ই-পেপার সোমবার ৭ অক্টোবর ২০২৪
সোমবার ৭ অক্টোবর ২০২৪

নাজুক কালীগঞ্জের প্রাথমিক শিক্ষাব্যবস্থা শিক্ষক পদায়নে অসম বণ্টন
প্রকাশ: সোমবার, ১৫ জুলাই, ২০২৪, ৬:৪৩ এএম  (ভিজিট : ২৪০)
গাজীপুরের কালীগঞ্জ উপজেলায় সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোতে অব্যবস্থাপনা ও শিক্ষক পদায়নে অসম বণ্টনের কারণে শিক্ষাব্যবস্থা নাজুক হয়ে পড়েছে। স্থানীয়রা বলছেন, শিক্ষক পদায়নে কর্তৃপক্ষের অবহেলার কারণে এ বৈষম্য তৈরি হয়েছে। উপজেলার প্রাথমিক শিক্ষাব্যবস্থা মুখ থুবড়ে পড়ার আশঙ্কা করছেন তারা।

প্রাথমিক শিক্ষায় অব্যবস্থাপনা ও শিক্ষক পদায়নে অসম বণ্টনের ব্যাপারে জানার জন্য মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) এসএম ইমাম রাজী টুলু বলেন, বিষয়টি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্র্ণ। প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের লক্ষ্যে আমি জেলা প্রশাসনের মাধ্যমে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়কে বিষয়টি অবহিত করব।

এ বিষয়ে জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. মাসুদ ভূইয়া বলেন, শিক্ষায় অব্যবস্থাপনা ও শিক্ষকদের অসম বণ্টনের বিষয়টি নিয়ে সংশ্লিষ্ট উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তার সঙ্গে আলাপ করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করব।

সংশ্লিষ্ট বিষয়ে মুঠোফোনে জানতে চাইলে উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা নুরুন্নাহার জেলা অফিসে মিটিংয়ে ব্যস্ত থাকার কথা বলে ফোনের সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেন।

সরেজমিন খোঁজ নিয়ে জানা যায়, পৌরসভা ছাড়াও তুমলিয়া, জামালপুর ও মোক্তারপুর ইউনিয়নের বেশ কয়েকটি বিদ্যালয়ে শিক্ষক পদায়নের বিষয়টি বৈষম্যপূর্ণ অবস্থায় রয়েছে। অভিযোগ রয়েছে, প্রয়োজনের অতিরিক্ত শিক্ষক, ছাত্রছাত্রী উপস্থিতির সংখ্যা তুলনামূলক কম, কর্তৃপক্ষের তদারকির ঘাটতি, সৃষ্ট পদের বিপরীতে অতিরিক্ত একাধিক শিক্ষক পেশনে কর্মরত থাকায় এই সমস্যার সৃষ্টি হয়েছে।

তুমলিয়া ইউনিয়নের রাঙামাটিয়া, তুমলিয়া বালক, তুমলিয়া বালিকা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীর তুলনায় শিক্ষক বেশি। তবে ছাত্রসংখ্যা খুবই কম এমন তালিকায় তুমলিয়া, শিমুলিয়া, তুমলিয়া কমিউনিটি, ঈশ্বরপুর হাজি খোদে নেওয়াজ, চৈতারপাড়া, জামালপুর নগরপাড়া ও পশ্চিম খলাপাড়াসহ বেশ কয়েকটি প্রাথমিক বিদ্যালয় রয়েছে। তাছাড়া বক্তারপুর, উত্তর রাজ নগরসহ অনেক বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীর তুলনায় শিক্ষক বেশি। তুমলিয়া সরকারি কমিউনিটি, শিমুলিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, সদ্য জাতীয়করণকৃত বিদ্যালয়গুলোতে ছাত্রছাত্রীর উপস্থিতি ২০-৩০ জনের চেয়েও কম। 

অপরদিকে উত্তর সোম সরকারি প্রাথমিকে ৩২৬ জন শিক্ষার্থীর জন্য মাত্র ৬ জন এবং বোয়ালী প্রাথমিকে ২১০ জন শিক্ষার্থীর জন্য মাত্র ৫ জন শিক্ষক কর্মরত রয়েছেন। উপজেলার ১২০টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের হযবরল অবস্থা। 

বিদ্যালয়গুলোতে শিক্ষার্থীর সংখ্যা কম অথচ শিক্ষকের সংখ্যা অধিক থাকায় পড়াশোনার চেয়ে শিক্ষকরা গল্প আড্ডায় বেশি অলস সময় কাটাচ্ছেন। তাছাড়া অধিকাংশ স্কুলে প্রধান শিক্ষক না থাকায় ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকরাই দায়িত্ব পালন করছেন। বেশ কয়েকটি বিদ্যালয়ে সৃষ্ট পদের বিপরীতে অতিরিক্ত একাধিক শিক্ষক পেশনে কর্মরত রয়েছেন। যদিও শিক্ষার্থীর আনুপাতিক হারে এসব প্রতিষ্ঠানে তাদের প্রয়োজন নেই। উপজেলায় এমন শতাধিক শিক্ষক কর্মরত রয়েছেন বিভিন্ন বিদ্যালয়ে। অথচ মোক্তারপুর, জাঙ্গালিয়া ও জামালপুর ইউনিয়নের স্কুলগুলোতে রয়েছে শিক্ষক সংকট। 

অভিভাবক ও সুশীল সমাজের আশঙ্কা, প্রশাসন এবং স্কুল কর্তৃপক্ষের অবহেলার কারণে প্রাথমিক শিক্ষা ব্যবস্থা মুখ থুবড়ে পড়বে। এখনই প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা না হলে ভবিষ্যৎ প্রজন্ম শিক্ষার আলো থেকে বঞ্চিত হবে। প্রাথমিক শিক্ষায় চরম অব্যবস্থাপনা ও শিক্ষক পদায়নে অসম বণ্টনের কারণে শিক্ষাব্যবস্থা ভেঙে পড়েছে।

সময়ের আলো/জিকে




https://www.shomoyeralo.com/ad/1698385080Google-News-Update.jpg

সর্বশেষ সংবাদ

সর্বাধিক পঠিত


ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক: সৈয়দ শাহনেওয়াজ করিম, আমিন মোহাম্মদ মিডিয়া কমিউনিকেশন লিমিটেড এর পক্ষে প্রকাশক গাজী আহমেদ উল্লাহ
নাসির ট্রেড সেন্টার, ৮৯, বীর উত্তম সি আর দত্ত সড়ক (সোনারগাঁও রোড), বাংলামোটর, ঢাকা।

ফোন : +৮৮-০২-৯৬৩২৩৬৮-৭৪, ফ্যাক্স : +৮৮-০২-৯৬৩২৩৭৫ | ই-মেইল : shomoyeralo@gmail.com
close