ই-পেপার রোববার ৬ অক্টোবর ২০২৪
রোববার ৬ অক্টোবর ২০২৪

ঝালকাঠিতে পেয়ারা আবাদে ছন্দপতন
ফলন বিপর্যয়ের মুখে ন্যায্য দামের আশায় চাষিরা
প্রকাশ: রবিবার, ১৪ জুলাই, ২০২৪, ২:৪৭ এএম  (ভিজিট : ৩৩৪)
এ বছর গ্রীষ্মে সারা দেশের মতো ঝালকাঠিতেও ছিল অনাবৃষ্টি। প্রচণ্ড রোদ ও তাপপ্রবাহে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ফসল। অন্যান্য কৃষিপণ্যের পাশাপাশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে পেয়ারাও। প্রচণ্ড তাপে এ বছর প্রতি বছরের চেয়ে ফলন কম হয়েছে পেয়ারার। অনেক পেয়ারা এখনও কচি অবস্থাতেই আটকে আছে।

চাষিদের মতে, এসব পেয়ারা পরিপক্ব হয়ে বাজারে আসতে লাগবে আরও ১৫ দিন। তবে এ পরিস্থিতিতেও ন্যায্য দামের আশায় বুক বেঁধেছেন চাষিরা। ফলন বিপর্যয় সত্ত্বেও তারা আশা করছেন, পাইকারদের হাঁকডাক এবং পর্যটকদের উপচে পড়া ভিড়ে মুখরিত হবে দুইশ বছরের ঐতিহ্যবাহী পেয়ারার রাজ্য ও ভাসমান পেয়ারাহাট।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, কম-বেশি সব জায়গায় ছড়িয়ে-ছিটিয়ে পেয়ারার চাষ হলেও বরিশালের বানারীপাড়া, ঝালকাঠি সদর ও পিরোজপুরের স্বরূপকাঠি ঘিরেই মূলত পেয়ারার বাণিজ্যিক চাষ। এ অঞ্চলের কৃষি অর্থনীতির প্রায় পুরোটাই পেয়ারানির্ভর। বরিশালের বানারীপাড়ার ১৬ গ্রামে ৯৩৭ হেক্টর, ঝালকাঠি জেলার ১৩ গ্রামে ৩৫০ হেক্টর জমিতে, স্বরূপকাঠির ২৬ গ্রামের ৬৪৫ হেক্টর জমিতে পেয়ারা চাষ হয়। এসব এলাকার হাজার হাজার মানুষের কাছে ‘পেয়ারা’ই জীবিকার একমাত্র অবলম্বন। আষাঢ়-শ্রাবণের ভরা বর্ষায় এসব এলাকার নদী-খালজুড়ে নৌকায় থাকে পেয়ারার সমারোহ। এদিকে ঝালকাঠির কীর্তিপাশা, ভিমরুলী, শতদশকাঠি, খাজুরিয়া, ডুমুরিয়া, কাপুড়াকাঠি, জগদীশপুর, মীরকাঠি, শাখা গাছির, হিমানন্দকাঠি, আদাকাঠি, রামপুর, শিমুলেশ্বর এই গ্রামগুলোর বৃহৎ অংশজুড়ে বাণিজ্যিকভাবে বছরের পর বছর ধরে পেয়ারার চাষ হচ্ছে। অন্যান্য বছরের তুলনায় এ বছরের পেয়ারা চাষের চিত্র একেবারে ভিন্ন। 

এবার পেয়ারা গাছে দেরিতে ফুল এসেছে। আবার সময়মতো বৃষ্টি না হওয়ায় সেই ফুল অধিকাংশই ঝরে পড়েছে। আষাঢ় মাস শেষ তবু অধিকাংশ পেয়ারাই কচি অবস্থায় আটকে আছে। এখনও বিক্রির উপযোগী হতে আরও ১৫ দিন সময় লাগবে। তাই বড় ধরনের ক্ষতির মুখে পড়ার আশঙ্কা করছেন কৃষকরা।

স্থানীয় চাষিরা জানান, আনুমানিক ২০০ বছরেরও বেশি সময় আগে বিচ্ছিন্নভাবে আবাদ হলেও ১৯৪০ সাল থেকে শুরু হয়েছে পেয়ারার বাণিজ্যিক আবাদ। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে এ আবাদ ক্রমেই বেড়েছে। ২০২৪ সালেও অন্তত ১ হাজার ৯৩২ হেক্টর জমিতে বাণিজ্যিকভাবে পেয়ারার আবাদ হয়েছে। এ সময় ফলন হয়েছে প্রায় ২০ হাজার টন পেয়ারা। কিন্তু এ বছর ১০ হাজার টন পেয়ারা উৎপাদন হবে কি না তা নিয়ে সন্দিহান পেয়ারা চাষিরা।

কৃষক পঙ্কজ বড়াল বলেন, মাঘ-ফাল্গুন মাসে পেয়ারা গাছের গোড়া পরিষ্কার করে সার প্রয়োগ করতে হয়েছে। এরপর কাদামাটি দিয়ে গোড়া ঢেকে দিয়েছি। তাতে গাছপ্রতি গড়ে তিনশ টাকার বেশি ব্যয় হয়েছে। পেয়ারা গাছে যে পরিমাণ ফুল এসেছিল এ বছর বৃষ্টিপাত না হওয়ায় তা অনেকটাই ঝরে গেছে। পদ্মা সেতু চালু হওয়ার পর পর্যটক ও পাইকারদের আনাগোনা বেড়েছে। ফলন কম হলেও ন্যায্য দাম পেলে ক্ষতি পুষিয়ে নেওয়া সম্ভব। নয়তো লাভ তো দূরের কথা, আসল খরচের টাকাই ওঠে কি না তা নিয়ে দুশ্চিন্তায় আছি।

সময়ের আলো/আরএস/




https://www.shomoyeralo.com/ad/1698385080Google-News-Update.jpg

সর্বশেষ সংবাদ

সর্বাধিক পঠিত


ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক: সৈয়দ শাহনেওয়াজ করিম, আমিন মোহাম্মদ মিডিয়া কমিউনিকেশন লিমিটেড এর পক্ষে প্রকাশক গাজী আহমেদ উল্লাহ
নাসির ট্রেড সেন্টার, ৮৯, বীর উত্তম সি আর দত্ত সড়ক (সোনারগাঁও রোড), বাংলামোটর, ঢাকা।

ফোন : +৮৮-০২-৯৬৩২৩৬৮-৭৪, ফ্যাক্স : +৮৮-০২-৯৬৩২৩৭৫ | ই-মেইল : shomoyeralo@gmail.com
close