারের সংস্কার কাজ শুরু করেছেন।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, বন্যায় মৎস্য খাতে জেলায় ১ লাখ ৮ হাজার ৭৬০টি পুকুর, দিঘী ও খামারের ক্ষতি হয়েছে। যার আনুমানিক পরিমাণ ১৮ কোটি ৯ লাখ টাকা। এলজিইডির আওতাধীন জেলাজুড়ে ২ হাজার ৫৮৯টি সড়কের মধ্যে ২ হাজার ৪৮টি সড়কের প্রায় ৩ হাজার ৩০৫ কিলোমিটার ক্ষতি হয়েছে। এখানে ক্ষতির পরিমাণ ৯৯ কোটি ৫০ লাখ টাকা। সওজের তথ্য মতে, ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ ৪০ কোটি ৯৮ লাখ টাকা। প্রাণিসম্পদ বিভাগের তথ্য মতে, বন্যায় ৬৪ হাজার ১৬১টি গবাদিপশু ও ২৩ লাখ ৪ হাজার ৪১০টি হাঁস-মুরগি তলিয়ে গেছে। এতে  প্রায় ৩৯১ কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে। এ ছাড়া অবকাঠামোগত ক্ষতি হয়েছে প্রায় ৫ কোটি ২০ লাখ টাকা।

ফুলগাজী উপজেলার দক্ষিণ বরইয়া গ্রামের কৃষক মোখলেসুর রহমান সময়ের আলোকে বলেন, আমার আমন ধানের সব জমি নষ্ট হয়ে গেছে। নতুন করে রোপণ করার মতো চারা নেই। যেসব জমিতে চারা একটু ভালো আছে, বন্যার পর সেখান থেকে অর্ধেক করে চারা উঠিয়ে নিয়ে এসে নষ্ট হওয়া জমিতে রোপণ করছি।

ফেনী সদর উপজেলার লেমুয়া ইউনিয়নের মৎস্য খামারি আবদুর রহিম বলেন, বন্যার পানিতে আমার সব মাছ ভেসে গেছে। এখন তো কিছু করার নেই। পানি যেহেতু কমেছে তাই নতুন করে রেণু ছাড়ার জন্য পুকুরের সংস্কার কাজ শুরু করেছি।

জেলার কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপ পরিচালক মো. একরাম উদ্দিন সময়ের আলোকে জানান, কৃষি খাতে ঘুরে দাঁড়ানোর জন্য আমরা সব ধরনের উদ্যোগ গ্রহণ করেছি। আমাদের টিম মাঠ পর্যায়ে কাজ করছে। যেসব আমন ধানের জমির চারা নষ্ট হয়ে গেছে, সেগুলোয় কীভাবে চারা রোপণ করা যায় সে সম্পর্কে আমরা পরামর্শ দিচ্ছি। চারা সংকট ও যেখানে ধান রোপণের অবস্থা নেই, সেখানে আগাম শীতকালীন সবজি, সরিষা চাষের জন্য কৃষকদের উৎসাহ প্রদান করছি। 

বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার পর জেলায় খাদ্য সংকট হবে কি না-এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, বন্যায় ক্ষতি হয়েছে এটা মানতে হবে। তবে বন্যা-পরবর্তী সময়ে কোনো আবাদি জমি যাতে পড়ে না থাকে আমরা সে ব্যাপারে নজর রাখছি। কৃষকদের সব ধরনের সহযোগিতা করা হচ্ছে। আশা করি, এমন কোনো পরিস্থিতি হবে না।

ফেনীর জেলা প্রশাসক মুছাম্মৎ শাহীনা আক্তার জানান, ক্ষতিগ্রস্ত বসতবাড়ি পুনর্নির্মাণের জন্য সংশ্লিষ্ট প্রতিনিধিরা ইতিমধ্যে কাজ শুরু করেছেন। জেলার প্রত্যন্ত অঞ্চলের ক্ষতিগ্রস্তদের তালিকাও সংগ্রহ করা হচ্ছে। এ ছাড়া অন্যান্য দফতরের কর্মকর্তারও তাদের আওতাধীন ক্ষতিগ্রস্তদের সহযোগিতার কাজে নিয়োজিত রয়েছেন।


সময়ের আলো/আরএস/ 




https://www.shomoyeralo.com/ad/1698385080Google-News-Update.jpg

সর্বশেষ সংবাদ

সর্বাধিক পঠিত


ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক: সৈয়দ শাহনেওয়াজ করিম, আমিন মোহাম্মদ মিডিয়া কমিউনিকেশন লিমিটেড এর পক্ষে প্রকাশক গাজী আহমেদ উল্লাহ
নাসির ট্রেড সেন্টার, ৮৯, বীর উত্তম সি আর দত্ত সড়ক (সোনারগাঁও রোড), বাংলামোটর, ঢাকা।

ফোন : +৮৮-০২-৯৬৩২৩৬৮-৭৪, ফ্যাক্স : +৮৮-০২-৯৬৩২৩৭৫ | ই-মেইল : shomoyeralo@gmail.com
close