ই-পেপার রোববার ৬ অক্টোবর ২০২৪
রোববার ৬ অক্টোবর ২০২৪

রিং চাঁই জালে মাছের সর্বনাশ
প্রকাশ: রবিবার, ২৮ জুলাই, ২০২৪, ১:২৩ এএম  (ভিজিট : ২৫৪)
চাঁদপুরে চলতি বর্ষা মৌসুমে নদী ও চরাঞ্চল এলাকায় নিষিদ্ধ রিং চাঁই জালে অবাধে ধরা হচ্ছে দেশীয় প্রজাতির মাছ। এসব জালে ধরা পড়ছে সব ধরনের ছোট মাছ। এতে দেশীয় মাছের উৎপাদন যেমন কমছে এবং একই সঙ্গে রেণুপোনা ধরা পড়ায় বিভিন্ন প্রজাতির মাছ বিলুপ্তির দিকে যাচ্ছে। মৎস্য অধিদফতর অভিযান পরিচালনা করলেও কমছে না এই জালের ব্যবহার।

জেলার পদ্মা-মেঘনা নদী ছাড়াও মেঘনা, ধনাগোদা ও ডাকাতিয়া নদী বিভিন্ন উপজেলায় বহমান। যে কারণে নদীসংলগ্ন খাল ও বিলে বর্ষা মৌসুমে পানি বৃদ্ধি পায়। সেচ প্রকল্পের বাইরে ফসলি জমিতেও উঠে যায় বর্ষার পানি। এই সুযোগে এখন একশ্রেণির জেলে এই রিং চাঁই জাল ও নিষিদ্ধ কারেন্টজাল দিয়ে দেশীয় প্রজাতির মাছ ও পোনা ধ্বংস করছে।

জানা গেছে, পুঁটি, শিং, পাবদা, গুলশা, কাজলি, বাতাশি, টেংরা, টাকি, গুতুম, চাপিলা, বাইম, খলিশা, কৈ, বেলে, ভেদা, চান্দা, ছোট চিংড়ি, মলা ও ঢেলা মাছ এসব রিং চাঁই জালে বেশি ধরা পড়ে। বর্ষা মৌসুমে পানি এলেই এ জালের ফাঁদ বেশি পাতা হয়।

চাঁদপুর সদর উপজেলা মৎস্য অধিদফতর থেকে জানা গেছে, চলতি মাসে সদর উপজেলার ডাকাতিয়া নদীর বিভিন্ন অংশে কমপক্ষে ২০ লাখ টাকা মূল্যমানের রিং চাঁই ও কারেন্ট জাল জব্দ করা হয়েছে। উপজেলা মৎস্য বিভাগ ঠিক এই সময়টাতে নিষিদ্ধ জালের বিরুদ্ধে অভিযান চালায়। এ ছাড়াও জেলার কচুয়া, মতলব উত্তর উপজেলায় চলতি মাসে একাধিক অভিযানে লাখ লাখ টাকার রিং চাঁই জাল জব্দ এবং আগুনে পুড়িয়ে বিনষ্ট করা হয়।

সদর উপজেলার রামপুর ইউনিয়নের জেলে সিরোপ দাস বলেন, যারা প্রকৃত জেলে তারা কখনো নিষিদ্ধ জাল ব্যবহার করে না। কিছু লোভী লোক আছে তারা নিষিদ্ধ রিং চাঁই জাল ব্যবহার করে। যে কারণে আমাদের এলাকার নদী ও খালে এখন কয়েক ধরনের পুঁটি, মেনি, টেংরা, খলিশা, মলা ও ঢেলাসহ অনেক ছোট মাছের দেখা মিলে না।

চাঁদপুর জেলা মৎস্যজীবী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক তছলিম বেপারি বলেন, সরকার যেসব জাল নিষিদ্ধ করেছে তা কোনো সময়ই ব্যবহার করা যাবে না। সব জেলেদেরই আইন মানতে হবে। আমরা চরাঞ্চল ও স্থলভাগের জেলেদের সঙ্গে দেখা হলেই এসব রিং চাঁই জাল ব্যবহারের জন্য নিষেধ করি। দেশীয় প্রজাতির মাছ রক্ষায় শুধু মৎস্য বিভাগই নয় দেশের প্রত্যেক নাগরিক দায়িত্ব পালন করতে পারেন।

সদর উপজেলার হানারচর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ছাত্তার রাঢ়ী বলেন, ছোট প্রজাতির মাছ রক্ষায় উপজেলার মাসিক সভায় আলোচনা হয়েছে। এই বিষয়ে জনপ্রতিনিধিদেরও দায়িত্ব রয়েছে। বেশিরভাগ চরাঞ্চলে এই জাল ব্যবহার হয়। জনপ্রতিনিধি হিসেবে আমাদের এই বিষয়ে সতর্ক থাকার জন্য বলা হয়েছে।

চাঁদপুর সদর উপজেলা সহকারী মৎস্য কর্মকর্তা মো. মিজানুর রহমান বলেন, নিষিদ্ধ রিং চাঁই বা চায়না দুয়ারী জাল দেশীয় প্রজাতির মাছের বংশ বিস্তারে বাধাগ্রস্ত করছে। কারণ বর্ষা মৌসুমে যখন এসব মাছ ডিম ছাড়ার জন্য নতুন পানিতে আসে, তখনই এসব জালে ধরা পড়ে। অসাধু জেলেরা এই সময়টাকে কাজে লাগায়। এসব কারণে দেশীয় অনেক প্রজাতির মাছ বিলুপ্তির দিকে যাচ্ছে। দেশের জীববৈচিত্র্য রক্ষায় সব শ্রেণি-পেশার লোক এগিয়ে আসা দরকার।

সদর উপজেলার জ্যেষ্ঠ মৎস্য কর্মকর্তা মো. তানজিমুল ইসলাম জানান, নিষিদ্ধ জাল সব সময়ের জন্যই নিষিদ্ধ। আমরা সম্প্রতি বহু রিং চাঁই জাল এবং কারেন্টজাল জব্দ করেছি। আমাদের অভিযান অব্যাহত থাকবে। এসব জাল ব্যবহার হচ্ছে আমাদের তথ্য দিলে অবশ্যই অভিযান পরিচালনা করব।


সময়ের আলো/আরএস/ 




https://www.shomoyeralo.com/ad/1698385080Google-News-Update.jpg

সর্বশেষ সংবাদ

সর্বাধিক পঠিত


ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক: সৈয়দ শাহনেওয়াজ করিম, আমিন মোহাম্মদ মিডিয়া কমিউনিকেশন লিমিটেড এর পক্ষে প্রকাশক গাজী আহমেদ উল্লাহ
নাসির ট্রেড সেন্টার, ৮৯, বীর উত্তম সি আর দত্ত সড়ক (সোনারগাঁও রোড), বাংলামোটর, ঢাকা।

ফোন : +৮৮-০২-৯৬৩২৩৬৮-৭৪, ফ্যাক্স : +৮৮-০২-৯৬৩২৩৭৫ | ই-মেইল : shomoyeralo@gmail.com
close