ই-পেপার সোমবার ৭ অক্টোবর ২০২৪
সোমবার ৭ অক্টোবর ২০২৪

মুত্তাকি ব্যক্তির মর্যাদা
প্রকাশ: সোমবার, ২ সেপ্টেম্বর, ২০২৪, ১:৪৪ এএম  (ভিজিট : ২২০)
অন্তরে আল্লাহর ভয় জাগ্রত রেখে জীবনযাপনকে বলা হয় ‘তাকওয়া’। আর যিনি এমন একটি জীবন গঠন করেন তাকে বলা হয় ‘মুত্তাকি’। তাকওয়া ছাড়া কোনো মুমিন জান্নাতের আশা করতে পারে না। তাকওয়া অর্জন সহজ কাজ নয়। পার্থিব জীবনের হিংসা, লোভ, দুনিয়া বিমুখতাসহ অসংখ্য প্রবৃত্তির খাহেশকে পাড়ি দিয়ে সামনে অগ্রসর হতে হবে। নিজের দেহ ও আত্মাকে পরিশুদ্ধ ও পাপমুক্ত রাখতে হবে। যেখানে আত্মশুদ্ধির দাবি সেখানে পাপের অবস্থান থাকতে পারবে না। আমল ও ইখলাস দুটিই একসঙ্গে থাকতে হবে। যার মধ্যে আমল ও ইখলাসের সমাবেশ ঘটবে সেই হবে ‘মুত্তাকি’ তথা তাকওয়ার অধিকারী। ইখলাস-একনিষ্ঠতা ছাড়া শুধু আমল দিয়ে কেউ মুত্তাকি হতে পারে না। কেবল দাড়ি-টুপি ও নামাজি হয়ে মুত্তাকি হওয়া যায় না। তাই এসব আমলের পাশাপাশি ব্যক্তিকে অবশ্যই ইখলাসের অধিকারী হতে হবে। আর তখনই এ তাকওয়া মুমিনের জন্য জান্নাতের গন্তব্য লাভের মাধ্যম হিসেবে বিবেচিত হবে। 

সাধারণত তাকওয়াবান ব্যক্তিই আল্লাহর বেশি প্রিয় বান্দা হন। কারণ তারা প্রকাশ্য-অপ্রকাশ্য উভয়ভাবে আল্লাহকে ভয় করে চলেন। জীবনের কোনো অংশে তারা সামান্যতম অপরাধ করতে সাহস করেন না। এটাই হলো তাকওয়ার বাস্তবতা। এ প্রসঙ্গে আল্লাহ তায়ালা বলেন, ‘নিশ্চয় আল্লাহর কাছে তোমাদের মধ্য হতে সবচেয়ে মর্যাদাবান ব্যক্তি সে, যে তোমাদের মধ্যে সর্বাধিক তাকওয়াবান’ (সুরা হুজরাত : ১৩)। 
কোনো মুমিন নিজেকে শুধু ঈমানদার দাবি করা বা সুন্নিয়তের ধারক-বাহক দাবি করাই মুত্তাকির বৈশিষ্ট্য নয়, বরং তার অন্তরে আল্লাহভীতি কতটুকু আছে তা দেখার বিষয়। যদি তার অন্তর ইখলাসে পূর্ণ হয় তখন সে আল্লাহর কাছে মুত্তাকি হিসেবে বিবেচিত হবে, অন্যথায় সে হবে তাকওয়াহীন বান্দা। তাই ইখলাসবিহীন আমল আল্লাহর কাছে মূল্যহীন। সুতরাং আমল কবুল হওয়ার পূর্বশর্ত হলো ইখলাস। এ প্রসঙ্গে রাসুল (সা.) বলেন, ‘নিশ্চয়ই আল্লাহ তোমাদের আকৃতি ও সম্পদের দিকে লক্ষ করেন না, কিন্তু তিনি লক্ষ করেন তোমাদের অন্তর ও আমলের দিকে।’ (মুসলিম : ৬৭০৮)

আর তাকওয়া বিনষ্ট হওয়ার অন্যতম কারণ হলো হারাম বা সন্দেহযুক্ত বস্তু ব্যবহার। তবে হারাম খাদ্যই তাকওয়ার পথে বড় বাধা। যে মুমিন খাবার গ্রহণে হারাম-হালাল পার্থক্য করে চলবে না, সে কখনো কামিল মুমিন হতে পারবে না। এমনকি তার পক্ষে তাকওয়া অর্জন সম্ভব হবে না। কেননা, তাকওয়া আর হারাম একই দেহের একই অন্তরে অবস্থান করা অসম্ভব। যার দেহ হারাম খাদ্যে দূষিত সে দেহের পক্ষে আত্মার শুভ্রতা অর্জন করা কস্মিনকালেও সম্ভব নয়। তাই তাকওয়া অর্জনে হারাম বা সন্দেহযুক্ত যেকোনো খাবার ও বস্তুকে পরিহার করে চলতে হবে। এ প্রসঙ্গে আল্লাহ তায়ালা বলেন, ‘তোমরা হালাল পবিত্র বস্তু আহার করো এবং আল্লাহকে ভয় করো, যার প্রতি তোমরা বিশ্বাসী।’ (সুরা মায়েদা : ৮৮)। 

রাসুল (সা.) বলেন, ‘নিশ্চয় হালাল সুস্পষ্ট এবং হারামও সুস্পষ্ট। আর উভয়ের মধ্যখানে কিছু সন্দেহপূর্ণ বস্তু রয়েছে, যার বিধান সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষ জানে না। অতএব, যে ব্যক্তি সন্দেহযুক্ত বস্তু থেকে নিজেকে বাঁচিয়ে রাখল, সে যেন নিজের দ্বীন ও সম্মানকে রক্ষা করল। আর যে ব্যক্তি সন্দেহযুক্ত বস্তুর বেড়াজালে আবদ্ধ হলো সে যেন হারামে পতিত হলো’ (তিরমিজি : ১২৪৬)। অতএব, যাপিত জীবনে যাবতীয় হারাম, সন্দেহজনক বিষয় এড়িয়ে চলতে হবে এবং তাকওয়া ও ইসলাস সঙ্গে নিয়ে আমল করতে হবে। তা হলেই পরকালে মিলবে জাহান্নাম থেকে মুক্তি ও এবং অনন্ত সুখের জগৎ জান্নাতে প্রবেশের নিশ্চয়তা।



সময়ের আলো/আরএস/ 





https://www.shomoyeralo.com/ad/1698385080Google-News-Update.jpg

সর্বশেষ সংবাদ

সর্বাধিক পঠিত


ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক: সৈয়দ শাহনেওয়াজ করিম, আমিন মোহাম্মদ মিডিয়া কমিউনিকেশন লিমিটেড এর পক্ষে প্রকাশক গাজী আহমেদ উল্লাহ
নাসির ট্রেড সেন্টার, ৮৯, বীর উত্তম সি আর দত্ত সড়ক (সোনারগাঁও রোড), বাংলামোটর, ঢাকা।

ফোন : +৮৮-০২-৯৬৩২৩৬৮-৭৪, ফ্যাক্স : +৮৮-০২-৯৬৩২৩৭৫ | ই-মেইল : shomoyeralo@gmail.com
close