ই-পেপার সোমবার ৭ অক্টোবর ২০২৪
সোমবার ৭ অক্টোবর ২০২৪

আশুরায় নফল রোজার গুরুত্ব
প্রকাশ: মঙ্গলবার, ১৬ জুলাই, ২০২৪, ৩:০৮ এএম  (ভিজিট : ২৯৮)
হিজরি বর্ষের প্রথম মাস মহররম। এ মাস আল্লাহর কাছে সম্মানিত এবং মর্যাদাপূর্ণ। আল্লাহ তায়ালা বলেন, ‘প্রকৃতপক্ষে আল্লাহর কাছে আল্লাহর কিতাবে মাসের সংখ্যা বারোটি। সেই দিন থেকে, যেদিন আকাশমণ্ডলী ও পৃথিবী সৃষ্টি করেছিলেন। এর মধ্যে চারটি মাস মর্যাদাপূর্ণ’ (সুরা তাওবা, আয়াত : ৩৬)। পবিত্র কুরআনে উল্লিখিত চারটি সম্মানিত মাসকে রাসুল (সা.) বিদায় হজের ভাষণে চিহ্নিত করে দিয়েছেন। তিনি বলেছেন, ‘চারটি মাস সম্মানিত-জিলকদ, জিলহজ ও মহররম ধারাবাহিক আর অপরটি হলো রজব।’ (বুখারি, হাদিস : ৩১৯৭)

মহররম মাসে নফল রোজা রাখার সওয়াব অন্য সব নফল রোজার সওয়াবের চেয়ে বেশি। হজরত আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘রমজানের রোজার পর সর্বোত্তম রোজা হচ্ছে আল্লাহর মাস মহররমের রোজা’ (মুসলিম : ১৯৮৯)। বিশেষভাবে আশুরা তথা মহররমের ১০ তারিখ অত্যন্ত তাৎপর্য এবং মাহাত্ম্যপূর্ণ দিন। এদিনে রোজা রাখার বিশেষ ফজিলত রয়েছে। রাসুলুল্লাহ (সা.) নিজে এ দিনে রোজা রেখেছেন এবং স্বীয় উম্মতকে রোজা রাখার প্রতি উৎসাহ দিয়েছেন। হজরত ইবনে আব্বাস (রা.) বলেন, ‘আমি রাসুলুল্লাহ (সা.)-কে রমজান এবং আশুরায় যেমন গুরুত্বের সঙ্গে রোজা রাখতে দেখেছি অন্য সময় তা দেখিনি।’ (বুখারি : ২০০৬)

হজরত আলী (রা.)-কে এক ব্যক্তি প্রশ্ন করেছিল, রমজানের পর আর কোনো মাস আছে, যাতে আপনি আমাকে রোজা রাখার আদেশ করেন? তিনি বললেন, এ প্রশ্ন রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর কাছে জনৈক সাহাবি করেছিলেন, তখন আমি তাঁর খেদমতে উপস্থিত ছিলাম। উত্তরে রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছিলেন, রমজানের পর তুমি যদি রোজা রাখতে চাও, তবে মহররম মাসে রাখো। কারণ এটি আল্লাহর মাস। এ মাসে এমন একটি দিন আছে, যে দিনে আল্লাহ তায়ালা একটি জাতির তওবা কবুল করেছিলেন এবং ভবিষ্যতেও অপরাপর জাতির তওবা কবুল করবেন।’ (তিরমিজি : ৭৪১)

মহররমের ১০ তারিখে রোজা রাখার পাশাপাশি এর আগে বা পরে একটি রোজা অতিরিক্ত রাখতে বলা হয়েছে। হজরত ইবনে আব্বাস (রা.) বলেন, রাসুলুল্লাহ (সা.) মদিনায় এসে দেখেন, ইহুদিরা আশুরার দিনে রোজা পালন করে। তিনি তাদের বলেন, এ দিনটির এমন কী মাহাত্ম্য যে তোমরা রোজা পালন করো? তারা বলে, এ দিনে আল্লাহ মুসা (আ.) ও তাঁর জাতিকে মুক্তি দেন এবং ফেরাউন ও তার জাতিকে নিমজ্জিত করেন। এ জন্য মুসা (আ.) কৃতজ্ঞতাস্বরূপ এদিন রোজা পালন করেছিলেন। তাই আমরা এদিন রোজা পালন করি। তখন রাসুলুল্লাহ (সা.) বললেন, মুসা (আ.)-এর বিষয়ে আমাদের অধিকার বেশি। এরপর তিনি এদিন রোজা পালন করেন এবং রোজা পালন করতে নির্দেশ প্রদান করেন। রাসুলুল্লাহ (সা.) বললেন, ইনশাআল্লাহ আগামী বছর আমরা মহররমের নবম তারিখেও রোজা রাখব। (মুসলিম : ১৯১৮)

এ হাদিস থেকে বোঝা যায়, নবীজি (সা.) আমাদের বিজাতীয় সাদৃশ্য পরিহার করার শিক্ষা দিয়েছেন। তাই আমাদের আশুরার রোজা একটির পরিবর্তে দুটি রাখতে হবে। দ্বিতীয় রোজাটি ১১ মহররমও রাখা যাবে। তা ছাড়া এই হাদিস থেকে শিক্ষা নিয়ে জীবনের সব ক্ষেত্রে অমুসলিমদের সাদৃশ্য অবলম্বন পরিহার করতে হবে। আল্লাহ তায়ালা আমাদের মহররম মাসে বেশি বেশি রোজা রাখার এবং আশুরার তাৎপর্য অনুধাবন করে তদনুযায়ী আমল ও সব ধরনের গুনাহ বর্জন করার তওফিক দান করেন।

শিক্ষক, মাদরাসাতুল হেরা, মিরপুর-২, ঢাকা

সময়ের আলো/আরএস/ 




https://www.shomoyeralo.com/ad/1698385080Google-News-Update.jpg

সর্বশেষ সংবাদ

সর্বাধিক পঠিত


ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক: সৈয়দ শাহনেওয়াজ করিম, আমিন মোহাম্মদ মিডিয়া কমিউনিকেশন লিমিটেড এর পক্ষে প্রকাশক গাজী আহমেদ উল্লাহ
নাসির ট্রেড সেন্টার, ৮৯, বীর উত্তম সি আর দত্ত সড়ক (সোনারগাঁও রোড), বাংলামোটর, ঢাকা।

ফোন : +৮৮-০২-৯৬৩২৩৬৮-৭৪, ফ্যাক্স : +৮৮-০২-৯৬৩২৩৭৫ | ই-মেইল : shomoyeralo@gmail.com
close