ই-পেপার সোমবার ৭ অক্টোবর ২০২৪
সোমবার ৭ অক্টোবর ২০২৪

সনদ বিতরণে অতিরিক্ত টাকা আদায়
স্কুল কর্তৃপক্ষের নীরব চাঁদাবাজিতে অভিভাবকদের ক্ষোভ
প্রকাশ: মঙ্গলবার, ৩০ জুলাই, ২০২৪, ৬:৩১ পিএম  (ভিজিট : ২৫৬)
নওগাঁর রাণীনগরের ত্রিমোহনী উচ্চ বিদ্যালয়ে প্রশংসাপত্র ও সনদপত্র বিতরণের ফাঁদে ফেলে বাধ্যতামূলক ভাবে শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে অতিরিক্ত টাকা আদায় এখনোও বন্ধ হয়নি। প্রতিটি শিক্ষার্থীকে প্রশংসাপত্র নিতে কোন প্রকারের রশিদ ছাড়াই কাউকে ৩০০ টাকা আবার কাউকে ৩৫০ টাকা প্রদান করতে হচ্ছে। এতে করে শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের মাঝে চরম ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। এই বিষয়ে সম্প্রতি দেশের বিভিন্ন জাতীয় ও আঞ্চলিক সংবাদমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশিত হয়।

শুধু ত্রিমোহনী উচ্চ বিদ্যালয়ই নয় উপজেলার অন্যান্য প্রসিদ্ধ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানও সনদপত্র বিতরণের ফাঁদে ফেলে শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে হাজার হাজার অতিরিক্ত টাকা অবৈধ ভাবে আদায় করে আসছে। আবার কোন কোন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান অবৈধ এই নিয়মকে বৈধ করতে স্কুলের রশিদ বইয়ের মাধ্যমে আদায় করছেন অতিরিক্ত অর্থ। বছর শেষে সেই অতিরিক্ত অর্থ যায় বিদ্যালয় ব্যবস্থাপনা কমিটির সদস্য ও শিক্ষকদের পকেটে। শিক্ষার্থীদের জিম্মি করে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের এমন নীরব চাঁদাবাজির বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করে প্রতিটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে একটি সুস্থ পরিবেশ ফিরিয়ে আনার প্রতি সরকারের সুদৃষ্টি কামনা করেছেন উপজেলার সচেতন মহল।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ত্রিমোহনী এলাকার এক অভিভাবক মুঠোফোনে জানান, সন্তানের কলেজে ভর্তি হওয়ার জন্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের প্রশংসাপত্র প্রয়োজন হলে বিষয়টি বিদ্যালয়ের কেরানিকে জানালে তিনি ৩০০ টাকা নিয়ে আসতে বলেন। তাই বাধ্য হয়েই ৩০০ টাকা দিয়ে প্রশংসাপত্র সংগ্রহ করেছি। আবার সনদপত্র নিতে গেলে কত টাকা দিতে হবে তা এখনোও অজানা। জোরপূর্বক নয় শিক্ষকদের সম্মান রক্ষার্থে শিক্ষার্থী কিংবা অভিভাবকরা যদি ইচ্ছে করে কোন টাকা দেয় সেটাই স্কুল কর্তৃপক্ষকে সাদরে গ্রহণ করা উচিত।  

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক উপজেলার একাধিক বিদ্যাপীঠের প্রধান শিক্ষক মুঠোফোনে জানান, আমরাও সনদপত্র নেওয়ার সময় স্কুলে টাকা দিয়েছি। দিন যাচ্ছে বিদ্যালয়ের আয় কমে যাচ্ছে আর প্রতিদিনই বিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিষয়ে খরচ বৃদ্ধি পাচ্ছে। বিদ্যালয়ের সেই সকল অভ্যন্তরীণ খরচ ও বিদ্যালয়ের উন্নয়নকল্পের বিভিন্ন কাজের অর্থের যোগান দিতেই মূলত বিদায় বেলায় সনদপত্র বিতরণের সময় শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে সামান্য পরিমাণ অর্থ আদায় করা হয়। তবে রশিদের মাধ্যমে সেই অর্থ আদায় করা হলে তা সরাসরি বিদ্যালয়ের তহবিলে জমা হয়। ব্যক্তিগত ভাবে সেই অর্থ খরচ করার কোন উপায় থাকে না।

ত্রিমোহনী উচ্চ বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক মো. শহিদুল ইসলাম মুঠোফোনে বলেন, আমি দায়িত্ব গ্রহণের পর থেকে সনদপত্র নিতে শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে যে অর্থ আদায় করা হতো তা বন্ধ করেছি। প্রথমবার সংবাদ প্রকাশের পর আমি বিদ্যালয়ের কেরানিকে কোন প্রকারের টাকা ছাড়াই প্রশংসাপত্র কিংবা সনদপত্র বিতরণের নির্দেশনা প্রদান করেছি। নিষেধের পরও কেন পুনরায় টাকা নিয়ে প্রশংসাপত্র বিতরণ করা হলো আমি বিষয়টি খতিয়ে দেখবো।

তিনি আরও বলেন, উপজেলার অন্যান্য বিদ্যালয়ের সঙ্গে পরামর্শ করেই প্রশংসাপত্র বিতরণের সময় কিছু টাকা নেয়া হচ্ছিলো। শিক্ষার্থীদের ফাঁদে ফেলে অতিরিক্ত অর্থ আদায় কতটুকু যৌক্তিক সেই বিষয়ে তিনি বলেন, এই নিয়ম অনেক আগে থেকেই চলে আসছিলো। কিন্তু পরবর্তীতে স্যারদের নিষেধের পর আর কোন টাকা আদায় করা হচ্ছে না।  

উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. শফিকুল ইসলাম মুঠোফোনে বলেন, একজন শিক্ষার্থীর কাছ থেকে সকল দেনা-পাওনা আদায় করেই তাকে পরীক্ষার জন্য প্রবেশপত্র ও রেজিস্ট্রেশন কার্ড প্রদান করা হয়। এই বিষয়ে প্রথম সংবাদ প্রকাশের পর বিষয়টি ওই বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকসহ উপজেলার সকল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের প্রধানদের টাকা না নিতে কঠোর ভাবে নির্দেশনা প্রদান করেছি। এরপরও যদি কোন প্রতিষ্ঠান টাকা আদায় করে থাকে তাহলে তদন্ত সাপেক্ষে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

সময়ের আলো/আরআই


আরও সংবাদ   বিষয়:  সনদ বিতরণে টাকা আদায়   নওগাঁ-রাজশাহী  




https://www.shomoyeralo.com/ad/1698385080Google-News-Update.jpg

সর্বশেষ সংবাদ

সর্বাধিক পঠিত


ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক: সৈয়দ শাহনেওয়াজ করিম, আমিন মোহাম্মদ মিডিয়া কমিউনিকেশন লিমিটেড এর পক্ষে প্রকাশক গাজী আহমেদ উল্লাহ
নাসির ট্রেড সেন্টার, ৮৯, বীর উত্তম সি আর দত্ত সড়ক (সোনারগাঁও রোড), বাংলামোটর, ঢাকা।

ফোন : +৮৮-০২-৯৬৩২৩৬৮-৭৪, ফ্যাক্স : +৮৮-০২-৯৬৩২৩৭৫ | ই-মেইল : shomoyeralo@gmail.com
close