গত ১০ মাসে ইসরায়েলি আগ্রাসনে গাজায় নিহত মানুষের সংখ্যা ৪০ হাজার ছাড়িয়েছে। বৃহস্পতিবার (১৫ আগস্ট) গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় এসব তথ্য জানিয়েছে। তথ্য অনুযায়ী গত ১০ মাসে গাজায় নিহত মানুষের মোট সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৪০ হাজার ৫ জন। একই সময় আহত হয়েছেন আরও প্রায় এক লাখ মানুষ।
এদিকে গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের নিহত মানুষের পরিসংখ্যানে সাধারণ মানুষ ও যোদ্ধাদের সংখ্যা আলাদা করা হয়নি। তবে নিহত মানুষের একটা বড় অংশই শিশু, নারী ও বয়স্ক মানুষ বলে উল্লেখ করা হয়েছে মন্ত্রণালয়টির প্রতিবেদনে।
এদিকে ইসরায়েলের প্রতিরক্ষা বাহিনীর (আইডিএফ) মুখপাত্র রিয়ার অ্যাডমিরাল ড্যানিয়েল হাগারি বৃহস্পতিবার এক বিবৃতিতে জানিয়েছেন, যুদ্ধে এ পর্যন্ত নিহত হয়েছে হামাসের ১৭ হাজার যোদ্ধা। কোন উৎস থেকে প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে নিহত হামাস যোদ্ধাদের এই সংখ্যা সম্পর্কে আইডিএফ নিশ্চিত হলো— তা অবশ্য ভেঙে বলেননি রিয়ার অ্যাডমিরাল হাগারি।
গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় বা ইসরায়েল হতাহতের যে সংখ্যার কথা জানিয়েছে, তা বিবিসিসহ আন্তর্জাতিক কোনো গণমাধ্যম এখন পর্যন্ত যাচাই করতে পারেনি। তবে গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় হতাহত মানুষের যে পরিসংখ্যান দিচ্ছে, সেটাকে জাতিসংঘ ও অন্যান্য আন্তর্জাতিক সংস্থা নির্ভরযোগ্য বলে মনে করে।
যেসব ব্যক্তির মৃত্যু হাসপাতালে নিবন্ধন করা হয়, গাজা স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় কেবল তাদের পরিসংখ্যান প্রকাশ করে। এসব নিহত মানুষের নাম, পরিচয়, বয়সসহ অন্য পরিচয় নথিভুক্ত করা হয়। আর যেসব মরদেহ শনাক্ত করা জানা যায় না, সেগুলোকেও নিহত মানুষের মোট সংখ্যায় যুক্ত করা হয়।
বিশ্লেষকেরা মনে করেন, যুদ্ধ শেষ হলে গাজার হতাহতের প্রকৃত চিত্র পাওয়া যাবে। কারণ, তখন জাতিসংঘ, নানা আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা, ফিলিস্তিনের নিজস্ব সংস্থা, এমনকি ইসরায়েলের সামরিক বাহিনীও আলাদা আলাদা তদন্ত পরিচালনা করবে। এছাড়া একটা সময় যুদ্ধ বন্ধ হয়ে গেলেও রোগ ও অনাহারের মতো যুদ্ধের ‘অপ্রত্যক্ষ’ কারণে গাজায় আরও অনেক মানুষ মারা যেতে পারেন বলছে বিশেষজ্ঞরা।
গত ৭ অক্টোবর হামাসের নেতৃত্বে ইসরায়েলে হামলা চালানো হয়। এতে প্রায় ১ হাজার ২০০ জন নিহত হন। আহত হন কয়েক হাজার মানুষ। বন্দী করে গাজায় আনা হয় প্রায় আড়াই শ জনকে। এ ঘটনার পরপরই গাজায় সর্বাত্মক হামলা শুরু করে ইসরায়েল। এখনো হামলা সমানতালে অব্যাহত রয়েছে। অব্যাহত রয়েছে যুদ্ধবিরতির আলোচনাও।
সূত্র: বিবিসি/ওয়াশিংটন পোস্ট
সময়ের আলো/আরআই