ই-পেপার সোমবার ৭ অক্টোবর ২০২৪
সোমবার ৭ অক্টোবর ২০২৪

জিআই পণ্যের স্বীকৃতি পেল গোপালগঞ্জের ব্রোঞ্জের গহনা
প্রকাশ: রবিবার, ১৪ জুলাই, ২০২৪, ১২:৫১ এএম  (ভিজিট : ২৬২)
ঐতিহ্যবাহী ব্রোঞ্জের গহনা জিআই পণ্যের স্বীকৃতি পেয়েছে। এটি জেলার দ্বিতীয় পণ্য হিসেবে জিআই স্বীকৃতি অর্জন করল। গোপালগঞ্জের জেলা প্রশাসক কাজী মাহবুবুল আলম এ তথ্য জানিয়েছেন। তিনি বলেন, গত বৃহস্পতিবার ভৌগোলিক নির্দেশক (জিআই) পণ্য হিসেবে গোপালগঞ্জের ব্রোঞ্জের গহনা নিবন্ধনের জন্য ভৌগোলিক নির্দেশক পণ্য (নিবন্ধন ও সুরক্ষা) আইন, ২০১৩-এর ধারা ১২ অনুসারে শিল্প মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন পেটেন্ট, শিল্প-নকশা ও ট্রেড মার্কস অধিদফতর কর্তৃক জার্নাল প্রকাশ করা হয়। এই স্বীকৃতি জেলার মুকসুদপুর উপজেলার জলিরপাড়ের ব্রোঞ্জের গহনার ঐতিহ্য বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে দেওয়া সম্ভব হবে।  

এ ছাড়া ব্রোঞ্জের গহনা তৈরির সঙ্গে সম্পৃক্ত কারিগরদের কর্মসংস্থান ও জীবনযাত্রার মান উন্নয়নে সহায়ক হবে বলে আমরা বিশ্বাস করি। ব্রোঞ্জ শিল্পভিত্তিক অর্থনীতি আরও গতিশীল হবে। এলাকার আর্থ-সামাজিক অবস্থার উন্নয়ন ঘটবে।  

এ অর্জনে জেলা প্রশাসক কাজী মাহবুবুল আলম গোপালগঞ্জের ব্রোঞ্জের গহনার জিআইভুক্তিকরণের সঙ্গে সম্পৃক্ত জেলা প্রশাসন ও মুকসুদপুর উপজেলা প্রশাসনের সব কর্মকর্তা এবং ই-কমার্স ডেভেলপমেন্ট সেন্টারের কর্মকর্তাসহ সংশ্লিষ্ট সবাইকে তাদের সার্বিক সহযোগিতার জন্য আন্তরিক ধন্যবাদ জানিয়েছেন। চলতি বছরের ১২ মার্চ জলিরপাড়ের ব্রোঞ্জের গহনার জিআই পণ্যের স্বীকৃতি চেয়ে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় ও দফতরগুলোতে আবেদন করা হয়।  

ব্রোঞ্জ মার্কেটের ব্যবসায়ী ও জলিরপাড় ইউনিয়নের ৭ নম্বর ওয়ার্ডের সাবেক মেম্বার সুভাষ বৈদ্য বলেন, আমাদের ওয়ার্ডেই ব্রোঞ্জের গহনা তৈরির পল্লী প্রায় ১০০ বছর আগে গড়ে উঠে। পরে এটি সারা জলিরপাড় ইউনিয়নের ঘরে ঘরে ছড়িয়ে পড়ে। এ পল্লীকে কেন্দ্র করে এখানে ব্রোঞ্জ মার্কেট প্রতিষ্ঠিত হয়। তখন জলিরপাড়ের ব্রোঞ্জের গহনার সুখ্যাতি সারা দেশে ছড়িয়ে পড়ে। দেশের গণ্ডি পেরিয়ে এটি বিদেশের বাজারে ছড়িয়ে যায়। কিন্তু এ শিল্পে আধুনিকতার ছোঁয়া লাগেনি। তাই সম্প্রতি ভারতসহ বিভিন্ন দেশের ব্রোঞ্জের গহনা আমাদের বাজারের প্রায় ৫০ ভাগ দখল করে নিয়েছে। তারপরও জলিরপাড়ের ব্রোঞ্জের গহনা তৈরি শিল্প স্বগৌরবে শতাধিক পরিবার টিকিয়ে রেখেছে। জলিরপাড় ব্রোঞ্জ মার্কেটে এখনও ৪৫টি দোকান রয়েছে। এসব দোকানে এখনও ব্রোঞ্জের গহনা বিক্রি করা হয়।

ব্রোঞ্জ গহনা প্রস্তুতকারক জলিরপাড় গ্রামের জগদীশ শীল বলেন, ব্রোঞ্জ গহনা তৈরির তামা, দস্তা ও পিতলের দাম বেড়েছে। সহজ প্রাপ্যতা কমেছে। ভারতসহ অন্যান্য দেশের ব্রোঞ্জের গহনার রং খুব চকচকা। আমাদের গহনার রং তাদের সঙ্গে প্রতিযোগিতায় টিকতে পারে না। দামি  সুদৃশ্য, মনোহর ও শৌখিন গহনার বাজার ভারত ও চীনের দখলে চলে গেছে। তাই কানের দুল, হাতের বয়লাসহ যেসব গহনার চাহিদা রয়েছে এমন সব গহনা আমরা তৈরি করি।  

সরকার এ শিল্পকে আধুনিকায়ন, প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা ও সব ধরনের সহযোগিতা করলে আমরা ব্রোঞ্জের গহনার শত বছরের ঐতিহ্য ধরে রাখতে পারব। এখনও আমাদের  মানসম্পন্ন কারিগর রয়েছে। আধুনিক যন্ত্রপাতির সমন্বয়ে তাদের কাজে লাগিয়ে আমরাও দামি গহনা তৈরি করতে পারি। তা হলেই শ্রমিক, মালিক ও ব্যবসায়ীরা অধিক উপার্জন করতে পারবেন। এ শিল্প দেশের অর্থনীতিকে আরও সমৃদ্ধ ও গতিশীল করবে।  

ই-কমার্স ডেভেলপমেন্ট সেন্টারের সভাপতি কাকলী তালুকদার বলেন, ব্রোঞ্জের পণ্য হিসেবে বাংলাদেশ এটাই প্রথম পণ্য যা বাণিজ্যিকরণ করা হচ্ছে। এই পণ্যটি জিআই স্বীকৃতি পাওয়ায় একদিকে যেমন বিলুপ্তপ্রায় কুটির শিল্পটি আবার চাঙ্গা হয়ে উঠবে, দেশ-বিদেশে এর সুনাম ও সুখ্যাতি ছড়ানোর পাশাপাশি ব্যবসা বাণিজ্যের প্রসার ঘটবে। উল্লেখ্য, এর আগে গোপালগঞ্জের রসগোল্লা জেলার প্রথম পণ্য হিসেবে জিআই স্বীকৃতি পায়।

সময়ের আলো/আরএস/ 




https://www.shomoyeralo.com/ad/1698385080Google-News-Update.jpg

সর্বশেষ সংবাদ

সর্বাধিক পঠিত


ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক: সৈয়দ শাহনেওয়াজ করিম, আমিন মোহাম্মদ মিডিয়া কমিউনিকেশন লিমিটেড এর পক্ষে প্রকাশক গাজী আহমেদ উল্লাহ
নাসির ট্রেড সেন্টার, ৮৯, বীর উত্তম সি আর দত্ত সড়ক (সোনারগাঁও রোড), বাংলামোটর, ঢাকা।

ফোন : +৮৮-০২-৯৬৩২৩৬৮-৭৪, ফ্যাক্স : +৮৮-০২-৯৬৩২৩৭৫ | ই-মেইল : shomoyeralo@gmail.com
close