ই-পেপার সোমবার ৭ অক্টোবর ২০২৪
সোমবার ৭ অক্টোবর ২০২৪

নোয়াখালীতে বন্যা পরিস্থিতির অবনতি, বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন ৪ লাখ মানুষ
প্রকাশ: বৃহস্পতিবার, ২২ আগস্ট, ২০২৪, ৯:২৫ পিএম আপডেট: ২৩.০৮.২০২৪ ১২:৩৩ এএম  (ভিজিট : ৩৩৫)
ভারী বৃষ্টি ও ফেনীর মুহুরী নদী থেকে নেমে আসা পানিতে নোয়াখালীতে বন্যার আরও অবনতি হয়েছে। জেলায় প্রায় ৪ লাখ মানুষ বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছেন। এ ছাড়া গ্রামীণ সড়কে সব ধরনের যোগাযোগও বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। এতে চরম দুর্ভোগে আছে পানিবন্দী মানুষ। একরকম অনিশ্চিত দিন কাটাচ্ছেন তারা।
 
বৃহস্পতিবার (২২ আগস্ট) বেলা ১১টার দিকে বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হওয়ায় নোয়াখালী জেলা প্রশাসক কার্যালয়ে জেলা দুর্যোগ কমিটির এক জরুরি বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন জেলা প্রশাসক দেওয়ান মাহবুবুর রহমান।

সূত্রে জানা যায়, টানা বৃষ্টিতে জেলা শহর মাইজদীসহ আট উপজেলার বেশির ভাগ এলাকা জলাবদ্ধ হয়ে গেছে। ফেনী জেলার পানি নোয়াখালী সেনবাগ, বেগমগঞ্জ, কোম্পানীগঞ্জ ও কবিরহাট উপজেলা বেশি ক্ষতি হয়েছে। তাছাড়া খালগুলো অবৈধভাবে দখল ও পৌর এলাকায় ড্রেন ও নালাগুলো দীর্ঘদিন পরিষ্কার না করায় জলাবদ্ধতা প্রকট আকার ধারণ করে। পরবর্তীতে টানা বৃষ্টির কারণে ও ফেনী মুহুরী নদীর পানি নোয়াখালীর ওপর দিয়ে প্রবাহিত হওয়ার কারণে জেলা শহর মাইজদীসহ আট উপজেলার বেশির ভাগ এলাকা বন্যায় রূপ নিয়েছে। নোয়াখালীর সেনবাগ, বেগমগঞ্জ, কোম্পানীগঞ্জ, কবিরহাট উপজেলা ও জেলা শহর মাইজদীতে বেশি জলাবদ্ধ হয়েছে। তাছাড়া জেলার নালা-খালগুলো অবৈধভাবে দখল ও পৌর এলাকায় ড্রেনগুলো দীর্ঘদিন পরিষ্কার না করায় জলাবদ্ধতা প্রকট আকার নিয়েছে, যা বন্যায় রূপ নিয়েছে।

জেলা আবহাওয়া অধিদপ্তরের উচ্চ পর্যবেক্ষক আরজুল ইসলাম জানিয়েছেন, গত ২৪ ঘণ্টায় নোয়াখালীতে ১৪৭ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। সক্রিয় লঘুচাপ ও মৌসুমি জলবায়ুর কারণে জেলায় আরও তিনদিন ভারী বৃষ্টিপাত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

এদিকে, বন্যার পানি বেশি দিন জমে থাকার কারণে বিভিন্ন উপজেলায় বিদ্যুতের খুঁটি সরে যাওয়ায় লাইন বিভ্রাট দেখা দিয়েছে। ফলে নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ ঘাটতি দেখা দিয়েছে। জেলার সুবর্ণচর, কবিরহাট, সেনবাগ ও কোম্পানীগঞ্জ উপজেলায় বিদ্যুৎ সমস্যা বেশি দেখা দিয়েছে।

নোয়াখালী পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির জেনারেল ম্যানেজার মো. জাকির হোসেন বলেন, জেলায় সাত লাখ ৭৫ হাজার গ্রাহকের মধ্যে সাড়ে প্রায় চার লাখ গ্রাহক বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন। ভারী বৃষ্টিতে বিভিন্ন এলাকার লাইন ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এ ছাড়া বেগমগঞ্জের একটি উপকেন্দ্রে পানি উঠে গেছে।
 
হঠাৎ বন্যায় নোয়াখালীতে যোগাযোগ ব্যবস্থারও অবনতি হয়েছে। পানির নিচে ডুবে যাওয়ায় ক্ষতি হচ্ছে সড়কের। গ্রামীণ সড়কগুলোতে বেহাল অবস্থা দেখা দিয়েছে। জেলা সড়ক ও স্থানীয় সরকার কার্যালয় বলছে, পানি নেমে গেলে বুঝা যাবে ক্ষতির পরিমাণ কেমন? সে অনুযায়ী ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে বিষয়গুলো জানানো হবে।

জেলা প্রশাসক দেওয়ান মাহবুবুর রহমান জানান, নোয়াখালীর নয়টি উপজেলার মধ্যে আটটি উপজেলা বন্যায় আক্রান্ত হয়েছে। এসব উপজেলায় ইতিমধ্যে ৩৮৮ আশ্রয় কেন্দ্রে প্রায় ৩৬ হাজার মানুষ আশ্রয় নিয়েছে। জেলায় প্রায় ২০ লাখ মানুষ পানিবন্দী রয়েছে। আমরা শুকনো খাবার দেয়ার চেষ্টা করছি। আমাদের উপজেলার কর্মকর্তাবৃন্দ মাঠে কাজ করছে। স্বেচ্ছাসেবকরা কাজ করছে। আমরা বিত্তশালী মানুষের প্রতি আহবান জানাচ্ছি বন্যার্তদের পাশে দাঁড়ানোর জন্য। এছাড়া বিভিন্ন সামাজিক, রাজনৈতিক, সাংস্কৃতিকসহ বিভিন্ন সংগঠনকে এগিয়ে আসার আহবান জানাচ্ছি। প্রশাসন ও সরকারের পক্ষ থেকে ইতিমধ্যে নগদ টাকা ও চাল বিতরণ করা হয়েছে। ত্রাণ ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা মন্ত্রণালয়ে আমরা জেলার চাহিদার কথা জানিয়েছি।

তিনি আরও বলেন, নোয়াখালীতে প্রথমে জলাবদ্ধতাই ছিলো। কিন্তু ফেনী জেলার মুহুরী নদীর পানি বেড়ে যাওয়ায় সেটা নোয়াখালীর ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। সে কারণে নোয়াখালীতে বন্যা দেখা দিয়েছে।  

সময়ের আলো/আরআই


আরও সংবাদ   বিষয়:  ভারী বৃষ্টি-বন্যা পরিস্থিতির অবনতি   বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন-পানিবন্দী মানুষ   নোয়াখালী  




https://www.shomoyeralo.com/ad/1698385080Google-News-Update.jpg

সর্বশেষ সংবাদ

সর্বাধিক পঠিত


ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক: সৈয়দ শাহনেওয়াজ করিম, আমিন মোহাম্মদ মিডিয়া কমিউনিকেশন লিমিটেড এর পক্ষে প্রকাশক গাজী আহমেদ উল্লাহ
নাসির ট্রেড সেন্টার, ৮৯, বীর উত্তম সি আর দত্ত সড়ক (সোনারগাঁও রোড), বাংলামোটর, ঢাকা।

ফোন : +৮৮-০২-৯৬৩২৩৬৮-৭৪, ফ্যাক্স : +৮৮-০২-৯৬৩২৩৭৫ | ই-মেইল : shomoyeralo@gmail.com
close