দাবি পূরণ না হওয়ায় আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকেরা। তবে, তারা আশা করছেন সরকার তাদের দাবি পূরণ করবে।
সর্বজনীন পেনশনের ‘প্রত্যয়’ কর্মসূচি নিয়ে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের সঙ্গে ‘সন্তোষজনক’ বৈঠকের পরদিন রোববার (১৪ জুলাই) অনলাইনে বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি ফেডারেশনের এক সভায় এ সিদ্ধান্ত হয়েছে।
এ বিষয়ে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক ড. শেখ মাশরিক হাসান গণমাধ্যমে বলেন, দুপুর ৩টা পর্যন্ত বাংলাদেশ শিক্ষক সমিতি ফেডারেশনের সঙ্গে আমাদের বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে। সেখানে সিদ্ধান্ত হয়েছে আমাদের এ আন্দোলন চলমান থাকবে। সামনের ২০ জুলাই কৃষি গুচ্ছের ভর্তি পরীক্ষা রয়েছে। যদি এ সময়ের মধ্যে দাবি না মানা হয়, সেটিও না নেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে। অর্থাৎ আন্দোলন আরও কঠোর হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, শনিবারের বৈঠকটাকে অনেক গণমাধ্যম ভিন্নভাবে প্রকাশ করেছে।
বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি ফেডারেশনের সভাপতি এবং শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক আখতারুল ইসলাম বলেন, যেহেতু আমাদের দাবি পূরণ হয়নি তাই আমাদের আন্দোলন চলছে এবং চলবে। তবে, শনিবারের বৈঠকে আমাদের লিখিত বক্তব্য গ্রহণ করা হয়েছে এবং বলা হয়েছে প্রধানমন্ত্রীর কাছে উপস্থাপন করা হবে। তাই আশা করছি আমাদের দাবি পূরণ হবে।
এদিকে প্রতিদিনের মতো গতকাল দুপুরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কলা ভবনের মূল ফটকে অবস্থান নিয়ে নিজেদের কথা তুলে ধরেন শিক্ষকেরা। তবে অন্য দিনের তুলনায় এখানে শিক্ষকদের উপস্থিতি ছিল কম। অন্যদিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মকর্তা-কর্মচারীরাও এই পেনশন কর্মসূচি প্রত্যাহারের দাবিতে মিছিল করেছেন।
সর্বজনীন পেনশনের ‘প্রত্যয়’ কর্মসূচি নিয়ে প্রজ্ঞাপন বাতিল করাসহ তিন দফা দাবিতে ১ জুলাই থেকে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও কর্মকর্তা-কর্মচারীরা একযোগে সর্বাত্মক কর্মবিরতি পালন করছেন। এ কারণে ক্লাস পরীক্ষা হচ্ছে না। প্রশাসনিক ভবনেও কোনো কাজ হচ্ছে না। ফলে বিশ্ববিদ্যালয়ে সেবা নিতে যাওয়া মানুষেরা পড়ছেন ভোগান্তিতে।
শনিবার আওয়ামী লীগ সভাপতির ধানমন্ডির রাজনৈতিক কার্যালয়ে আন্দোলনকারী শিক্ষক নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।
বৈঠকের পর বিষয়টি নিয়ে ভুল-বোঝাবুঝি ছিল জানিয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, সর্বজনীন পেনশন কর্মসূচির আওতায় সরকারি, স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানগুলোর সবাই যুক্ত হবেন ২০২৫ সালের ১ জুলাই। পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের ২০২৪ সালের ১ জুলাই থেকে পেনশনে যোগদানের বিষয়ে তথ্য ছিল, সেটা সঠিক নয়। তাদের তিনটা দাবির মধ্যে এটাও একটা দাবি। সবার মতো তাঁরাও ২০২৫ সালের ১ জুলাইয়ে যোগ দেবেন, এটা নিশ্চিত করা হয়েছে।
ওবায়দুল কাদের আরও বলেন, বাংলাদেশ শিক্ষক সমিতি ফেডারেশনের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকসহ ১৩ শিক্ষক নেতা এসেছিলেন। তাদের সঙ্গে বিস্তারিত আলোচনা হয়েছে, একটা বিষয়ে ভুল-বোঝাবুঝি মিটেছে। অচিরেই সমস্যার সমাধান হবে বলে জানান তিনি।
সময়ের আলো/এম