শনিবার সারাদিন বৃষ্টি না হওয়ায় একটু কমেছিলো পানি। কিন্তু মধ্যরাত থেকে আবার অঝোরে বৃষ্টি হওয়ায় নোয়াখালীতে বেড়ে গেছে পানির পরিমাণ।
রোববার (২৫ আগস্ট) নতুন করে আবার পানিবন্দী হয়ে পড়েছে জেলাবাসী। চরম দুর্ভোগে রয়েছে তারা।
সূত্রে জানা যায়, জেলার নয়টি উপজেলার মধ্যে আটটি উপজেলা বেশী আক্রান্ত হয়েছে বন্যায়। এর মধ্যে চারটি উপজেলায় নতুন করে আবার পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় চরম ভোগান্তিতে রয়েছে এসব উপজেলার বাসিন্দারা। পানি একটু কমে যাওয়ার পর বাসিন্দারা যখন আশ্রয়কেন্দ্র থেকে বাড়ি ফেরার প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন তখন আবার বৃষ্টির কারণে পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় তারা আবার উদ্বেগের মধ্যে পড়েছেন। অতিরিক্ত পানি থাকায় ত্রাণ বা খাদ্যবাহী গাড়ি যেতে পারছেনা গ্রামের আশ্রয়কেন্দ্রগুলোতে। ফলে এক প্রকার মানবেতর জীবন পার করছে প্রত্যন্ত অঞ্চলে বিভিন্ন আশ্রয়কেন্দ্রে উঠা মানুষরা।
নোয়াখালী সরকারী মহিলা কলেজে আশ্রয় নেয়া গৃহিণী আমেনা বেগম বলেন, শনিবার রোদ উঠায় পানি একটু কমেছিলো। কিন্তু রাতে আবার বৃষ্টি হওয়ায় পানি বেড়ে গেছে। এতে করে আমাদের বাড়ির কি অবস্থা তা জানতে পারছিনা। পানি বেড়ে যাওয়ায় এখান থেকে বের হতেও পারছিনা।
আরেকটি আশ্রয় কেন্দ্রে আশ্রয় নেয়া ইয়াসিন জানান, পরিবার নিয়ে নোয়াখালী সরকারী কলেজ কেন্দ্রে আশ্রয় নিয়েছি। বিভিন্ন সংগঠন খাবার দিচ্ছে। সমস্যাও হচ্ছে না। তবে এভাবে কতদিন চলবে তা নিয়ে দু:শ্চিন্তায় আছি।
নাম প্রকাশে মধ্যবিত্ত শ্রেণীর একজন জানান, বন্যায় মধ্যবিত্তরা আছে বেশী বিপাকে। আমরা না পারছি কাউকে বলতে, না পারছি আবার হাত পাততে? আবার অফিস থেকে বারবার ফোন আসছে। কাজেও যেতে পারছিনা।একটা অনিশ্চিওতার ভিতরে আছি।
আনিসুর রহমান নামে একজন চাকুরীজীবী বলেন, ঘরে ভিতরে পানি উঠায় পরিবার নিয়ে এক আত্মীয়ের বাসায় উঠেছি। সেখানে কতদিন থাকতে হবে জানিনা। রাতে বৃষ্টি হওয়ায় আবার নতুন করে পানি বেড়ে গেছে। ব্যাংকে চাকরী করি। বাধ্য হয়ে পানির সাথে যুদ্ধ করে অফিসে যাচ্ছি।
মোজাম্মেল হোসেন নামে আরেকজন বলেন, শহরে যে পরিমাণ পানি বেড়েছে তাতে গ্রামের কি অবস্থা? আমরা শহরে ভীষণ দুর্বিসহ জীবন পার করছি। বাজার নেই ঘরে। যোগাযোগ ব্যবস্থাও ভেঙ্গে পড়েছে। যানবাহন খুবই কম। ফলে পানি মাড়িয়ে কোথাও যাওয়া যাচ্ছে না। যা চলছে তারাও পানির ভিতরে আসছেনা।
জেলা প্রশাসক দেওয়ান মাহবুবুর রহমান বলেন, রাতে বৃষ্টি হওয়ায় পানি বাড়ায় আবার নতুন করে সংকটে পড়েছে জেলাবাসী। এতে করে বন্যায় আক্রান্তদের সমস্যাও বেড়ে যাবে। এ পর্যন্ত ৮২৬ টি আশ্রয়কেন্দ্রে দেড় লাখেরও বেশী মানুষ আশ্রয় নিয়েছে। মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে যা পাওয়া যাচ্ছে তা বানভাসীদের দেয়া হচ্ছে। এপর্যন্ত ১৮০০ মেট্রিকটন চাল, নগদ ৪৫ লাখ টাকা দেয়া হয়েছে। কাজ করছে সেনাবাহিনী, বিভিন্ন সামাজিক, রাজনৈতিক, সাংস্কৃতিক ও মানবতাবাদী সংগঠন।
সময়ের আলো/এএ/