ই-পেপার সোমবার ৭ অক্টোবর ২০২৪
সোমবার ৭ অক্টোবর ২০২৪

পানির চাপ বাড়ায় ঝুঁকিতে সেচ প্রকল্পের মূল বেড়িবাঁধ
প্রকাশ: শুক্রবার, ২৩ আগস্ট, ২০২৪, ২:২৫ এএম  (ভিজিট : ২১৮)
ভারী বর্ষণ ও বন্যার পানির চাপে চাঁদপুরের মতলব উত্তরের মেঘনা-ধনাগোদা সেচ প্রকল্পের মূল বেড়িবাঁধ হুমকির মুখে পড়েছে। ইতিমধ্যে বেড়িবাঁধের ১০ থেকে ১২টি স্থানে বড় বড় ছিদ্র ও কমপক্ষে ৪০টি স্থানে ছোট ছোট গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। এতে চরম আতঙ্কের মধ্য দিয়ে সময় পার করছেন বাঁধের ভেতরের অংশে বসবাসকারী ৫ লাখ বাসিন্দা। তাদের আশঙ্কা, পানির চাপে যে কোনো সময় বাঁধ ভেঙে যেতে পারে। সে ক্ষেত্রে চরম ক্ষতির মুখে পড়তে হবে তাদের। অতীতেও বাঁধ ভাঙার ভয়ংকর অভিজ্ঞতা হয়েছে তাদের। ১৯৮৭-৮৮ অর্থবছরে নির্মাণের পর এখন পর্যন্ত দুবার বেড়িবাঁধটি ভেঙে যাওয়ার ঘটনা ঘটেছে। সে সময় কয়েকশ কোটি টাকার ফসল ও সম্পদের ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে স্থানীয়দের। 
এ প্রসঙ্গে মেঘনা-ধনাগোদা সেচ প্রকল্পের নির্বাহী প্রকৌশলী জয়ন্ত পাল বলেন, ভারী বৃষ্টি ও নদীর পানির চাপে বেড়িবাঁধের বিভিন্ন অংশে গর্ত ও বড় বড় ছিদ্রের সৃষ্টি হয়েছে। 

এ বিষয়ে জানার জন্য যোগাযোগ করা হলে বাগানবাড়ী ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান আবদুল্লাহ আল মামুন বলেন, আমাদের এলাকা থেকে কালীপুর বাজার পর্যন্ত বাঁধের বেশ কয়েকটি স্থানে অনেক বড় গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। এগুলো স্থানীয়ভাবে মেরামতের চেষ্টা করা হচ্ছে। তবে এ ব্যাপারে কার্যকর পদক্ষেপ নিচ্ছে না পাউবো কর্তৃপক্ষ। 

মেঘনা-ধনাগোদা সেচ প্রকল্পের পানি ব্যবহারকারী গোলাম নবী খোকন বলেন, বাঁধের ভাঙন ঠেকাতে এলাকার লোকজন রাত-দিন পাহারা দিচ্ছেন। কোথাও নতুন করে গর্ত বা ছিদ্রের সৃষ্টি হলে সেটি মেরামতের জন্য এলাকায় মাইকিং করা হচ্ছে। তাদের অভিযোগ, পাউবোর দায়িত্বহীনতার কারণে বাঁধের কয়েকটি অংশ ঝুঁকিতে রয়েছে।

বৃহস্পতিবার সরেজমিন সেচ প্রকল্পের বেড়িবাঁধের বিভিন্ন অংশ ঘুরে দেখা গেছে, সুগন্ধি, শিকিরচর, দশানী, সিপাহীকান্দি, গালিম খাঁ বাজার, কালীপুর, বাগানবাড়ী, ধনাগোদা, তালতলী, এনায়েতনগর, ফরাজীকান্দি, রায়েরকান্দি, নবীপুর, লালপুর ও গোপালকান্দি এলাকায় বেড়িবাঁধে ছোট-বড় অনেক গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। এগুলো দিয়ে পানি চুঁইয়ে বাঁধের ভেতরে ঢুকছে। তালতলী এলাকায় স্থানীয় লোকজন ও প্রশাসনের উদ্যোগে একটি বড় ছিদ্র বালুর বস্তা ফেলে আটকানোর চেষ্টা করছেন। ঝুঁকিপূর্ণ স্থান মেরামতের চেষ্টা করছেন স্থানীয় লোকজন ও প্রশাসন। তবে এলাকাবাসীর অভিযোগ, পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) বাঁধ রক্ষায় কার্যকরী কোনো পদক্ষেপ গ্রহণ করেনি। 

পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) চাঁদপুর কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, মতলব উত্তর উপজেলার ১৪টি ইউনিয়নে ১৯৮৭-৮৮ অর্থবছরে ৬০ কিলোমিটার বেড়িবাঁধ নির্মাণ করা হয়। এতে অর্থায়ন করে এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক ও বাংলাদেশ সরকার। পুরো বাঁধের ওপরে পিচঢালাই সড়ক রয়েছে। এই বাঁধের ভেতরে প্রায় ৩২ হাজার ১১০ একর ফসলি জমি আছে। 

সিপাহীকান্দি এলাকার কয়েকজন বাসিন্দার সঙ্গে আলাপকালে তারা অভিযোগ করেন, বর্ষা শুরুর পর থেকে টানা বৃষ্টি ও নদীর পানির চাপে মূল বাঁধের বিভিন্ন অংশে গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। সেগুলো মেরামতে দ্রুত ও কার্যকর উদ্যোগ নেয়নি পাউবো কর্তৃপক্ষ। সময়মতো পদক্ষেপ না নেওয়ায় এসব গর্ত ক্রমেই বড় হয়েছে। বাঁধও পড়েছে ভাঙনের ঝুঁকিতে। 

ফরাজীকান্দি এলাকার কৃষক সফিকুল ইসলাম বলেন, আমার এলাকায় বেড়িবাঁধ ভাইঙ্গা পড়লেও হেগুলি ঠিক করার কেউ নাই। বাঁধ ভাইঙ্গা গেলে সব ফসল তলাইয়া যাইব। তহন আমাগো পথে বসন লাগব।


সময়ের আলো/আরএস/




https://www.shomoyeralo.com/ad/1698385080Google-News-Update.jpg

সর্বশেষ সংবাদ

সর্বাধিক পঠিত


ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক: সৈয়দ শাহনেওয়াজ করিম, আমিন মোহাম্মদ মিডিয়া কমিউনিকেশন লিমিটেড এর পক্ষে প্রকাশক গাজী আহমেদ উল্লাহ
নাসির ট্রেড সেন্টার, ৮৯, বীর উত্তম সি আর দত্ত সড়ক (সোনারগাঁও রোড), বাংলামোটর, ঢাকা।

ফোন : +৮৮-০২-৯৬৩২৩৬৮-৭৪, ফ্যাক্স : +৮৮-০২-৯৬৩২৩৭৫ | ই-মেইল : shomoyeralo@gmail.com
close