ই-পেপার সোমবার ৭ অক্টোবর ২০২৪
সোমবার ৭ অক্টোবর ২০২৪

বিশেষ সময়ে নারীদের মর্যাদা ও সেবা প্রদান
প্রকাশ: বৃহস্পতিবার, ১ আগস্ট, ২০২৪, ২:০৯ এএম  (ভিজিট : ২৩৬)
মহান আল্লাহ মানুষকে মর্যাদাবান করে সৃষ্টি করেছেন। পুরুষ বা নারী সবাই মানুষ হিসেবে এ মর্যাদা প্রাপ্তির অধিকার রাখে। ইসলামের দৃষ্টিতে পিরিয়ড চলাকালে নারীরাও লাভ করবেন স্বাভাবিক মানবিক মর্যাদা এবং বিশেষ সেবা। পিরিয়ড, হায়েজ বা ঋতুস্রাব নারীদের স্বাভাবিক বিষয়। আল্লাহ তায়ালা এতে কল্যাণ রেখেছেন। ইসলামে ঋতুবতী নারীদের রয়েছে সম্মানজনক অধিকার ও করণীয়। তবে ইসলামপূর্ব যুগে ইহুদিরা ঋতুবতী নারীদের সঙ্গে অত্যন্ত খারাপ আচরণ করত। তাদের ঘরের বাইরে ঘোড়ার আস্তাবলে রেখে দিত, ভালোমতো খাবার গ্রহণ করতে দিত না, সমাজের লোকেরা তাদের সঙ্গে এই সময়ে দেখা-সাক্ষাৎ বন্ধ রাখত।

মক্কার মুশরিকরাও ঋতুবতী নারীদের অবজ্ঞার চোখে দেখত এবং আলাদা ঘরে রাখত। হজরত যুহাইর ইবনে হারব (রা.) বর্ণনা করেন, মক্কা-মদিনায় ঋতুবতী নারীদের সঙ্গে এমন আচরণ দেখে সাহাবিরা কী করবেন, আল্লাহর রাসুল (সা.)-এর কাছে জানতে চাইলে আল্লাহ তায়ালা এ আয়াত অবতীর্ণ করলেন, ‘তারা আপনার কাছে হায়েজ সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করে। আপনি বলে দিন, সেটা কষ্টকর মুহূর্ত। সুতরাং তোমরা হায়েজকালে যৌনমিলন করবে না, পবিত্র না হওয়া পর্যন্ত। তারা যখন পবিত্র হবে তখন তাদের কাছে ঠিক সেভাবে গমন করবে যেভাবে আল্লাহ তোমাদের আদেশ দিয়েছেন’ (সুরা বাকারা : ২২২)।

এরপর রাসুলুল্লাহ (সা.) বললেন, ‘তোমরা সে সময় তাদের সঙ্গে শুধু সহবাস ছাড়া অন্যান্য সব কাজ করবে। এ খবর ইহুদিদের কাছে পৌঁছালে তারা বলল, এ লোকটি সব কাজেই কেবল আমাদের বিরোধিতা করতে চায়’ (তাফসিরে ইবনে কাসির : ১/৬০৯; মুসলিম : ২/৬০১)। ঋতুবতী নারীদের অপয়া-অস্পৃশ্য মনে করা মূলত ইহুদি সমাজের আচরণ।

আল্লাহর রাসুল (সা.) তাঁর স্ত্রীদের সঙ্গে ঋতুবতী অবস্থায় একসঙ্গে খাওয়া-দাওয়া করতেন, একই বিছানায় একই চাদরে ঘুমাতেন, একসঙ্গে গোসল করতেন, উভয়ে উভয়ের মাথা আঁচড়িয়ে দিতেন; বরং এ সময় তিনি স্ত্রীদের ঘরোয়া কাজে বেশি বেশি সহযোগিতা করতেন এবং মানসিক শক্তি জোগাতেন। হজরত আয়েশা (রা.) বলেন, ‘আমি ঋতুবতী অবস্থায় পানি পান করতাম। আমি যেখানে মুখ লাগিয়ে পান করতাম, আল্লাহর রাসুল (সা.) ঠিক সে স্থানে মুখ লাগিয়ে পান করতেন। আমি ঋতুবতী অবস্থায় হাড় খেয়ে রাখতাম, নবীজি (সা.) ঠিক সেখানে মুখ লাগিয়ে চিবাতেন, যেখানে আমি চিবিয়ে রেখেছি’ (মুসলিম : ২/৫৯৯; ইবনে মাজাহ : ১/৬৩৪; মুসনাদে আহমাদ : ১/৩২৭)।

স্ত্রীদের ঋতুস্রাবকালে সহবাস ব্যতীত যাবতীয় জাগতিক কাজকর্মে সহযোগিতা ও পারস্পরিক সুসম্পর্ক বজায় রাখা ইসলামের আদর্শ। নারীদের এ সময় নামাজ-রোজা করতে হয় না। তবে মুখস্থ দোয়া-দরুদ, জিকির-আজকার, তাসবিহ-ইস্তিগফার ইত্যাদি সবই করা যাবে। তবে এ অবস্থায় কুরআন মাজিদ তেলাওয়াত করা যাবে না। এক বর্ণনায় এসেছে, হজরত মামার (রহ.) বলেন, আমি যুহরি (রহ.)-কে জিজ্ঞাসা করলাম, ঋতুবতী নারী ও যার ওপর গোসল ফরজ হয়েছে, সে আল্লাহর জিকির করতে পারবে? তিনি বললেন, হ্যাঁ, পারবে। আমি জিজ্ঞাসা করলাম, কুরআন তেলাওয়াত করতে পারবে? তিনি বললেন, না (মুসান্নাফে আবদুর রাজ্জাক : ১৩০২)।

ইবরাহিম নাখায়ি (রহ.) বলেছেন, ঋতুবতী নারী ও যার ওপর গোসল ফরজ হয়েছে, সে আল্লাহর জিকির করতে পারবে এবং বিসমিল্লাহও পড়তে পারবে। তবে কুরআন পড়তে পারবে না (মুসান্নাফে আবদুর রাজ্জাক : ১৩০৫)। আল্লাহ সবাইকে বোঝার ও আমল করার তওফিক দিন।

সময়ের আলো/আরএস/




https://www.shomoyeralo.com/ad/1698385080Google-News-Update.jpg

সর্বশেষ সংবাদ

সর্বাধিক পঠিত


ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক: সৈয়দ শাহনেওয়াজ করিম, আমিন মোহাম্মদ মিডিয়া কমিউনিকেশন লিমিটেড এর পক্ষে প্রকাশক গাজী আহমেদ উল্লাহ
নাসির ট্রেড সেন্টার, ৮৯, বীর উত্তম সি আর দত্ত সড়ক (সোনারগাঁও রোড), বাংলামোটর, ঢাকা।

ফোন : +৮৮-০২-৯৬৩২৩৬৮-৭৪, ফ্যাক্স : +৮৮-০২-৯৬৩২৩৭৫ | ই-মেইল : shomoyeralo@gmail.com
close