২০১৭ সালের ১৭ আগস্ট আমিনুল হক ভূঁইয়ার পর শাবিপ্রবির উপাচার্য হিসেবে নিয়োগ পান ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সাবেক সভাপতি ও অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিন আহমেদ। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের সাবেক এ অধ্যাপক ২০১৭ সালের ২১ আগস্ট শাবিপ্রবির ১১তম উপাচার্য হিসেবে যোগ দেন। প্রথম মেয়াদ শেষ করে, দ্বিতীয় মেয়াদে দায়িত্ব চলাকালে একবছর হাতে রেখেই আগস্ট মাসেই উপাচার্যের চেয়ার থেকে পদত্যাগ করলেন অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিন আহমেদ।
শনিবার (১০ আগস্ট) বিকালে উপাচার্য অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিন আহমেদের পদত্যাগের বিষয়টি নিশ্চিত করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের জনসংযোগ দপ্তর।
জানা যায়, ব্যক্তিগত কারণ দেখিয়ে উপাচার্য তার পদ থেকে পদত্যাগ করেছেন। ইতোমধ্যে মহামান্য রাষ্ট্রপতির কাছে উপাচার্য তার পদত্যাগপত্র জমাও দিয়েছেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ও রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে সিনেট থাকায় প্যানেল করে উপাচার্য নির্বাচন করা হয়। তবে শাবিপ্রবিতে সিনেট না থাকায় রাষ্ট্রপতি সরাসরি এই বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য নিয়োগ দেন।
ক্যাম্পাস সূত্রে জানা যায়, অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিন আহমেদের প্রথম মেয়াদ শেষ হওয়ার আগেই ২০২১ সালের জুন মাসে শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে তাকে পুনরায় দ্বিতীয় মেয়াদে নিয়োগ দেওয়া হয় এবং পরে ২০২১ সালের ২১ আগস্ট তিনি দ্বিতীয় মেয়াদে যোগদান করেন। উপাচার্যের দায়িত্বগ্রহণের আগে অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিন আহমেদ একাধারে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সভাপতি, সমাজবিজ্ঞান অনুষদের ডিন পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর শিক্ষকদের সংগঠন বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি ফেডারেশনের সভাপতির দায়িত্বসহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করেছেন।
বিতর্ক:২০২২ সালের ১৩ জানুয়ারি রাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের সিরাজুন্নেসা চৌধুরী হলের প্রাধ্যক্ষ জাফরিন আহমেদের বিরুদ্ধে অসদাচরণের অভিযোগ তুলে তার পদত্যাগসহ তিন দফা দাবিতে আন্দোলন শুরু করেন হলের কয়েকশ ছাত্রী। এ দাবিতে আন্দোলন চলাকালে ১৬ জানুয়ারি উপাচার্যকে অবরুদ্ধ করেন আন্দোলনকারীরা। ওই দিন সন্ধ্যায় পুলিশ শিক্ষার্থীদের লাঠিপেটা করলে দুই পক্ষে সংঘর্ষ বাধে। এরপর রাবার বুলেট ও সাউন্ড গ্রেনেড ছুড়ে শিক্ষার্থীদের ছত্রভঙ্গ করে উপাচার্যকে মুক্ত করে বাসায় নিয়ে যায় পুলিশ। পরে রাতে বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ ঘোষণা করে শিক্ষার্থীদের হল ছাড়ার নির্দেশ দেন উপাচার্য। এ নির্দেশনা উপেক্ষা করে ওই রাত থেকেই শিক্ষার্থীরা উপাচার্যের পদত্যাগ দাবিতে আন্দোলন শুরু করেন। পরদিন থেকে উপাচার্যের বাসভবনের সামনে টানা অবস্থান নেন তারা। সেখানে ২৮ শিক্ষার্থী টানা ১৩৬ ঘণ্টা অনশন করেন। ২৬ জানুয়ারি বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক অধ্যাপক ড. মুহম্মদ জাফর ইকবালের আশ্বাসে শিক্ষার্থীরা অনশন ভেঙে ব্যারিকেড তুলে নেন। এ ঘটনায় ব্যাপক আলোচিত-সমালোচিত হন ভিসি ফরিদ আহমদ।
সময়ের আলো/এএ/