ই-পেপার সোমবার ৭ অক্টোবর ২০২৪
সোমবার ৭ অক্টোবর ২০২৪

কোটা আন্দোলনের সংঘাতে জবি ছাত্রের মৃত্যু
পরিবারের হাল ধরা হলো না তামিমের
প্রকাশ: বুধবার, ৩১ জুলাই, ২০২৪, ১:২২ এএম  (ভিজিট : ২৪৪)
‘ছেলেটার স্বপ্ন ছিল একটা সরকারি চাকরি করবে, প্রতিষ্ঠিত হবে। আমার এ অসচ্ছল পরিবারে মুখে হাসি ফোটাবে। আমার ছেলেটার সেই স্বপ্ন আর পূরণ হলো না। আমার ছেলেটা আর বেঁচে রইল না।’

কান্নাবিজড়িত কণ্ঠে কথাগুলো বলছিলেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) গণিত বিভাগের ২০২২-২৩ শিক্ষাবর্ষের মেধাবী শিক্ষার্থী আহসান হাবিব তামিমের বাবা আবদুল মান্নান। গত ১৯ জুলাই কোটা সংস্কার আন্দোলনকে ঘিরে সংঘটিত সহিংসতায় গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যান তামিম। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রলীগের রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত ছিলেন।

আবদুল মান্নান বলেন, সেদিন শুক্রবার দুপুরে খেয়েদেয়ে আমরা সবাই একসঙ্গে শুলাম। কিছুক্ষণ পর ও উঠে চলে গেল। কেউ ওকে ডেকেছিল না নিজের ইচ্ছায় গিয়েছিল, জানি না। আমার ছেলেটা আর ফিরল না। ফোনে শুনলাম গুলি লেগেছে। হাসপাতালে গিয়ে যখন ওরে দেখতে পেলাম ততক্ষণে তামিম আর দুনিয়াতে নেই।

তামিমের বাবা রাজধানীর একটি কারখানায় মোটর মেকানিকের কাজ করেন। পরিবারের সবাইকে নিয়ে থাকেন ভাড়া বাসায়। দরিদ্র পরিবারে বেড়ে ওঠা তামিম স্বপ্ন দেখতেন পরিবারের জন্য কিছু করার। তিন ভাইয়ের মধ্যে তামিম ছিলেন দ্বিতীয়। বড় ভাইও বাবার সঙ্গেই করেন মেকানিকের কাজ। ছোট থেকেই মেধাবী আর সাহসী ছিলেন তামিম। তাদের গ্রামের বাড়ি নোয়াখালী জেলার চাটখিল উপজেলায়। তামিমের বাবা বলেন, গ্রামে আমাদের নিজের বলতে কোনো বাড়ি নেই। আমরা ঢাকাতেই থাকি। গ্রামে বেশি একটা যাই না। ছোটবেলা থেকেই আমার ছেলেটা বেশ চঞ্চল। অভাব অনটনে মানুষ। ওর আশা ছিল ওর ছোট ভাইটাকেও ভালো জায়গায় পড়াশোনা করাবে। কিন্তু তা আর হলো না। তামিম আর ঘরে ফিরে এলো না। 

বাবা আবদুল মান্নান ছেলে হারানোর শোক চেপে রাখতে পারলেও পারছেন না তামিমের মা। বারবার মূর্ছা যাচ্ছেন তিনি। একইভাবে শোকের মাতম বয়ে চলেছে তামিমের বন্ধু ও শিক্ষকদের মাঝেও। তামিমের বিভাগীয় চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. মিজানুর রহমান বলেন, তামিমের অকাল মৃত্যুতে আমরা শোকাহত। বিভাগের পক্ষ থেকে তামিমের পরিবারের পাশে থাকব আমরা। বেশ কয়েকটি কার্যকরী উদ্যোগ নিয়ে আমরা তার পরিবারকে সাহায্য করব। 

জবি ছাত্রকল্যাণ পরিচালক ড. আল আমিন বলেন, আমরা তামিমের পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করেছি। তাদের সহযোগিতা করার প্রচেষ্টা চলমান। বিভাগ ও প্রক্টরিয়াল বডি তার পরিবারের সঙ্গে সাক্ষাৎ করে সহযোগিতা করবে। সেই সঙ্গে হতাহত শিক্ষার্থীদের তালিকা করা হচ্ছে। তাদের সঙ্গে কথা বলে প্রয়োজনীয় সহযোগিতা করা হচ্ছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. সাদেকা হালিম বলেন, তামিমের পরিবারের সঙ্গে আমরা যোগাযোগ করেছি। কথা বলেছি। গণিত বিভাগ, বিশ্ববিদ্যালয় থেকে তার পরিবারকে সার্বিক সহযোগিতা করা হবে। সেই সঙ্গে আহত শিক্ষার্থীদেরও খোঁজ নিয়ে চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হচ্ছে প্রশাসনের পক্ষ থেকে।

সময়ের আলো/আরএস/




এই ক্যাটেগরির আরো সংবাদ


https://www.shomoyeralo.com/ad/1698385080Google-News-Update.jpg

সর্বশেষ সংবাদ

সর্বাধিক পঠিত


ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক: সৈয়দ শাহনেওয়াজ করিম, আমিন মোহাম্মদ মিডিয়া কমিউনিকেশন লিমিটেড এর পক্ষে প্রকাশক গাজী আহমেদ উল্লাহ
নাসির ট্রেড সেন্টার, ৮৯, বীর উত্তম সি আর দত্ত সড়ক (সোনারগাঁও রোড), বাংলামোটর, ঢাকা।

ফোন : +৮৮-০২-৯৬৩২৩৬৮-৭৪, ফ্যাক্স : +৮৮-০২-৯৬৩২৩৭৫ | ই-মেইল : shomoyeralo@gmail.com
close