ই-পেপার সোমবার ৭ অক্টোবর ২০২৪
সোমবার ৭ অক্টোবর ২০২৪

অন্যরকম দৃশ্যপট
পাল্টে গেছে সচিবালয়ের ভেতরে ও বাইরে
প্রকাশ: সোমবার, ১৯ আগস্ট, ২০২৪, ২:৪৩ এএম আপডেট: ১৯.০৮.২০২৪ ৮:১৫ এএম  (ভিজিট : ৩৬১)
অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের বয়স মাত্র এক সপ্তাহ। এই সময়ের ব্যবধানে প্রশাসনের কেন্দ্রবিন্দু এক অন্য রূপে আবির্ভূত হয়েছে। একেবারে প্রবেশপথ থেকে শুরু করে ভেতরে বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ে। গত রোববার যখন অন্তর্বর্তী সরকারের নিয়োগ পাওয়া উপদেষ্টারা সচিবালয়ে এসেছিলেন তাদের দফতরে ছিল একটু ভিন্ন চিত্র। আবার গতকাল অর্থাৎ এক সপ্তাহের ব্যবধানের সচিবালয় আরেক রূপ ধারণ করেছে। সে সময় প্রত্যেক উপদেষ্টার মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব ছিল একটি। আর উপদেষ্টার সংখ্যাও ছিল হাতেগোনা।এখন উপদেষ্টা বৃদ্ধি পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বের সংখ্যাও বৃদ্ধি পেয়েছে। আবার দফতর পুনর্বণ্টন হয়েছে। সব মিলিয়ে গতকালের সচিবালয়ের দৃশ্যপট ছিল অন্য ধরনের।

গতকাল রোববার একেকজন উপদেষ্টাকে দুটি দফতরে বসতে হয়েছে। যেমন তরুণ দুই উপদেষ্টাকে দুই মন্ত্রণালয়ে বসতে হয়েছে। ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রণালয় পাওয়া উপদেষ্টা নাহিদ ইসলামকে গতকাল সকালেই নতুন মন্ত্রণালয় পাওয়া তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ে বসতে হয়েছে। আবার যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়াকে নতুন মন্ত্রণালয় পাওয়া শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ে বসতে হয়েছে।

অন্তর্বর্তী সরকার গঠনের একেবারে এক সপ্তাহ পরে নতুন করে নিয়োগ পাওয়া উপদেষ্টাদের মধ্যে আলী ইমাম মজুমদার ছাড়া বাকি সবাই সচিবালয়ে তাদের দফতরে এসেছেন। তবে সময়টা ভাগ করে নেন। অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদ গতকাল রোববার সচিবালয়ে আসার আগেই শেরেবাংলা নগরস্থ অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগে এডিবি প্রতিনিধির সঙ্গে বৈঠক করেন। তিনি সচিবালয়ে অর্থ মন্ত্রণালয়ে প্রবেশের মুখে সচিবালয়ের কর্মর্কতা-কর্মচারীদের দাবি-দাওয়ার মুখে পড়েন। অর্থ মন্ত্রণালয় থেকে দুপুর ২টার সময় বসেন বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে। তিনি আগে শুধু অর্থ ও পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পেলেও পরবর্তী সময়ে পরিকল্পনা বাদ দিয়ে যুক্ত হন বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে।

বাংলাদেশের বিখ্যাত অর্থনীতিবিদ হিসেবে সুপরিচিত ড. ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ রোববার প্রথমেই আসেন শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে। তিনিও দুটি মন্ত্রণালয় পেয়েছেন। এর মধ্যে আরেকটি হচ্ছে পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়। তবে তাকে সচিবালয়ে প্রবেশের ক্ষেত্রে যানজটের সম্মুখীন হতে হয়েছে বলে জানা গেছে।

সাবেক সচিব মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান উপদেষ্টা হিসেবে দুটি মন্ত্রণালয় পেলেও তিনি প্রথমে আসেন যোগাযোগ মন্ত্রণালয়ে। সচিবালয়ের তারই মন্ত্রণালয়ের সড়ক ও মহাসড়ক বিভাগের সচিব হিসেবে পেয়েছেন চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ পাওয়া এহছানুল হককে। উপদেষ্টা পরে অবশ্য বিদ্যুৎ ও জ্বালানি মন্ত্রণালয়ে যান বলে জানা গেছে।

স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা হিসেবে নিয়োগ পেয়েছেন সাবেক লে. জে. জাহাঙ্গীর আলম (অব.)। তিনি প্রথমে কৃষি মন্ত্রণালয়ে বসেন। পরে যান স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে। এ মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের সচিব হিসেবে নিয়োগ পেয়েছেন চুক্তি পাওয়া আবদুল মোমেন।

সচিবালয়ের বাইরে ও ভেতরে সমাবেশ আর সমাবেশ। বলা যায় দাবি-দাওয়ার দাবিতে মানববন্ধন। এর আগে এ ধরনের মানববন্ধন সচিবালয়ের বাইরে বা ভেতরে দেখা যায়নি। ভেতরে যারা ব্যানার নিয়ে মানববন্ধন করেছেন তারা মূলত বৈষম্য নিরসনের দাবি জানাতেই এই পদক্ষেপ নিয়েছেন বলে কয়েকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে। আবার তাদের দাবির মধ্যে নতুন একটি বিষয় যোগ হয়েছে তা হলো, রেশন।

অর্থ উপদেষ্টা সচিবালয়ের তার দফতরে প্রবেশের মুখে এই মানববন্ধনের দৃশ্যটি অবলোকন করেন। তিনি তার দফতরের চার তলায় ওঠার সময় তাদের অনেকে ব্যানার নিয়ে হাজির হন। পরে অবশ্য তাদের দাবি-দাওয়া সম্পর্কিত একটি স্মারকলিপি দিয়ে চলে যান।

সচিবালয়ের বাইরে অর্থাৎ প্রবেশমুখে কয়েকটি সংগঠন ব্যানার নিয়ে মানববন্ধন করেন। এর মধ্যে একটি ছিল সাব-ইন্সপেক্টর নিয়োগ বাতিল নিয়ে। আবদুল গণি রোড নামে পরিচিত সচিবালয়ের অন্য প্রান্তে দীর্ঘ লাইন করে দাঁড়ানো স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ অধিদফতরে কর্মকর্তাদের মানববন্ধন। কয়েক দশকে এ ধরনের মানববন্ধন সচিবালয়ে এই রাস্তায় আর দেখা যায়নি।

একাধিক সূত্রে জানা গেছে, আসলে কোনো মন্ত্রণালয় বা বিভাগের কোনো ধরনের ফাইলের কাজ হয়নি। তবে জনপ্রশাসন ও স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের কয়েকটি শাখায় কাজ করতে দেখা গেছে। তবে প্রত্যেক সচিব ও উপদেষ্টাদের দফতরে কাজের নমুনা দেখা গেলেও অন্যদিনের মতো গতি দেখা যায়নি। মূলত নতুন উপদেষ্টাদের মন্ত্রণালয়ভিত্তিক মতবিনিময় সভা নিয়ে সবাই ছিলেন ব্যস্ত।

সচিবালয়ে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের এপিডি শাখা বেশ তৎপর। কারণ এই বিভাগ থেকে বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের বদলি থেকে শুরু করে নিয়োগের কাজ চলছে। সচিবালয়ে দর্শনার্থীদের সংখ্যা ছিল কম। তবে বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের অধীনস্থ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের দৌড়ঝাঁপ বেড়ে গেছে।

সময়ের আলো/আরএস/ 




https://www.shomoyeralo.com/ad/1698385080Google-News-Update.jpg

সর্বশেষ সংবাদ

সর্বাধিক পঠিত


ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক: সৈয়দ শাহনেওয়াজ করিম, আমিন মোহাম্মদ মিডিয়া কমিউনিকেশন লিমিটেড এর পক্ষে প্রকাশক গাজী আহমেদ উল্লাহ
নাসির ট্রেড সেন্টার, ৮৯, বীর উত্তম সি আর দত্ত সড়ক (সোনারগাঁও রোড), বাংলামোটর, ঢাকা।

ফোন : +৮৮-০২-৯৬৩২৩৬৮-৭৪, ফ্যাক্স : +৮৮-০২-৯৬৩২৩৭৫ | ই-মেইল : shomoyeralo@gmail.com
close