ই-পেপার সোমবার ৭ অক্টোবর ২০২৪
সোমবার ৭ অক্টোবর ২০২৪

বারান্দায় কাপড় আনতে গিয়ে লুটিয়ে পড়ে নাইমা
প্রকাশ: সোমবার, ২৯ জুলাই, ২০২৪, ২:১৮ এএম  (ভিজিট : ৩২৮)
কী অপরাধ ছিল আমার মেয়ের? তাকে কেন নিজ বাড়ির বারান্দায় গুলিতে মরতে হলো? আমার মেয়ের আর ডাক্তার হওয়া হলো না। আমার মেয়ে বলেছিল, ‘বাবা তুমি ডাক্তার, আমিও ডাক্তার হয়ে মানুষের সেবা করব।’ কান্নাজড়িত কণ্ঠে এসব কথা বলেছিলেন গত ১৯ জুলাই কোটা সংস্কার আন্দোলন চলাকালে রাজধানীর উত্তরায় চারতলার বারান্দায় গুলিতে নিহত নাইমা আক্তার সুলতানার বাবা গোলাম মোস্তফা।

নিহত নাইমার বাবা গোলাম মোস্তফা বলেন, গত শুক্রবার বিকেলের দিকে উত্তরার বাসার কাছেই গোলাগুলি হচ্ছিল। নাইমা ওই সময় বারান্দায় কাপড় আনতে যায়। হঠাৎ একটি গুলি এসে তার মাথায় লাগে। সঙ্গে সঙ্গে সে বারান্দার মেঝেতে লুটিয়ে পড়ে। তখন আমার মেয়ের নাক-মুখ থেকে রক্ত বের হতে থাকে। বাসা থেকে তাকে উত্তরার একটি হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। আমরা কার কাছে বিচার চাইব? কার কাছে অভিযোগ করব? আমাদের খবর কেউ নেয়নি। আমি আমার মেয়ে হত্যার বিচার চাই।

গত ১৯ জুলাই উত্তরায় শিক্ষার্থীদের কোটা সংস্কার আন্দোলন চলছিল। সেখানে পুলিশ-শিক্ষার্থীদের মধ্যে ধওয়া-পাল্টাধাওয়া ও সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। সড়কের পাশেই একটি ভবনের চারতলায় পরিবারের সঙ্গে থাকত উত্তরা মাইলস্টোন স্কুলের দশম শ্রেণির ছাত্রী নাইমা আক্তার সুলতানা। কে জানত বারান্দায় শুকনো কাপড় আনতে গিয়ে মাথায় গুলি লাগবে নাইমার! গুলিবিদ্ধ হয়ে বারান্দাতেই লুটিয়ে পড়ে সে। পরে তার মা ও পরিবারের অন্য সদস্যরা হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক নাইমাকে মৃত ঘোষণা করেন। পরদিন ২০ জুলাই নাইমাকে তার গ্রামের বাড়িতে দাফন করা হয়। নাইমা সুলতানার (১৫) গ্রামের বাড়ি চাঁদপুর জেলার মতলব উত্তর উপজেলার আমুয়াকান্দা গ্রামে। তার বাবা গোলাম মোস্তফা দেওয়ান একজন হোমিও চিকিৎসক। মা আইনুন নাহার বেগম ও ভাইয়ের সঙ্গে ঢাকায় বসবাস করতো নাইমা। দুই বোন ও এক ভাইয়ের মধ্যে নাইমা মেজো। তার বড় বোন তাসফিয়া সুলতানা ঢাকার মাইলস্টোন কলেজে একাদশ শ্রেণিতে পড়ে। ছোট ভাই আবদুর রহমান ঢাকার উত্তরাতেই একটি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পড়ে। 

নাইমার পরনের রক্তভেজা পোশাকই যেন এখন তার স্বজনদের একমাত্র সম্বল। প্রতিনিয়ত তার এই রক্তমাখা পোশাক ও অন্যান্য জিনিসপত্র নিয়ে কান্নায় মূর্ছা যাচ্ছেন আর আহাজারি করছেন পরিবারের সদস্যরা। আর এ দৃশ্য দেখে প্রতিবেশীরাও কান্নায় ভেঙে পড়ছেন। নাইমার পরিবারের সদস্যদের একটাই প্রশ্ন-কী অপরাধে কারা এভাবে নাইমাকে গুলি করে মারল? এই হত্যার বিচার চান তারা।

সময়ের আলো/আরএস/




https://www.shomoyeralo.com/ad/1698385080Google-News-Update.jpg

সর্বশেষ সংবাদ

সর্বাধিক পঠিত


ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক: সৈয়দ শাহনেওয়াজ করিম, আমিন মোহাম্মদ মিডিয়া কমিউনিকেশন লিমিটেড এর পক্ষে প্রকাশক গাজী আহমেদ উল্লাহ
নাসির ট্রেড সেন্টার, ৮৯, বীর উত্তম সি আর দত্ত সড়ক (সোনারগাঁও রোড), বাংলামোটর, ঢাকা।

ফোন : +৮৮-০২-৯৬৩২৩৬৮-৭৪, ফ্যাক্স : +৮৮-০২-৯৬৩২৩৭৫ | ই-মেইল : shomoyeralo@gmail.com
close