ই-পেপার সোমবার ৭ অক্টোবর ২০২৪
সোমবার ৭ অক্টোবর ২০২৪

নেভেনি আগুন, নিখোঁজদের সন্ধানে ভিড়
প্রকাশ: বুধবার, ২৮ আগস্ট, ২০২৪, ২:২৭ এএম  (ভিজিট : ১৭৮)
নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে অবস্থিত গাজী টায়ার কারখানায় আগুন নিয়ন্ত্রণে এলেও পুরো নেভেনি। এর ফলে ৪৮ ঘণ্টা পরও নিখোঁজদের উদ্ধার কার্যক্রম অভিযান চালাতে পারেনি ফায়ার সার্ভিস কর্মীরা। 

মঙ্গলবার রাত ১০টায় এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্তও কারখানার ভেতরে থেমে থেমে আগুন জ¦লছিল। দীর্ঘ সময় আগুন থাকায় ভবনটি ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে। খসে খসে পড়ছে আস্তর ও ইটের গাঁথুনি। ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা ঘটনার শুরুতে ১৪ জনকে উদ্ধার করলেও এখনও কারখানার ভবনটিতে আটকা পড়ে ১৭৬ জন ব্যক্তি নিখোঁজ বলে দাবি করেছেন নিখোঁজদের স্বজনরা। নিখোঁজদের সন্ধানে স্বজনরা কারখানার সামনে অবস্থান নিয়ে ভিড় করছেন। 

এদিকে, গাজী টায়ারে আগুনের ঘটনায় অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট হামিদুর রহমানের নেতৃত্বে ৮ সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। মঙ্গলবার দুপুর দেড়টার দিকে গাজী টায়ার কারখানায় নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রশাসক মাহমুদুল হক সাংবাদিকদের এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। আর এই তদন্ত কমিটিতে বিদ্যুৎ কল কারখানা ফায়ার সার্ভিসসহ সব বিভাগের লোকজনই রয়েছে। এ সময় জেলা প্রশাসক ক্ষতিগ্রস্ত গাজী টায়ার কারখানা  পরিদর্শন করেন।

কারখানা পরিদর্শন শেষে নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রশাসক মাহমুদুল হক বলেন, ৮ সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। আমি উপজেলা নির্বাহী অফিসার আহসান মাহমুদ রাসেলকে নির্দেশ দিয়েছি ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের একটি তালিকা তৈরি করতে। ঘটনা তদন্ত করে জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। গাজী টায়ারের কারখানা যে ভবনটিতে সে ভবনের ভেতরে সালফারসহ কেমিক্যাল থাকার কারণে আগুন নিয়ন্ত্রণে এলেও তাপ ও ধোঁয়া রয়ে গেছে। এ কারণে উদ্ধারকাজ চালানো যাচ্ছে না। খুব দ্রুত উদ্ধারকাজ শুরু করা হবে। নিখোঁজদের একটি তালিকা তৈরি করা হবে প্রশাসনের পক্ষ থেকে। মঙ্গলবার সকালে পুলিশের ক্রাইম সিন ইউনিটের পুলিশ পরিদর্শক জাহিদুল ইসলামের নেতৃত্বে ৩ সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল কারখানা পরিদর্শন করেন।

অপরদিকে, গাজী টায়ারের ছয় তলা ভবনের আগুন নিয়ন্ত্রণের ৩২ ঘণ্টা পেরিয়ে গেলেও উদ্ধারকাজ শুরু করতে পারেনি ফায়ার সার্ভিস। মঙ্গলবার সকাল ১০টা পর্যন্ত গাজী টায়ারে উদ্ধারকাজ শুরু করতে পারেনি ফায়ার সার্ভিস। এর আগে, গত সোমবার সন্ধ্যা ৭টা ৫ মিনিটে আগুন নিয়ন্ত্রণে এসেছে বলে সংবাদ সম্মেলনে জানিয়েছিলেন ফায়ার সার্ভিসের পরিচালক লে. কর্নেল রেজাউল করিম।

এদিকে, মঙ্গলবার সকাল থেকেই নিখোঁজদের স্বজনরা কারখানার ভেতরে ও বাইরে এসে ভিড় জমাতে থাকে। উদ্ধার কাজ শুরু না হওয়ায়  তারা ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। এ পর্যন্ত ১৭৬ জন নিখোঁজের দাবি জানিয়েছেন স্বজনরা। তবে শেষ মুহূর্তে ফায়ার সার্ভিসের পক্ষ থেকে নিখোঁজ বা উদ্ধারের বিষয়ে কোনো সুস্পষ্ট বক্তব্য পাওয়া যায়নি।

নাম না প্রকাশ শর্তে ফায়ার সার্ভিসের কয়েকজন কর্মীর সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ভবনটিতে দীর্ঘসময় ধরে আগুন জ্বলার কারণে ভবনটি ধসের সম্ভাবনা রয়েছে। এ ছাড়া ভবনের আগুন নিভে গেলেও ভেতরে ধোঁয়া ও তাপের কারণে ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা ভবনে প্রবেশ করতে পারছে না। তবে তারা পানি নিয়ে তাপ ও ধোঁয়া কমিয়ে আনার চেষ্টা চলছে। তাপ ও ধোঁয়া কমে গেলে হয়তো উদ্ধার অভিযান শুরু হবে।

সাবেক পাট ও বস্ত্রমন্ত্রী এবং স্থানীয় সংসদ সদস্য গোলাম দস্তগীর গাজীর মালিকানাধীন গাজী টায়ার ফ্যাক্টরিতে দ্বিতীয়বারের মতো আগুন দেওয়ার ঘটনা ঘটে। গত রোববার রাত সাড়ে ১০টার দিকে ফ্যাক্টরির ভেতরে থাকা ৬ তলা বিশিষ্ট একটি ভবনে আগুন লাগার পর সোমবার সন্ধ্যায় ফায়ার সার্ভিস কর্মীরা আগুন নিয়ন্ত্রণে আনেন। আগুন নেভানোর জন্য ফায়ার সার্ভিসের ১২টি ইউনিট টানা কাজ চালিয়েছেন। কারখানার ভবনটিতে আটকা পড়ে ১৭৬ জন ব্যক্তি নিখোঁজ বলে দাবি করেছেন নিখোঁজদের স্বজনরা। ফায়ার সার্ভিসের কাছে স্বজনরা নিখোঁজদের নাম-ঠিকানা লেখালেও পরে আবার ফায়ার সার্ভিসের পক্ষ থেকে তা অস্বীকার করা হয়। পরে উপজেলা প্রশাসনের উদ্যোগে এবং থানা পুলিশের উপস্থিতিতে স্থানীয় শিক্ষার্থীরা আবারও স্বজনদের কাছ থেকে নিখোঁজদের নাম-পরিচয় লেখিয়ে একটি তালিকা তৈরি করেন।


সময়ের আলো/আরএস/ 




https://www.shomoyeralo.com/ad/1698385080Google-News-Update.jpg

সর্বশেষ সংবাদ

সর্বাধিক পঠিত


ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক: সৈয়দ শাহনেওয়াজ করিম, আমিন মোহাম্মদ মিডিয়া কমিউনিকেশন লিমিটেড এর পক্ষে প্রকাশক গাজী আহমেদ উল্লাহ
নাসির ট্রেড সেন্টার, ৮৯, বীর উত্তম সি আর দত্ত সড়ক (সোনারগাঁও রোড), বাংলামোটর, ঢাকা।

ফোন : +৮৮-০২-৯৬৩২৩৬৮-৭৪, ফ্যাক্স : +৮৮-০২-৯৬৩২৩৭৫ | ই-মেইল : shomoyeralo@gmail.com
close