ই-পেপার সোমবার ৭ অক্টোবর ২০২৪
সোমবার ৭ অক্টোবর ২০২৪

ফারাক্কার গেট খুলে দেওয়ায় বন্যা আতঙ্কে দৌলতপুরের চরবাসী
প্রকাশ: বুধবার, ২৮ আগস্ট, ২০২৪, ৮:৪২ এএম  (ভিজিট : ২১৬)
ভারতে ফারাক্কার বাঁধের সবকটি গেট খুলে দেওয়ায় কুষ্টিয়ার দৌলতপুরে পদ্মা নদী ঘেরা চরবাসীর মাঝে নতুন করে আতঙ্ক ছড়িয়েছে। বাঁধের ১০৯টি গেটে একসাথে খুলে দেওয়া ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বন্যা আতঙ্কের খবর ফলাও করে প্রচার করার ফলে চরবাসীর মাঝে উদ্বেগ উৎকণ্ঠার সৃষ্টি হয়েছে।

তবে স্বস্তির খবর ভারতে ফারাক্কার বাঁধের সবকটি গেট খুলে দেওয়ার ২৪ ঘণ্টা পার হলেও মঙ্গলবার (২৭ আগস্ট) সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত দৌলতপুরে পদ্মা নদীতে বন্যার পানি বৃদ্ধি না পাওয়ায় তা স্থিতাবস্থায় রয়েছে। এ নিয়ে আতঙ্কিত না হওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন সংশ্লিষ্ট দপ্তরের কর্মকর্তাগণ।

চরবাসীরা জানিয়েছেন, প্রতি বছরই আগস্ট-সেপ্টেম্বর মাসে বন্যার দেখা মিলে। এসময় দৌলতপুর উপজেলার চিলমারী, রামকৃষ্ণপুর, ফিলিপনগর ও মরিচা ইউনিয়নের অধিকাংশ মানুষ বন্যায় আক্রান্ত হয়ে থাকে। বিশেষ করে চিলমারী ও রামকৃষ্ণপুর ইউনিয়নবাসী বন্যায় পানিবন্দি হয়ে পড়ে।

ফলে এই দুই ইউনিয়নের অর্ধলক্ষ মানুষ বন্যা মৌসুমে পানিবন্দি অবস্থায় মানবেতর জীবন যাপন করে।তবে এখনও পর্যন্ত তারা বন্যাক্রান্ত না হলেও ভারী বর্ষণ ও ভারতের উজান থেকে নেমে আসা পানিতে গত জুলাই মাসে কয়েক দফা পদ্মা নদীতে পানি বৃদ্ধি পায়। আগস্টের মাঝামাঝিতে পানি কিছুটা কমতে শুরু করে।

তবে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে বন্যা ও পুনরায় পদ্মা নদীতে পানি বৃদ্ধি পাওয়ার পাশাপাশি ফারাক্কার বিরূপ প্রভাবে বন্যার আশঙ্কা করছেন নদী ঘেঁষা উপজেলার চার ইউনিয়নের পদ্মাপারের মানুষ। ইতোমধ্যে চরের বেশ কিছু আবাদি জমি পানিতে তলিয়ে গেছে। দুর্যোগ মোকাবিলায় আগাম প্রস্তুতিও নিচ্ছে সংশ্লিষ্ট দপ্তর।

উপজেলার রামকৃষ্ণপুর ইউনিয়নের চল্লিশপাড়া গ্রামের বাসিন্দা সোহেল আহমেদ জানান, ফারাক্কার গেট খুলে দেওয়ায় পদ্মা নদীর পানি বৃদ্ধি পাবে। ফলে নদী তীরবর্তী মানুষ এবারও বন্যার আশঙ্কা করছেন। বন্যা কবলিত হলে উপজেলার চিলমারী, রামকৃষ্ণপুর, মরিচা ও ফিলিপনগর ইউনিয়নের পদ্মা পাড়ের মানুষ বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হবে।

ভারী বর্ষণ ও উজান থেকে নেমে আসা পানিতে ইতিমধ্যে তলিয়ে গেছে চরের বেশকিছু আবাদি ও ফসলের মাঠ।দৌলতপুর উপজেলার চিলমারীর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান প্রকৌশলী আব্দুল মান্নান বলেন, নদীর পানি বৃদ্ধি পায়নি। এখনও আগের অবস্থায় রয়েছে, তবে তা এখনো লোকালয়ে প্রবেশ করেনি। কিছু নিম্নাঞ্চলে পানি ঢুকে চরের আবাদি ফসল ডুবেছে।

রামকৃষ্ণপুর ইউপি চেয়ারম্যান সিরাজ মণ্ডল জানান, নতুন করে পদ্মা নদীর পানি বাড়েনি। নদীর পানি আগের অবস্থায় রয়েছে। এতে এখনও কোন ক্ষয় ক্ষতি হয়নি।পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) তথ্য মতে, পদ্মা নদীতে পানি বৃদ্ধি পায়নি।

পদ্মা নদীর দৌলতপুরের ভাগজোত পয়েন্টে মঙ্গলবার সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত পানির উচ্চতা ছিল ১৩ দশমিক ৬২ সেন্টিমিটার যা বিপদসীমার ২ দশমিক ৮ সেন্টিমিটার নিচে। তবে মঙ্গলবার সকালের দিকে হার্ডিঞ্জ ব্রিজ পয়েন্টে ১ সেন্টিমিটার পানি বৃদ্ধি পেয়ে ১১ দশমিক ৯৯ সেন্টিমিটারে প্রবাহিত হচ্ছিল যা বিপদ সীমার ১ দশমিক ৮১ সেন্টিমিটার নিচে।

পাবনা ওয়াটার হাইড্রোলজি বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী রেজাউল করিম গণমাধ্যমকে জানিয়েছেন, ফারাক্কার গেট খুলে দেওয়ার খবরে নদী তীরবর্তী পদ্মাপারের মানুষকে আতঙ্কিত না হয়ে সাবধানতা অবলম্বন করতে হবে।বন্যার বিষয়ে দৌলতপুর উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা আব্দুল হান্নান জানান, বন্যার জন্য আমাদের আগাম প্রস্তুতি নেওয়া আছে।

বিভিন্ন বিদ্যালয়ের উঁচু ভবনগুলো আশ্রয়কেন্দ্র করা হবে। তবে নদীর পানির উচ্চতা স্বাভাবিক রয়েছে। ভারতের ফারাক্কা বাঁধ খুলে দেওয়ায় বন্যার আশঙ্কা করা হচ্ছে।


সময়ের আলো/এএ/




https://www.shomoyeralo.com/ad/1698385080Google-News-Update.jpg

সর্বশেষ সংবাদ

সর্বাধিক পঠিত


ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক: সৈয়দ শাহনেওয়াজ করিম, আমিন মোহাম্মদ মিডিয়া কমিউনিকেশন লিমিটেড এর পক্ষে প্রকাশক গাজী আহমেদ উল্লাহ
নাসির ট্রেড সেন্টার, ৮৯, বীর উত্তম সি আর দত্ত সড়ক (সোনারগাঁও রোড), বাংলামোটর, ঢাকা।

ফোন : +৮৮-০২-৯৬৩২৩৬৮-৭৪, ফ্যাক্স : +৮৮-০২-৯৬৩২৩৭৫ | ই-মেইল : shomoyeralo@gmail.com
close