ই-পেপার সোমবার ৭ অক্টোবর ২০২৪
সোমবার ৭ অক্টোবর ২০২৪

অন্তত ছয়জনের প্রাণহানি
হঠাৎ বন্যায় বিপর্যয় দিশাহারা মানুষ
প্রকাশ: শুক্রবার, ২৩ আগস্ট, ২০২৪, ১:০২ এএম আপডেট: ২৩.০৮.২০২৪ ৫:৫৪ এএম  (ভিজিট : ৩৫৩)
চট্টগ্রাম, ফেনী, কুমিল্লা, মৌলভীবাজারসহ দেশের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলের অন্তত ১০ জেলায় বন্যা ও বর্ষণ পরিস্থিতি ভয়াবহ রূপ নিয়েছে। ভারতীয় উজানের তীব্র ঢল ও টানা ভারী বর্ষণে ওই জেলাগুলোর বেশিরভাগ এলাকায় ঘরবাড়ি বা উঠান-আঙিনা পুরোটাই পানির নিচে তলিয়ে গেছে। রাস্তাঘাট ভেঙে বা পানিতে তলিয়ে গিয়ে যোগাযোগব্যবস্থা প্রায় বন্ধ হয়ে গেছে। বিদ্যুৎ ব্যবস্থা, ফোনের নেটওয়ার্কসহ প্রায় সব ধরনের ব্যবস্থায় বিপর্যয় দেখা দিয়েছে। এমন চরম প্রতিকূল পরিস্থিতির মাঝে পানিবন্দি হয়ে আটকরা পড়েছেন নারী, শিশুসহ কয়েক লাখ মানুষ। এ অবস্থায় অনেক এলাকায় দেখা দিয়েছে বিশুদ্ধ পানি ও খাবারের তীব্র সংকট। ফলে দিশাহারা বানভাসি মানুষরা তাদের উদ্ধার ও ত্রাণ সহায়তার জন্য বারবার আকুতি জানাচ্ছে।

দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয় বৃহস্পতিবার জানিয়েছে, এখন পর্যন্ত বন্যা আক্রান্ত জেলাগুলো হলো-কুমিল্লা, ফেনী, চট্টগ্রাম, খাগড়াছড়ি, নোয়াখালী ও মৌলভীবাজার, হবিগঞ্জ, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, সিলেট ও লক্ষ্মীপুর। এসব জেলার ৬৫ উপজেলা বন্যায় প্লাবিত। এই ১০ জেলায় মোট ৫ লাখ ৮৬ হাজার ৪০টি পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়েছে।

মন্ত্রণালয়ের প্রাথমিক তথ্য বিবরণী অনুযায়ী, পানিবন্দি বা ক্ষতিগ্রস্ত লোকদের আশ্রয় দিতে মোট ২ হাজার ২৪৬টি আশ্রয়কেন্দ্র খোলা হয়েছে। আশ্রয়কেন্দ্রগুলোয় মোট ৮২ হাজার ৬৯৪ জন লোক এবং ৭ হাজার ৭৫৫টি গবাদিপশুকে আশ্রয় দেওয়া হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্তদের চিকিৎসাসেবা প্রদানের জন্য ৪৯২টি মেডিকেল টিম চালু রয়েছে বলেও জানানো হয়েছে।

এদিকে সরকারি ও বেসরকারি তথ্যানুসারে, এ বন্যায় বৃহস্পতিবার এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত কুমিল্লা, ফেনী ও ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় অন্তত ছয়জনের প্রাণহানি ঘটেছে। সময়ের আলোর সংশ্লিষ্ট জেলা ও উপজেলা প্রতিনিধিদের পাঠানো খবর এবং সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন সূত্র থেকে এসব তথ্য জানা গেছে।

ভুক্তভোগী বাসিন্দা ও সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, যে বসতভিটায় কখনোই পানি ওঠেনি সেখানেও এখন সাঁতার কাটার অবস্থা। অন্যত্র নিরাপদে আশ্রয় নেবে? সেই সুযোগও তেমন একটা নেই। সড়ক, মহাসড়ক, রেললাইন সবকিছু বন্যার পানিতে তলিয়ে গেছে। এমনকি পানির তীব্র স্রোতের কারণে রাস্তাঘাট, ব্রিজ-কালভার্ট ভেঙে একাকার হয়ে গেছে। ফলে যে যেভাবে পারছে নিজের জীবন টিকিয়ে রাখার চেষ্টা করে যাচ্ছেন। যদিও ওইসব এলাকায় উদ্ধার তৎপরতা চালিয়ে যাচ্ছে সেনাবাহিনী, বিজিবি, ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সসহ বিভিন্ন সংস্থা ও স্বেচ্ছাসেবীরা। কিন্তু পরিস্থিতির ভয়াবহতা অনুসারে উদ্ধার কার্যক্রম অপ্রতুল বলে জানিয়েছেন অনেকে। এর মাঝে পরিস্থিতির ভয়াবহতায় বিদ্যুৎ, ফোন নেটওয়ার্কসহ সব ধরনের যোগাযোগব্যবস্থা বন্ধ হয়ে গেছে। তবে আগামী ২৪ ঘণ্টায় দেশের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চল, পূর্বাঞ্চল ও কাছাকাছি উজানে ভারী বৃষ্টিপাতের প্রবণতা কমে আসতে পারে বলে জানিয়েছে বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, কয়েক দিনের ভারী বর্ষণ ও উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে কুমিল্লার বন্যা পরিস্থিতি ক্রমেই অবনতির দিকে যাচ্ছে। চলমান বন্যায় কুমিল্লায় এখন পর্যন্ত অন্তত চারজনের মৃত্যু হয়েছে বলে জানা গেছে। এদের মধ্যে দুজন বন্যার পানিতে তলিয়ে, একজন বন্যার পানিতে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে এবং একজন মাথায় গাছ পড়ে মারা গেছেন।

দৈনিক সময়ের আলোর কম্পিউটার গ্রাফিক বিভাগের প্রধান শাহ আলম কর্মস্থল থেকে ছুটি নিয়ে কুমিল্লায় গ্রামের বাড়িতে গিয়ে আকস্মিক ভয়াবহ বন্যা পরিস্থিতির মধ্যে পড়েছেন। ২১ আগস্ট রাতে কুমিল্লার পরিস্থিতি নিয়ে কয়েক লাইন লিখে সহকর্মীদের উদ্দেশে তিনি বলেছেন, ‘আমার লাইফে (জীবনে) দেখা ভয়াবহ বজ্রসহ বৃষ্টিপাত। গত ১৯ আগস্ট রাত আড়াইটার দিকে বাস থেকে নেমে মুষলধারে বৃষ্টিতে ভিজে বাড়িতে এলাম। সেই থেকে আজ (২১ আগস্ট) গভীর রাত পর্যন্ত বৃষ্টি চলছেই। বৃষ্টিতে প্রতিটি বাড়ি পাহাড়ি ঢলের পানিতে প্লাবিত হয়েছে। ভেসে গেছে রাস্তাঘাট, পুকুরের মাছ। বাড়িতে অবরুদ্ধ হয়ে আছি। এ রকম বৃষ্টি জীবনেও দেখিনি।’

ঢাকায় কর্মরত সিনিয়র সাংবাদিক জামাল উদ্দিনের গ্রামের বাড়ি বন্যায় আক্রান্ত ফেনীতে। মোবাইল ফোনে নিকট স্বজনদের সঙ্গে কথা বলে বৃহস্পতিবার বিকাল সাড়ে ৪টার দিকে জামাল উদ্দিন তার ফেসবুকে এক পোস্ট দিয়ে জানিয়েছেন ফেনীর ভয়ানক পরিস্থিতির কথা। তিনি লিখেছেন, ‘ফেনীর আপডেট হচ্ছে-প্রায় পুরো ফেনী তলিয়ে গেছে। ইলেকট্রিসিটি, মোবাইল নেটওয়ার্ক কিছুই নেই। দুয়েক ঘণ্টা পরে ফেনীর ভেতর থেকে আর কোনো খবর মোটেও পাওয়া যাবে না। এখনও যদি প্রশাসন সর্বশক্তি দিয়ে ঝাঁপিয়ে না পড়ে লক্ষাধিক প্রাণহানি ঘটার আশঙ্কা রয়েছে। কারও সঙ্গে কারও যোগাযোগ নেই। ভলান্টারি কার্যক্রম অনেকাংশে ভেঙে পড়েছে। সবাই প্রাণ বাঁচাতে ব্যস্ত। মূলত ভোর থেকে টানা বৃষ্টি পরিস্থিতি আরও কঠিন করে দিয়েছে। সবাই দোয়া করবেন। শুকনা খাবারের প্রয়োজন। সবাই সাধ্যমতো সহযোগিতা করবেন। প্রশিক্ষিত এবং সজ্জিত বাহিনী ছাড়া এই মুহূর্তে কেউ ওখানে খুব বেশি কিছু আর করতে পারবে না। আল্লাহ সবাইকে হেফাজত করুন।’

কুমিল্লায় পানিবন্দি ১২ লক্ষাধিক মানুষ, চারজনের মৃত্যু : কুমিল্লা প্রতিনিধি রুবেল মজুমদার জানান, কুমিল্লায় টানা বৃষ্টি ও উজানের ঢলে ১২ লক্ষাধিক মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। কুমিল্লার উপজেলা নাঙ্গলকোট, সদর দক্ষিণ, মনোহরগঞ্জ, বরুড়া ও চৌদ্দগ্রামের অধিকাংশ গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। এসব এলাকায় তলিয়ে গেছে শত শত মাছের ঘের, আউশ ধান ও আমনের বীজতলা। এ ছাড়া গোমতী, ডাকাতিয়া, কাকড়ী নদীর চর তীরবর্তী শাকসবজিসহ নিম্নাঞ্চলের ফসলাদি তলিয়ে গেছে। এদিকে কুমিল্লায় বৃষ্টি ও বন্যার প্রভাবে গত দুদিনে চারজনের মৃত্যু হয়েছে। এর মধ্যে বুধবার মারা যান তিনজন, সোমবার মারা গেছেন একজন। এ ছাড়া আদর্শ সদর, লাকসাম, বুড়িচং, দেবীদ্বার, মুরাদনগর ও দাউদকান্দির নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হওয়ায় নিদারুণ কষ্টের মধ্যে পড়েছেন লাখ লাখ মানুষ।

গতকাল বৃহস্পতিবার বেলা ১১টায় গোমতীর সদর অংশে বিপদসীমার ৮০ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে পানি প্রবাহিত হয়েছে। এ ছাড়া নদী তীরবর্তী অন্যান্য অঞ্চলে পানি প্রবাহিত হচ্ছে বিপদসীমার ৮ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে। ডাকাতিয়া নদীর কুমিল্লা অংশে পানি বেড়েছে। কুমিল্লার অন্যান্য নদীতেও পানি বেড়ে তীরবর্তী অঞ্চল প্লাবিত হয়েছে।

কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামের কালকোট গ্রামের বাসিন্দা কালা মিয়া বলেন, ‘আমাগো পুরো গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। বেশিরভাগ বাড়িঘরে পানি প্রবেশ করেছে। বন্যা আগেও দেখেছি। তবে এমন বন্যা জীবনেও দেখিনি।’

ডাকাতিয়া নদী তীরবর্তী চৌদ্দগ্রামের গুণবতী গ্রামের বাসিন্দা আলা উদ্দিন জানান, এ গ্রামের কিছু বাকি নেই। বাড়িঘর, মাছের ঘের, ফসল সব পানির নিচে।

চৌদ্দগ্রাম উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ রহমত উল্লাহ বলেন, আকস্মিক এমন বড় বন্যায় মানুষ দিশাহারা হয়ে পড়েছে। এলাকাগুলো থেকে বিচ্ছিন্নভাবে খবর পাচ্ছি। চেয়ারম্যানরা অধিকাংশ কাজে যোগ না দেওয়ায় ইউপি সচিবদের থেকে তথ্য নিচ্ছি।

নাঙ্গলকোট উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা সুরাইয়া আক্তার লাকী জানান, এ উপজেলার প্রায় শতভাগ গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। আমরা দুর্গতদের তালিকা করার চেষ্টা করছি। উপজেলা আশ্রয়কেন্দ্রগুলো চালু করা হয়েছে। তালিকা করা শেষ হলে ত্রাণ সহায়তা শুরু হবে।

আদর্শ সদর উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা রোমেন শর্মা বলেন, গোমতী নদীর সদর অংশের পানি বিপদসীমার ৪৫ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। উপজেলার পাঁচথুবি ও আমড়াতলি ইউনিয়নের বাসিন্দাদের নিরাপদ আশ্রয়ে সরে যেতে বলা হয়েছে।

কুমিল্লার অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) পঙ্কজ বড়ুয়া জানান, বৃহস্পতিবার বেলা ১১টা পর্যন্ত পুরো জেলার বন্যার চিত্র জানা যায়নি। জেলার ১৭ উপজেলা থেকে তথ্য সংগ্রহ করা হচ্ছে। তথ্য সংগ্রহ শেষ হলে জেলা প্রশাসন থেকে প্রয়োজনীয় সহযোগিতা শুরু হবে।

ভারতের ঢলে মৌলভীবাজারে আড়াই লক্ষাধিক মানুষ পানিবন্দি : মৌলভীবাজার প্রতিনিধি সাইদুল হাসান সিপন জানান, টানা ভারী বর্ষণ ও ভারত থেকে নেমে আসা উজানের ঢলে আকস্মিক বন্যায় মৌলভীবাজারের কুলাউড়া, জুড়ী, কমলগঞ্জ, রাজনগর ও সদর উপজেলার বেশ কয়েকটি ইউনিয়নের অসংখ্য ঘরবাড়ি, গ্রামীণ সড়ক ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান তলিয়ে গেছে। এতে কমপক্ষে আড়াই লক্ষাধিক মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন। এ ছাড়া সড়কপথে সিলেটের সঙ্গে যোগাযোগব্যবস্থাও বন্ধ হয়ে পড়েছে। তবে পানি কমতে শুরু করেছে বলে আশার খবর দিয়েছে পাউবো।

জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, বন্যায় ২১২টি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। আশ্রয়কেন্দ্র রয়েছে ১৬টি, এতে আশ্রয় নিয়েছেন ৪ হাজার ৩২৫ জন, মেডিকেল টিম রয়েছে ২৫টি।

জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা মোহম্মদ ছাদু মিয়া জানান, এখন পর্যন্ত আশ্রয়কেন্দ্রে গেছেন প্রায় ৫ হাজার মানুষ। বন্যার্তদের সহায়তায় ১ হাজার ৫০ টন চাল ও নগদ ২৫ লাখ টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে।

বরিশালের ১৩ নদীর পানি বিপদসীমার ওপরে : বরিশাল ব্যুরো প্রধান এম মোফাজ্জেল জানান, বরিশাল বিভাগের ১৩ নদ-নদীর পানি বিপদসীমা অতিক্রম করে প্রবাহিত হচ্ছে। এতে করে নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। এতে করে বহু মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন। অন্যদিকে টানা বৃষ্টিপাতের কারণে বরিশাল নগরীজুড়ে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় পানি উন্নয়ন বোর্ড ও আবহাওয়া দফতর বিষয়টি নিশ্চিত করে।

বরিশাল নগরী ঘেঁষা কীর্তনখোলা নদীর পানি বিপদসীমা অতিক্রম করে প্রবাহিত হচ্ছে। এ ছাড়াও ঝালকাঠির বিষখালী, বেতাগীর বিষখালী, দৌলতখানের সুরমা ও মেঘনা এবং তজুমদ্দিনের সুরমা ও মেঘনা নদী, মির্জাগঞ্জের বুড়িশ্ব ও পায়রা নদী, বরগুনার বিষখালী, পাথরঘাটার বিষখালী, উমেদপুরের কচা নদী এবং পিরোজপুরের বলেশ্বর নদীর পানি বিপদসীমা অতিক্রম করে প্রবাহিত হচ্ছে।

বরিশাল পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ-সহকারী প্রকৌশলী তাজুল ইসলাম বলেন, বিভিন্ন নদ-নদীর পানি বেড়ে যাওয়ায় কয়েকটি নদীর পানি বিপদসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়েছে। বাংলাদেশ উপকূলীয় এলাকায় অবস্থানরত লঘুচাপটি ঘনীভূত হয়ে সুস্পষ্ট লঘুচাপে পরিণত হওয়ায় বরিশালে নদীর পানি বেড়েছে বলে জানান তিনি।

ফটিকছড়িতে পানিবন্দি মানুষের হাহাকার : ফটিকছড়ি (চট্টগ্রাম) প্রতিনিধি এসএম আক্কাছ জানান, টানা বৃষ্টি ও পাহাড়ি ঢলের পানিতে চট্টগ্রামের ফটিকছড়ি উপজেলার হালদা, সর্তা ও ধুরুং নদীর পানি বেড়ে বন্যা চরমভাবে দেখা দিয়েছে। তলিয়ে যাচ্ছে গ্রামের পর গ্রাম। হাজার হাজার হেক্টর জমির ফসলি ক্ষেত পানিতে তলিয়ে গেছে।

সরেজমিন দেখা যায়, উপজেলার বাগান বাজার, দাঁতমারা, নারায়ণহাট, ভুজপুর, পাইন্দং, হারুয়ালছড়ি, সুয়াবিল, লেলাং, কাঞ্চননগর, ফটিকছড়ি ও নাজিরহাট পৌরসভাসহ বিভিন্ন এলাকায় গ্রামের পর গ্রামে বন্যায় প্লাবিত হয়েছে। প্রধান কয়েকটি সড়ক ও অভ্যন্তরীণ সড়ক প্লাবিত হয়ে যোগাযোগ বন্ধ হয়ে গেছে। কিছু এলাকায় বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে।

সুয়াবিল এলাকার বাসিন্দা আলমগীর হোসেন বলেন, ‘তিনি পরিবার নিয়ে হালদার চরের ভেতর বসবাস করেন। গত ১০ বছর হালদায় এত পানি দেখেননি। তার বৃদ্ধ মা, স্ত্রী, সন্তান আর একটি গাভি নিয়ে বাঁধে আছেন।’

পাইন্দং ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. সরোয়ার হোসেন বলেন, ‘বন্যায় পুরো এলাকা প্লাবিত। তলিয়ে যাচ্ছে গ্রামের পর গ্রাম। পানিবন্দি মানুষের মধ্যে হাহাকার শুরু হয়েছে। এভাবে পানি বাড়লে পরিস্থিতির চরম অবনতি ঘটবে।’

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মোজাম্মেল হক চৌধুরী জানান, দুর্গত এলাকায় ৩৯টি আশ্রয়কেন্দ্র খোলা হয়েছে। স্বাস্থ্যসেবা ও বিশুদ্ধ পানি সরবরাহে সেল গঠন করা হয়েছে। জেলা প্রশাসনের বরাদ্দকৃত খাদ্যশস্য দুর্গতদের মাঝে বিতরণ করা হচ্ছে।


সময়ের আলো/আরএস/




https://www.shomoyeralo.com/ad/1698385080Google-News-Update.jpg

সর্বশেষ সংবাদ

সর্বাধিক পঠিত


ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক: সৈয়দ শাহনেওয়াজ করিম, আমিন মোহাম্মদ মিডিয়া কমিউনিকেশন লিমিটেড এর পক্ষে প্রকাশক গাজী আহমেদ উল্লাহ
নাসির ট্রেড সেন্টার, ৮৯, বীর উত্তম সি আর দত্ত সড়ক (সোনারগাঁও রোড), বাংলামোটর, ঢাকা।

ফোন : +৮৮-০২-৯৬৩২৩৬৮-৭৪, ফ্যাক্স : +৮৮-০২-৯৬৩২৩৭৫ | ই-মেইল : shomoyeralo@gmail.com
close