ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে গুলি ছোড়ে পুলিশ। তছনছ হয়ে যায় সবকিছু। সেই ক্ষোভে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কর্মসূচিতে যোগ দিয়ে পুলিশের গুলিতে বাম পায়ে গুলিবিদ্ধ হন জরিফুল ইসলাম। পাশে থাকা ছাত্ররা তার পা থেকে গুলি বের করার সময় একই পায়ে ফের গুলি লাগে তার। এসময় যন্ত্রণা সহ্য করতে না পেয়ে মাটিতে লুটিয়ে পড়েন তিনি।
এমনি ঘটনার শিকার হয়েছে লালমনিরহাটের হাতীবান্ধা উপজেলার বড়খাতা ইউনিয়নের পূর্ব সারডুবি গ্রামে বাসিন্দা জরিফুল ইসলাম। তিনি ঢাকার সাভারে ভাড়ায় একটি দোকানে মুরগির মাংস বিক্রি করতেন। আন্দোলনে লাগা সেই গুলি বের করা হলেও হাড় ভেঙে যাওয়ায় হাঁটতে পারছেন না তিনি। তাই তার ঠাঁই হয়েছে বাড়ির বিছানায়। অন্যদিকে অভাবের সংসার হওয়ায় ইচ্ছে থাকা সত্ত্বেও উন্নত চিকিৎসা করাতে না পেয়ে বাড়িতে বিছানায় শুয়ে ব্যথায় কাতরাচ্ছেন তিনি।
জরিফুল ইসলাম পরিবারে একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তি। গুলিবিদ্ধ হওয়ার পর আয়-রোজগার না থাকায় স্ত্রী ও দুই সন্তান নিয়ে মানববেতর জীবনযাপন করছেন তিনি। এখন ওষুধ কিনতেই হিমশিম খাচ্ছে তার পরিবার।
জরিফুল ইসলাম জানান, গুলিবিদ্ধ হওয়ার পর বিকেল থেকে রাত পর্যন্ত তাকে বিভিন্ন মেডিকেলে নিয়ে গেলেও ছাত্রলীগ ও পুলিশের বাধায় চিকিৎসা হয়নি তার। পরে দূরের একটি হাসপাতালে অপারেশন করে পা থেকে তার গুলি বের করা হয়। পরে জানতে পারেন তার পায়ের দুটি হাড় ভেঙে গেছে। এরপর গ্রামের বাড়িতে ফিরে এসে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ১০ দিন চিকিৎসা নেন।
তিনি বলেন, প্রতিদিন গড়ে ৮০০/৯০০ টাকার ওষুধ লাগে। এত টাকা আমি কই পাই? আমার চিকিৎসা, সংসারইবা চলবে কি করে? সমাজের বিত্তবানদের কাছে সাহায্য চাই। যারা আমাকে গুলি করেছে তাদেরও বিচার চাই।
জরিফুল ইসলামের স্ত্রী রেজিনা বেগম বলেন, স্বামীর রোজগারের টাকায় কোনোরকমে সংসার চলতো। এখন সে পঙ্গুত্ববরণ করে বাড়িতেই পড়ে আছে। এখন ধারদেনা করে সংসার চলছে, স্বামীর চিকিৎসা করাবো কি করে? কেউ কি নেই আমাদের পাশে দাঁড়াবেন। সন্তান দুটিকে মানুষ করবো কীভাবে?
সময়ের আলো/এএ/