ই-পেপার সোমবার ৭ অক্টোবর ২০২৪
সোমবার ৭ অক্টোবর ২০২৪

নিলামে সাবেক এমপিদের বিলাসবহুল গাড়ি
প্রকাশ: শুক্রবার, ৩০ আগস্ট, ২০২৪, ১২:৪৬ এএম  (ভিজিট : ৪৭৩)
আশির দশক থেকে জাতীয় সংসদের এমপিরা শুল্কমুক্ত সুবিধায় গাড়ি আমদানি করে আসছেন। আর আমদানির পর কোনো ধরনের জটিলতা ছাড়াই সেসব গাড়ি তারা ছাড় করিয়ে নিয়েছেন চট্টগ্রাম বন্দর থেকে। কিন্তু গেল ৫ আগস্ট রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর জাতীয় সংসদ বিলুপ্ত করা হয়। এরপর এখন বর্তমান সংসদের কেউ আর বর্তমান এমপি নন। কিন্তু শুল্কমুক্ত সুবিধায় আনা গাড়িগুলো রয়ে গেছে চট্টগ্রাম বন্দর ও মোংলা বন্দরে। কিন্তু অন্তর্বর্তীকালীন সরকার সাবেক এমপিদের গাড়ির শুল্কমুক্ত সুবিধা বাতিল করেছেন।

এতে চট্টগ্রাম বন্দরে আটকা পড়েছে সাবেক এমপিদের ৫০টি বিলাসবহুল গাড়ি। এসব গাড়ি ছাড় করাতে হলে প্রচলিত নিয়ম অনুযায়ী সিসিভেদে ৮১০ থেকে ৮২৬ শতাংশ হারে শুল্ক প্রদান করতে হবে। শুল্কমুক্ত সুবিধায় এক কোটি টাকায় আমদানি করা গাড়ির শুল্কসহ বর্তমান মূল্য দাঁড়িয়েছে ৭/৮ কোটি টাকা। অর্থাৎ যেসব গাড়ি শুল্কমুক্ত সুবিধায় আমদানি করা হয়েছে সে সব গাড়ি ছাড় করাতে ৭/৮ গুণ শুল্ক প্রদান করতে হবে। এতে গাড়ি ছাড় কোন প্রক্রিয়ায় হবে তা নিয়ে বেকায়দায় পড়েছে চট্টগ্রাম কাস্টমস। শুল্কমুক্ত সুবিধায় সাবেক এমপিদের আমদানি করা গাড়ি কোন প্রক্রিয়ায় ছাড় হবে তা জানাতে ইতিমধ্যে চিঠি দেওয়া হয়েছে চট্টগ্রাম কাস্টম হাউস থেকে। চলতি সপ্তাহে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের চেয়ারম্যানের কাছে এ বিষয়ে চিঠি পাঠানো হয়। চিঠিতে শুল্কমুক্ত সুবিধায় আমদানি করা গাড়িগুলোতে কোন প্রক্রিয়ায় শুল্ক আরোপ করা হবে তা জানতে চাওয়া হয়েছে। 

কাস্টমস কর্মকর্তারা বলছেন, শুল্কমুক্ত সুবিধায় এমপিদের গাড়ি আমদানির পর শুল্কমুক্ত সুবিধা বাতিলের ঘটনা নতুন। তাই বিষয়টি নিয়ে তারা কোনো সিদ্ধান্ত নিতে পারছেন না। গাড়ি ছাড় করার কাজে সিঅ্যান্ডএফ এজেন্টদের আশঙ্কা শুল্কযুক্ত করা গাড়ি শেষ পর্যন্ত খালাস নাও করতে পারেন সাবেক এমপিরা। সে ক্ষেত্রে আমদানি করা গাড়িগুলো নিলামে বিক্রি করা ছাড়া বিকল্প কোনো পথ নেই।

শুল্কমুক্ত সুবিধায় আমদানি করা মন্ত্রী-এমপিদের তালিকা বেশ বড়। তাদের মধ্যে আছেন সাবেক ডেপুটি স্পিকার শামসুল হক টুকু, সাবেক মন্ত্রী ড. আবদুর রাজ্জাক, মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া, সাবেক তথ্য প্রতিমন্ত্রী মোহাম্মদ আলী আরাফাত, সাবেক সংসদ সদস্য ক্রিকেটার সাকিব আল হাসান, চিত্রনায়ক ফেরদৌস আহমেদ, নেত্রকোনার সাবেক সংসদ সদস্য সাজ্জাদুল হাসান, ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সাবেক সংসদ সদস্য এসএকে একরামুজ্জামান, ফয়জুর রহমান, সিরাজগঞ্জের চয়ন ইসলাম, জান্নাত আরা হেনরি, নাটোরের আবুল কালাম, সিদ্দিকুর রহমান পাটোয়ারী, বগুড়ার মজিবুর রহমান মঞ্জু, রেজাউল করিম তানসেন, টাঙ্গাইলের অনুপম শাহজাহান জয়, হবিগঞ্জের ব্যারিস্টার সৈয়দ সায়েদুল হক সুমন, সুনামগঞ্জের রণজিৎ সরকার, ড. সাদিক, গাইবান্ধার আবুল কালাম আজাদ, ব্যারিস্টার শাহজাহান ওমর, যশোরের নওয়াব আলী জোয়ার্দার, ঝিনাইদহের নাসের শাহরিয়ার জাহিদি, লক্ষ্মীপুরের মাসুদ উদ্দিন চৌধুরী ও দিনাজপুরের মুহাম্মদ জাকারিয়া। গত ৫ আগস্ট পট পরিবর্তনের আগ মুহূর্তে সাবেক সংসদ সদস্য সাকিব আল হাসান, চিত্রনায়ক ফেরদৌস আহমেদসহ কয়েকজন গাড়ি খালাস করে ফেলেছেন। তবে এসব গাড়ির রেজিস্ট্রেশন এখনও সম্পন্ন হয়নি। সে ক্ষেত্রে তাদের ছাড় করা গাড়ি ভবিষ্যতে কাস্টমসে তলব করা হতে পারে। সিঙ্গাপুর ও জাপান থেকে আমদানি করা এসব গাড়ির মধ্যে আছে বিলাসবহুল টয়োটা ল্যান্ড ক্রুজার, টয়োটা জিপ, টয়োটা এলসি স্টেশন ওয়াগট মডেলের। এসব গাড়ির অনেকগুলোর ইঞ্জিন ক্যাপাসিটি ৪ হাজার সিসির। 

এ বিষয়ে চট্টগ্রাম কাস্টম হাউসের কমিশনার মুশফিকুর রহমান বৃহস্পতিবার সময়ের আলোকে বলেন, শুল্কমুক্ত সুবিধায় আমদানি করা গাড়ির শুল্কমুক্ত সুবিধা প্রথমবারের মতো বাতিল করা হয়েছে। বিষয়টি কাস্টমসের জন্য নতুন। তাই এসব গাড়ি কোন প্রক্রিয়ায় ছাড় করা হবে, কত শুল্কহার আরোপ হবে সেই বিষয়টি কাস্টমসের কাছে নতুন। তাই শুল্ক আরোপসহ কোন প্রক্রিয়ায় গাড়িগুলো ছাড় করা হবে তা জানতে চলতি সপ্তাহে একটি চিঠি চট্টগ্রাম কাস্টম হাউস থেকে জাতীয় রাজস্ব রোর্ডে (এনবিআর) পাঠানো হয়েছে। চিঠির উত্তর পাওয়ার পর এবং এ-সংক্রান্ত নির্দেশনা পেলে পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হবে।

শুল্কমুক্ত সুবিধায় আমদানি করা গাড়িগুলোর ‘বিল অব এন্ট্রি’ দাখিল হয়েছে কিনা-এ প্রশ্নে তিনি বলেন, কিছু গাড়ির ‘বিল অব এন্ট্রি’ দাখিল করার পর বন্দর থেকে ছাড় করে নেওয়া হয়েছে। কিন্তু বেশিরভাগ গাড়ির ‘বিল অব এন্ট্রি’ দাখিল করা হয়নি। তাই এনবিআর থেকে নির্দেশনা আসার পর আটকা গাড়িগুলো কীভাবে কোনো প্রক্রিয়ায় ছাড় করা যায় তা নিয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। 

সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক কাজী মাহমুদ ইমাম বিলু সময়ের আলোকে বলেন, শুল্কমুক্ত সুবিধায় আমদানি করা সাবেক এমপিদের কোনো গাড়ির ‘বিল অব এন্ট্রি’ দাখিল করা হয়নি। কিছুসংখ্যক গাড়ি ছাড় করিয়ে নিয়ে গেলেও বেশিরভাগ গাড়িই বন্দরের শেডে আটকা আছে। এখন শুল্ক যোগ হলে এসব গাড়ির প্রতিটির মূল্য অনেক বেশি পড়বে। তা ছাড়া পট পরিবর্তনের পর আমদানিকারক সাবেক এমপিদের অনেকেই ছাড় করার বিষয়ে কাস্টমস কিংবা সিঅ্যান্ডএফ এজেন্টদের সঙ্গে যোগাযোগ করছেন না। তাই দীর্ঘদিন খালাস না করলে শুল্কমুক্ত সুবিধার গাড়িগুলো নিয়ম অনুযায়ী অকশান ইয়ার্ডে নিয়ে যাওয়া হবে। এরপর শুরু হবে নিলাম প্রক্রিয়া। অর্থাৎ শেষ পর্যন্ত গাড়িগুলো নিলামেই বিক্রি করা হতে পারে।

চট্টগ্রাম বন্দর থেকে গাড়ি খালাসে যুক্ত কয়েকটি প্রতিষ্ঠানের অন্যতম নগরীর বারিক বিল্ডিং এলাকার সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট হাবিবা এন্টারপ্রাইজ। 

প্রতিষ্ঠানের মালিক মোহাম্মদ ইউসুফ বলেন, কয়েকটি ছাড়া বেশিরভাগ গাড়িই ছাড় করাতে কাস্টমসে ‘বিল অব এন্ট্রি’ দাখিল করা হয়নি। আমদানিকারক সাবেক এমপিদের অনেকে আত্মগোপনে থাকায় গাড়ি ছাড় করার বিষয়ে যোগাযোগও করছেন না। তাই আমদানি করা শুল্কমুক্ত সুবিধার গাড়িগুলো শেষ পর্যন্ত নিলামেই উঠতে পারে। 

প্রতিটি গাড়ির বাজারদর কত, সাবেক এমপিরা কত সুবিধা পেয়েছেন-এ প্রশ্নে তিনি বলেন, শুল্কমুক্ত সুবিধায় অনেক দামি বিলাসবহুল গাড়ি আমদানি করা হয়েছে। কোনো গাড়ি আমদানিকারক এসব গাড়ি সাধারণত দেশে আমদানি করেন না। কারণ এত দামি গাড়ির ক্রেতা তেমন নেই। সাবেক এমপিদের গাড়ি নিয়ম অনুযায়ী শুল্ক পরিশোধ করে বন্দর থেকে ছাড় করানো হলে প্রতিটির দাম ২ থেকে ১০ কোটি টাকা পড়বে। শুল্কসহ গাড়িগুলোর দাম এত বেশি যে, কোনো এমপি তো নয়ই, সাধারণ ব্যবসায়ীরাও এসব গাড়ি আমদানি করেন না। 

প্রতিবেশী দেশের কোথাও শুল্কমুক্ত সুবিধা নেই : বাংলাদেশ ছাড়া আশপাশের ভারত, শ্রীলঙ্কা, নেপাল ও মিয়ানমারসহ আরও কয়েকটি দেশে এমপিদের শুল্কমুক্ত সুবিধায় গাড়ি আমদানির সুযোগ নেই। বাংলাদেশে একবার নির্বাচিত এমপি জাতীয় সংসদের স্পিকারের ছাড়পত্র নিয়ে একবার শুল্কমুক্ত সুবিধায় গাড়ি আমদানি করতে পারেন। তিনি পাঁচ বছর সংসদ সদস্য থাকা অবস্থায় আর কোনো শুল্কমুক্ত সুবিধায় গাড়ি আমদানি করতে পারেন না। তিনি যদি চারবার এমপি নির্বাচিত হন চারবার চারটি গাড়ি শুল্কমুক্ত সুবিধায় আমদানি করতে পারেন। বর্তমান সংসদের পাশাপাশি আগের সংসদের এমন অনেক এমপি আছেন যারা চারবার নির্বাচিত হয়ে চারটি শুল্কমুক্ত সুবিধার গাড়ি আমদানি করেছেন। একটি গাড়িতে গড় হিসাবে যদি পাঁচ কোটি টাকার শুল্কমুক্ত সুবিধা পান তবে চারবারে একজন এমপি ২০ কোটি টাকা শুধু গাড়ি আমদানিতে ছাড় পান। এটা দেশের ব্যবসা-বাণিজ্যের জন্য নেতিবাচক কর্মকাণ্ড বলে অভিহিত করেছেন গাড়ি আমদানিকারকদের সংগঠন বারভিডা।

সংগঠনের সভাপতি হাবিবুল্লাহ ডন সময়ের আলোকে বলেন, আমাদের সংগঠনের পক্ষ থেকে শুল্কমুক্ত সুবিধায় গাড়ি আমদানি বন্ধ করতে একাধিকবার এনবিআরকে জানানো হয়েছে। আমাদের পাশের দেশ ভারতেও এমপিরা শুল্কমুক্ত সুবিধায় গাড়ি আমদানি করতে পারেন না। অথচ আমাদের দেশে চারবার এমপি হয়ে চারবার শুল্কমুক্ত সুবিধায় গাড়ি আমদানি করেছেন এমন নজির আছে।

চট্টগ্রাম বন্দরে সদ্য সাবেক এমপিদের আমদানি করা শুল্কমুক্ত গাড়ির বিক্রি কীভাবে হবে এ প্রশ্নে তিনি বলেন, এমপিদের যারা ইতিমধ্যে শুল্কমুক্তভাবে গাড়ি ছাড় করেছেন তাদের শুল্ক পরিশোধ করতে হবে না। তাদের যদি শুল্ক পরিশোধ করতে তলব করা হয় তবে এরশাদের আমল থেকে এই সুবিধায় কেনা সব গাড়ির মালিকদের তলব করতে হবে।

কীভাবে এমপিরা গাড়িগুলো ছাড় করাতে পারেন-এ প্রশ্নে তিনি বলেন, কাস্টমস আইন অনুযায়ী সাবেক এমপিরা চাইলে সেই গাড়িগুলো রি-এক্সপোর্ট করতে পারেন। সে ক্ষেত্রে তাদের বাড়তি শুল্ক পরিশোধ করে গাড়ি ছাড় করতে হবে না। তবে বর্তমানে এমপিরা যেভাবে নিষ্ক্রিয়-তাতে মনে হয় না তারা রি-এক্সপোর্ট কিংবা শুল্ক পরিশোধ করে বন্দর থেকে গাড়ি ছাড় করবেন। সে ক্ষেত্রে আমদানি করা গাড়িগুলো নিলাম ইয়ার্ডে নিয়ে নিলামেই তোলা হতে পারে। কারণ বন্দরে আমদানির পর ৪৫ দিন পার হলে গাড়িসহ সব ধরনের পণ্য নিলামে তোলা হয়। এসব পণ্য পাঠানো হয় অকশান শেডে। ইতিমধ্যে আমদানির পর ৩০ দিন পার হতে চলেছে। কয়েক দিন পর ছাড় না করলে নিলামে তোলা সংক্রান্ত নোটিস যাবে সাবেক এমপিদের কাছে।

গাড়ি ছাড় না করতে এনবিআরের নির্দেশ : কাস্টমস কর্মকর্তারা জানান, বন্দরে আটকে পড়া সাবেক এমপিদের আমদানি করা শুল্কমুক্ত গাড়ি ফেরত না পাঠিয়ে বাজারমূল্যে বিক্রির নির্দেশ দিয়েছেন অর্থ ও বাণিজ্য উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ। ২৮ আগস্ট বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে ব্যবসায়ীদের নিয়ে এক বৈঠকে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডকে (এনবিআর) এমন নির্দেশ দেন তিনি। বৈঠকে অর্থ উপদেষ্টা বলেন, আমদানি করা গাড়িগুলো ফেরত পাঠালে দেশ রাজস্ব হারাবে। সহজ শর্তে এসব গাড়ি বিক্রির ব্যবস্থা করতে হবে।

কাস্টমস কর্মকর্তারা বলেন, এনবিআর শুল্কমুক্ত সুবিধায় আমদানি করা সাবেক এমপিদের গাড়ি বিক্রি করে রাজস্ব আহরণ বাড়াতে চায়। তাই এসব আমদানি করা গাড়ি বাজারমূল্যে বিক্রির সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। তবে শুল্কমুক্ত সুবিধায় আমদানি করা গাড়ি শুল্কসহ বিক্রি করা কিংবা আমদানিকারকদের আগ্রহে ফেরত পাঠানোর বিষয়টি একেবারেই নতুন। কাস্টমস কর্তৃপক্ষ কখনো এ ধরনের পরিস্থিতির মুখোমুখি হয়নি। তাই চট্টগ্রাম কাস্টমস থেকে এনবিআরের কাছে পাঠানো চিঠির উত্তর আসা পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে। এর আগ পর্যন্ত জানা যাবে না কীভাবে কী করা যাবে শুল্কমুক্ত গাড়ি বিক্রিতে।

এমপিদের শুল্কমুক্ত সুবিধা একটা প্রতারণা : সচেতন নাগরিক কমিটির (সনাক) চট্টগ্রাম মহানগর কমিটির সভাপতি অ্যাডভোকেট আক্তার কবির চৌধুরী সময়ের আলোকে বলেন, শুল্কমুক্ত সুবিধায় গাড়ি আমদানি করা একটা প্রতারণা। এমপিরা জনসেবার প্রতিশ্রুতি নিয়ে নির্বাচন করেন এবং সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। তারা সবাই পয়সাওয়ালা, অনেক টাকার মালিক। তারা কেন শুল্কমুক্ত সুবিধায় বিলাসবহুল গাড়ি আমদানি করবেন। তাদের বরং শুল্ক বেশি দিয়ে গাড়ি আমদানি করা দরকার। এসব এমপি শুল্কমুক্ত সুবিধা পেলেও সাধারণ ক্রেতারা কিন্তু সেই সুবিধা পান না। একটা গাড়ি আমদানি করে একজন এমপি যদি ৮ থেকে ১০ কোটি টাকার শুল্ক সুবিধা পান তবে তাদের নমিনেশন বাগাতে প্রদান করা অর্থ গাড়ি থেকেই উঠে আসবে। চারবার এমপি নির্বাচিত হয়ে একজন এমপি যদি ৪০ কোটি টাকা সুবিধা গাড়িতেই পান তবে তাদের আর কিছু লাগে না। বিলাসবহুল একটা গাড়ি একবার কিনে বহুদিন ব্যবহার করা যায়। চারবার নির্বাচিত হয়ে শুল্কমুক্ত সুবিধার চারটি গাড়ির তিনটিই বিক্রি করে দেন এমপিরা। তাতে ব্যবসাও জমে উঠে এমপিদের। এরশাদ সরকার স্বৈরাচার ছিল বলে এই সুবিধা প্রণয়ন করেছে। এরপর থেকে গণতান্ত্রিক স্বৈরাচারী সরকারগুলোও এই সুবিধা বহাল রেখেছে।

প্রসঙ্গত সংসদ সদস্যদের খুশি করতে ১৯৮৭ সালে তৎকালীন রাষ্ট্রপতি এইচ এম এরশাদের আমলে শুল্কমুক্ত সুবিধায় গাড়ি আমদানি চালু হয়। ১৯৮৮ সালের ২৪ মে এ-সংক্রান্ত একটি প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়। এরপর থেকে তিন দশকেরও বেশি সময় ধরে সরকার পরিবর্তন হলেও গাড়ি আমদানিতে এমপিদের শুল্কমুক্ত সুবিধা বহাল আছে।


সময়ের আলো/আরএস/




https://www.shomoyeralo.com/ad/1698385080Google-News-Update.jpg

সর্বশেষ সংবাদ

সর্বাধিক পঠিত


ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক: সৈয়দ শাহনেওয়াজ করিম, আমিন মোহাম্মদ মিডিয়া কমিউনিকেশন লিমিটেড এর পক্ষে প্রকাশক গাজী আহমেদ উল্লাহ
নাসির ট্রেড সেন্টার, ৮৯, বীর উত্তম সি আর দত্ত সড়ক (সোনারগাঁও রোড), বাংলামোটর, ঢাকা।

ফোন : +৮৮-০২-৯৬৩২৩৬৮-৭৪, ফ্যাক্স : +৮৮-০২-৯৬৩২৩৭৫ | ই-মেইল : shomoyeralo@gmail.com
close