ই-পেপার সোমবার ৭ অক্টোবর ২০২৪
সোমবার ৭ অক্টোবর ২০২৪

ফটিকছড়িতে বনের জমিতে বসতি নির্মাণের হিড়িক
প্রকাশ: শুক্রবার, ৩০ আগস্ট, ২০২৪, ২:২০ এএম আপডেট: ৩০.০৮.২০২৪ ৮:০৯ এএম  (ভিজিট : ৭৮৭)
চট্টগ্রামের ফটিকছড়ি উপজেলার নারায়ণহাট রেঞ্জের বালুখালী বিটের সংরক্ষিত বনের জায়গা বেদখল করে দেদার তোলা হচ্ছে ঘরবাড়ি ও দোকানপাট। 

বনের ভেতরের গাছ কেটে সেখানে অবাধে গড়ে তোলা হচ্ছে এসব। এতে করে সংকুচিত হচ্ছে বনভূমি। অসাধু কর্মকর্তাদের যোগসাজশে টাকার বিনিময়ে এসব করা হচ্ছে বলে অভিযোগ স্থানীয়দের। তারা বলছেন, বনভূমি তদারকিতে বন বিভাগের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের দেখা যায় না। স্থানীয় বন বিভাগের ভূমিকাও প্রশ্নবিদ্ধ।

এ বিষয়ে বালুখালী বিট কর্মকর্তা মো. আলাল উদ্দিন বলেন, আমরা নিয়মিত তাদের বাধা দিই। কিন্তু তারা মানে না। বনে বসতবাড়িসহ কোনো ধরনের স্থাপনা নির্মাণের নিয়ম নেই। কোথাও এই নিয়মের ব্যত্যয় ঘটলে উচ্ছেদসহ দখলকারীদের বিরুদ্ধে দ্রুত আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

নারায়ণহাট রেঞ্জের রেঞ্জ কর্মকর্তা মো. আনিছুর রহমান বলেন, আমি কয়েকটি অভিযোগ পেয়েছি। সাম্প্রতিক বন্যার কারণে একটু সমস্যায় আছি। ঊর্ধ্বতনদের বিষয়টি জানিয়েছি। শিগগির দখলদারদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। 

স্থানীয়দের সঙ্গে আলাপকালে তারা অভিযোগ করেন, বনে অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ হচ্ছে না। দখলের পেছনে রয়েছেন স্থানীয় প্রভাবশালী লোকেরা। নারায়ণহাট রেঞ্জের আওতাধীন বালুখালী বনবিট কর্মকর্তা মো. আলাল উদ্দিন যোগদানের পর থেকে রেকর্ডসংখ্যক বনভূমি বেদখল হয়েছে। তবে তার সঠিক কোনো হিসাব বন বিভাগ জানাতে পারেনি। ওই বিটের আওতাধীন ১২ হাজার ৫০০ একর বনভূমি রয়েছে।

সরেজমিন খোঁজ নিয়ে জানা যায়, বালুখালী বিটের নতুনপাড়া এলাকায় ৫৫টি পিলার দিয়ে আলম সওদাগর নামের এক ব্যক্তি গড়ে তুলছেন বসতবাড়ি। ধইল্যারখীল এলাকায় ১৫ হাজার টাকায় চলছে দোকান নির্মাণের কাজ। শে^তছড়া বাজারের পাশে ১০ হাজার টাকায় গড়ে উঠছে আরেকটি বসতঘর। তা ছাড়া শে^তছড়া বাজার এলাকায় আবদুল মালেক নামের এক ব্যক্তি ৫টি দালান করছেন। 

তিনি এসব নির্মাণ করতে গিয়ে শতবর্ষী বটবৃক্ষ পর্যন্ত কেটে ফেলেছেন। অথচ তার বিরুদ্ধে বনবিভাগ কোনো ব্যবস্থা নেয়নি। স্থানীয়রা বলছেন, বন কর্মচারীদের সহায়তায় এসব বসতবাড়ি নির্মাণ করছেন আবদুল মালেক। বালুখালী বিট কর্মকর্তা মো. আলাল উদ্দিন ও বনপ্রহরী (গার্ড) আবদুল্লাহ আল বাকী স্থানীয়দের কাছ থেকে মোটা অঙ্কের টাকার বিনিময়ে বসতবাড়ি ও দোকান নির্মাণে মৌখিক অনুমতি দিচ্ছেন। এসব অনিয়মের বিষয়ে এলাকাবাসী ঊর্ধ্বতনদের কাছে অভিযোগও দিয়েছেন। অভিযুক্ত আলম সওদাগর ঘর নির্মাণের বিষয়ে বলেন, স্থানীয়রা আগে ঘর তুলেছেন। তাই আমিও তুলছি। 

বনপ্রহরী আবদুল্লাহ আল বাকী আমাকে মৌখিক অনুমতি দিয়েছেন। তাই নির্মাণকাজ চলছে। তবে টাকা নিয়ে ঘর নির্মাণের অনুমতি দেওয়ার কথা অস্বীকার করেছেন বনপ্রহরী (এফজি) আবদুল্লাহ আল বাকী। তার দাবি, কেউ হয়তো ব্যক্তিস্বার্থ হাসিল করতে না পেরে এমন অভিযোগ তুলেছেন। বনের জমিতে অসহায় মানুষ ঘরবাড়ি নির্মাণ করেন। এসব উচ্ছেদও করা হয়।

স্থানীয় শিক্ষক মো. সেলিম উদ্দিন বলেন, দীর্ঘদিন যাবৎ বনের জমিতে বসতি নির্মাণের হিড়িক পড়েছে। কেউ ঘর তোলার সুযোগ পেলে তাকে দেখে অনেকেই আগ্রহী হচ্ছেন। এমন হলে সব বনই ধ্বংস হয়ে যাবে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয় কয়েকজন বাসিন্দা বলেন, প্রতিনিয়ত বনে নতুন নতুন বসতি হচ্ছে। দোকানপাট নির্মাণ হচ্ছে। এসব নির্মাণ কাজের সঙ্গে বন কর্মকর্তাদের যোগসাজশ রয়েছে। এ বিষয়ে অভিযোগ দিয়েও কোনো সুরাহা হয়নি।


সময়ের আলো/আরএস/




https://www.shomoyeralo.com/ad/1698385080Google-News-Update.jpg

সর্বশেষ সংবাদ

সর্বাধিক পঠিত


ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক: সৈয়দ শাহনেওয়াজ করিম, আমিন মোহাম্মদ মিডিয়া কমিউনিকেশন লিমিটেড এর পক্ষে প্রকাশক গাজী আহমেদ উল্লাহ
নাসির ট্রেড সেন্টার, ৮৯, বীর উত্তম সি আর দত্ত সড়ক (সোনারগাঁও রোড), বাংলামোটর, ঢাকা।

ফোন : +৮৮-০২-৯৬৩২৩৬৮-৭৪, ফ্যাক্স : +৮৮-০২-৯৬৩২৩৭৫ | ই-মেইল : shomoyeralo@gmail.com
close