সারাদেশে কোটা আন্দোলনে শিক্ষার্থীদের উপর হামলা এবং নিহতের প্রতিবাদে রাষ্ট্রকে ধিক্কার জানিয়ে গায়েবানা জানাযা করেছে গোপালগঞ্জের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (বশেমুরবিপ্রবি) শিক্ষার্থীরা। এরপর আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা হল ত্যাগ প্রত্যাহারের দাবিতে প্রতিবাদ মিছিল করেন এবং ভিসি বাংলো ঘেরাও করেন।
বুধবার (১৭ জুলাই) বেলা ৪টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের মুক্তমঞ্চে গায়েবানা জানাযা অনুষ্ঠিত হয়। নিহতদের আত্মার মাগফিরাত এবং তাদের পরিবারের সহ্যশক্তি দান করার জন্য দোয়া করা হয়।
জানাযায় উপস্থিত এক শিক্ষার্থী বলেন, আজকে আমার ভাইরা নিজের অধিকার আদায়ের আন্দোলনে এসে শহিদ হয়েছেন। যেহেতু আমাদের ন্যায্য দাবির এই আন্দোলনে তারা হামলা চালিয়েছে, কয়েকজন নিহত ও অনেকে হতাহত ও গুলিবিদ্ধ হয়েছে তাই আমরা আমাদের দাবি না আদায় হওয়া পর্যন্ত এই আন্দোলন চালিয়ে যাবো। আমার ভাই-বোনদের রক্ত আমরা বৃথা যেতে দিবো না।
আন্দোলনরত আরেক শিক্ষার্থীরা বলেন, ছাত্রদের যদি ক্যাম্পাস ছাড়তে হয় তাহলে আগে শিক্ষকদের ক্যাম্পাস ছাড়তে হবে। প্রশাসনের এই সিদ্ধান্তকে আমরা প্রত্যাখ্যানের দাবি জানাচ্ছি। জোর করে শিক্ষার্থীদের হল থেকে বের করা যাবে না।
এরপর বিক্ষোভ মিছিলটি মুক্তমঞ্চ থেকে শুরু হয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের মূল ফটকে যায়। সেখানে থেকে আবার প্রশাসনিক ভবনের সামনে অবস্থান নেয় শিক্ষার্থীরা। পরবর্তীতে উপাচার্য বাসভবনের সামনে গিয়ে উপাচার্যের বাসভবনের সামনের সড়ক অবরোধ করে সড়কে অবস্থান করে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা।
এই সময় আন্দোলনকারীরা- হল ছাড়ার নোটিশ কেন প্রশাসন জবাব চাই, ধিক্কার ধিক্কার প্রশাসন ধিক্কার, লজ্জা লজ্জা প্রশাসন লজ্জা, লাঠি দিয়ে আন্দোলন থামানো যাবে না, হল ত্যাগ চলবে না চলবে না , রংপুরের রক্ত বৃথা যেতে দিব না, ধিক্কার ধিক্কার ভিসি তোমার ধিক্কার, আমার ভাইরের রক্ত বৃথা যেতে দিব না, বাধা আসবে যেখানে লড়াই হবে এক সাথে ইত্যাদি স্লোগান দিতে থাকেন।
ভিসি একিউএম মাহবুব আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্য বলেন, আমি এমন কোন কাজ করব না যেন শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা বিঘ্নিত হয়। আমি তোমাদের ওপর বল প্রয়োগ করব না। আমি চাইনা বাইরের পুলিশ ক্যাম্পাসের ভিতরে আসুক। নোটিশ প্রত্যাহারের বিষয়ে তিনি বলেন, নোটিশ প্রত্যাহার করতে হলে রিজেন্ট বোর্ড সদস্যদের সঙ্গে বসতে হবে। তবে অন্য বিশ্ববিদ্যালয় নোটিশ প্রত্যাহার করলে আমরাও হল ছাড়ার নোটিশ প্রত্যাহার করব। এসময় শিক্ষার্থীরা ভিসিকে ৬ ঘণ্টার আল্টিমেটাম দিয়ে ভিসি বাসভবন ত্যাগ করেন।
উল্লেখ্য, বুধবার (১৭ জুলাই) বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার দলিলুর রহমান স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে ছাত্রদের ১৭ জুলাই বিকাল ৫টার মধ্যে এবং ছাত্রীদের (১৮ জুলাই) সকাল ১০টার মধ্যে হল ত্যাগের নির্দেশ দেওয়া হয়।
সময়ের আলো/জিকে