ই-পেপার সোমবার ৭ অক্টোবর ২০২৪
সোমবার ৭ অক্টোবর ২০২৪

বিশ্বখ্যাত দোলেশ্বর হানাফিয়া মসজিদ
প্রকাশ: শুক্রবার, ২৬ জুলাই, ২০২৪, ৫:৪৮ এএম  (ভিজিট : ৩১৬)
বিশ্বজুড়ে খ্যাতি কুড়িয়েছে বাংলাদেশের কেরানীগঞ্জের দোলেশ্বর হানাফিয়া জামে মসজিদ। মসজিদটির বয়স দেড়শ বছরের বেশি। ঢাকার দক্ষিণ কেরানীগঞ্জে মসজিদটি প্রথম নির্মিত হয় ১৮৬৮ সালে। তারপর ২০১৮ সালে এটি সংস্কার ও আধুনিকায়ন করা হয়। ২০২১ সালের ১ ডিসেম্বর ‘ইউনেস্কো এশিয়া-প্যাসিফিক অ্যাওয়ার্ডস’ জিতে নেয় মসজিদটি। ইউনেস্কো এশিয়া-প্যাসিফিক অ্যাওয়ার্ডস ফর কালচারাল হেরিটেজ কনজারভেশনে ছয়টি দেশের নয়টি স্থাপনাকে বিভিন্ন ক্যাটাগরিতে পুরস্কারে ভূষিত করা হয়। এর মধ্যে ‘দ্য অ্যাওয়ার্ড অব মেরিট’ ক্যাটাগরিতে স্বীকৃতি পায় এই মসজিদ।

ঐতিহাসিক স্থাপনাটির অবস্থান কেরানীগঞ্জ উপজেলার দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানার কোন্ডা ইউনিয়নের দোলেশ্বর গ্রামে। দেড়শ বছরের মসজিদটির পুরোনো আদল ধরে রেখে নবাবি আমলের ঐতিহ্য বজায় রেখে সুনিপুণ হাতে সংস্কারকাজ করেছেন স্থপতি সাঈদ মোস্তাক আহমেদ। মসজিদটি সংস্কার ও সংরক্ষণের জন্য স্থপতি সাঈদ মোস্তাক আহমেদ লাভ করেন ‘দ্য অ্যাওয়ার্ড অব মেরিট’ পুরস্কার।

জানা যায়, ১৮৬৮ সালে মসজিদটি নির্মাণের উদ্যোগ গ্রহণ করেন তৎকালীন দারোগা আমিনউদ্দিন আহাম্মদ। জনশ্রুতি অনুযায়ী দারোগা আমিনউদ্দিন আহাম্মদ মসজিদটির নির্মাণে প্রথম উদ্যোক্তা হওয়ায় এটি ‘দারোগা মসজিদ’ নামে পরিচিত ছিল। তার ছেলে মইজউদ্দিন আহাম্মদ ছিলেন মসজিদের প্রথম মোতাওয়াল্লী। মইজদ্দিন আহাম্মদ, তমিজউদ্দিন আহাম্মদ, করিমউদ্দিন আহাম্মদ, খিদির বক্স মিয়া ও আবদুর গফুর আহাম্মদ মসজিদটির জন্য জমি ওয়াকফ করেন।

মসজিদের সামনের সাইনবোর্ডের তথ্য অনুযায়ী, সহোদর খিদির বক্স ও কাদের বক্স এবং মইজউদ্দিন আহাম্মদের পরিবার বংশপরম্পরায় মসজিদটির নির্মাণ ও সংস্কারকাজে জড়িত ছিলেন। কাদের বক্সের নাতি ও হাফেজ মো. মুছার ছেলে তৎকালীন জাতীয় পরিষদের সদস্য হামিদুর রহমান মসজিদটির বর্ধিত অংশ ১৯৬৮ সালে নির্মাণ করেন। এরপর একাধিকবার মসজিদটি সম্প্রসারণ করা হয়। কালের আবর্তে এই মসজিদের অবকাঠামো বিলীন হওয়ার পর্যায়ে ছিল। মসজিদটিকে সংস্কার করে পুরোনো রূপ দেওয়ার উদ্যোগ নেন মসজিদটির প্রতিষ্ঠার সুযোগ্য উত্তরসূরি স্থানীয় সংসদ সদস্য এবং বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ। তার উদ্যোগে স্থপতি আবু সাঈদ মোস্তাক আহমেদ মসজিদের অবকাঠামো ঠিক রেখে পুনঃসংস্কারের কাজ শুরু করেন। ২০১৮ সালে সংস্কারকাজ শেষ হয়। পুরোনো মসজিদের পাশেই নির্মাণ করা হয় নতুন আরেকটি মসজিদ। পুরোনো মসজিদটি এখন গ্রন্থাগার ও মক্তব হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে। 

ঢাকা-৩ আসনের সংসদ সদস্য এবং বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বলেন, এই মসজিদ প্রথম প্রতিষ্ঠিত হয় আমাদের পূর্বপুরুষদের হাত ধরে। চার প্রজন্ম ধরে এই মসজিদ আমরা রক্ষণাবেক্ষণ করে আসছি। নতুন করে যখন মসজিদটি নির্মাণ করা হয় তখন পুরোনো মসজিদের আদল ঠিক রেখে পুনঃসংস্কার করাটা ছিল আমাদের জন্য বড় চ্যালেঞ্জ। আমার ব্যক্তিগত উদ্যোগ ও নিজস্ব অর্থায়নে মসজিদটি পুনঃসংস্কার করা হয়েছে। নসরুল হামিদ আরও বলেন, ইউনেস্কোর পুরস্কারে ভূষিত হয়েছে দোলেশ্বর হানাফিয়া জামে মসজিদ। এটি দেশের জন্য যেমন বিরাট সম্মানের, তেমনি আমার জন্য আনন্দের।

দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে এমনকি বিদেশ থেকেও পর্যটকরা এই মসজিদটি দেখতে আসেন। আধুনিক স্থাপনার এই মসজিদটি পর্যটকদের মনোযোগ কাড়ছে। এ কারণে আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে অনন্য এই স্থাপনা নিয়ে একাধিকবার ফিচার হয়েছে।

সময়ের আলো/আরএস/ 




https://www.shomoyeralo.com/ad/1698385080Google-News-Update.jpg

সর্বশেষ সংবাদ

সর্বাধিক পঠিত


ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক: সৈয়দ শাহনেওয়াজ করিম, আমিন মোহাম্মদ মিডিয়া কমিউনিকেশন লিমিটেড এর পক্ষে প্রকাশক গাজী আহমেদ উল্লাহ
নাসির ট্রেড সেন্টার, ৮৯, বীর উত্তম সি আর দত্ত সড়ক (সোনারগাঁও রোড), বাংলামোটর, ঢাকা।

ফোন : +৮৮-০২-৯৬৩২৩৬৮-৭৪, ফ্যাক্স : +৮৮-০২-৯৬৩২৩৭৫ | ই-মেইল : shomoyeralo@gmail.com
close