ই-পেপার সোমবার ৭ অক্টোবর ২০২৪
সোমবার ৭ অক্টোবর ২০২৪

নারীকে মর্যাদা দিলে আল্লাহর কাছে মর্যাদা বাড়ে
প্রকাশ: বৃহস্পতিবার, ১১ জুলাই, ২০২৪, ২:৫০ এএম  (ভিজিট : ৩১৪)
পৃথিবীতে মানবজাতির কল্যাণ প্রতিষ্ঠায় আগমন করেন হজরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম। প্রায় দেড় হাজার বছর আগে পৃথিবীতে আগমন করেছিলেন তিনি। পৃথিবীতে তখন ছিল অন্যায়, জুলুম ও অরাজকতা। বিশেষ করে নারীর অধিকার বলতে কিছুই ছিল না। মহানবী (সা.) এসে পরিস্থিতি আমূল পরিবর্তন করেন। পরিবার, সমাজ ও দেশের সর্বস্তরে শান্তি, কল্যাণ ও নিরাপত্তা প্রতিষ্ঠা করেন। তিনি পুরুষের অধিকারের পাশাপাশি নারীর অধিকারের বিষয়টিও সুস্পষ্ট করেছেন।

আধুনিক বিশ্বে নারী অধিকারের বিষয়টি বহুল আলোচিত। পাশ্চাত্য সভ্যতায় নারী অধিকারের ধারণাটি গত শতাব্দীর সৃষ্টি। কিন্তু ইসলাম নারী অধিকারের ধারণা উপস্থাপন করেছে দেড় হাজার বছর আগে। ইসলাম নারী অধিকারের সুস্পষ্ট ঘোষণায় নারীর যথাযথ মর্যাদার স্বীকৃতি দিয়েছে এবং মানবতার নবী হজরত মুহাম্মদ (সা.) সর্বপ্রথম নারীজাতির পূর্ণ মানবিক অধিকার প্রতিষ্ঠা করেছেন।

ইসলামের আগে জাহেলি আরব সমাজে নারীর মর্যাদাপূর্ণ কোনো অবস্থান ছিল না। তাদের গণ্য করা হতো ভোগের বস্তু হিসেবে। নারী ছিল রাতের কবিতার আসর আর মদের আড্ডার বিশেষ অনুষঙ্গ। জীবন ও সমাজে তাদের বড়জোর স্বামী বা মনিবের মনোরঞ্জনের উপকরণের বেশি কিছু মনে করা হতো না। নারীকে পরিবার, সমাজ ও বংশের জন্য অসম্মান ও অভিশাপ মনে করা হতো। এমনকি সামাজিক লজ্জার ভয়ে নারীকে জীবন্ত কবর দেওয়া হতো। পবিত্র কুরআনে পুরুষদের সঙ্গে নারীদেরও সম্পত্তির উত্তরাধিকার নির্ধারণ করে দেওয়া হয়েছে। একইভাবে মায়েদের, স্ত্রীদের, কন্যাদের, স্বামীদের সম্পত্তির এবং বিশেষ অবস্থায় বোনদের-ভাইদের সম্পত্তির উত্তরাধিকার সাব্যস্ত করা হয়েছে। বিধবাদের সাহায্যকারীদের সম্পর্কে তিনি বলেন, ‘যারা বিধবা নারীর ভরণপোষণের দায়িত্ব নেয়, তারা যেন আল্লাহর পথে জিহাদকারী এবং নিরলস নামাজি ও সদা রোজা পালনকারী।’ (মুসলিম : ১৯৩৮)

একবার ওয়াইস করনি (রা.) নবীজির কাছে খবর পাঠালেন, ‘হে আল্লাহর রাসুল, আপনার সঙ্গে আমার দেখা করার খুব ইচ্ছা, কিন্তু আমার মা খুব অসুস্থ, এখন আমি কী করতে পারি?’ নবীজি (সা.) উত্তর পাঠালেন, ‘আমার কাছে আসতে হবে না। আমার সঙ্গে সাক্ষাতের চেয়ে তোমার মায়ের সেবা করা বেশি জরুরি।’ মায়ের সেবা করার কারণে তিনি প্রিয় নবীর যুগে থেকেও তাঁর সাক্ষাৎ লাভ করতে পারেননি। রাসুল (সা.) বলেন, ‘যে ব্যক্তির তিনটি কন্যাসন্তান আছে যাদের সে লালনপালন করে এবং তাদের সঙ্গে সদয় আচরণ করে, তার জন্য অবশ্যই জান্নাত ওয়াজিব।’ সাহাবায়ে কেরাম জিজ্ঞেস করলেন, হে আল্লাহর রাসুল, যদি দুটি মেয়ে থাকে? নবীজি বললেন, ‘দুটি থাকলেও।’ (বুখারি : ২৪৮১)

মহানবীর (সা.) ইন্তেকালের আগে সমবেত মুসলমানদের যেসব অছিয়ত করেছিলেন, তার মধ্যে একটি উপদেশ ছিল, ‘আমি তোমাদের আমার এই শেষ অছিয়ত করছি যে, নারীর সঙ্গে যেন সর্বদা উত্তম আচরণ করা হয়’ (মুসলিম : ১৮৪১)। নবীজি (সা.) আরও বলেন, ‘তোমাদের মধ্যে সে-ই উত্তম, যে তার স্ত্রীর কাছে উত্তম’ (তিরমিজি : ২৪২৭)। বাংলাদেশে প্রতিদিনই নারী নির্যাতন ও নারীর প্রতি বৈষম্যভাব বেড়েই চলেছে। নারীকে হত্যা, ধর্ষণসহ নানারকম নির্যাতনের নির্মম ঘটনা প্রায়ই বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত হচ্ছে। আমাদের সমাজের কোথাও নারী নিরাপদ নয়। পরিস্থিতি এমন যে, আমরা যেন আইয়ামে জাহেলিয়াতের চেয়েও আরও কঠিন সময়ে বসবাস করছি! নারী নির্যাতন, নারীর প্রতি সহিংসতা রোধ ও নারী অধিকার নিশ্চিত করতে মহানবী (সা.)-এর নির্দেশিত নারী নীতিমালা অনুসরণের বিকল্প নেই।

সময়ের আলো/আরএস/ 





https://www.shomoyeralo.com/ad/1698385080Google-News-Update.jpg

সর্বশেষ সংবাদ

সর্বাধিক পঠিত


ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক: সৈয়দ শাহনেওয়াজ করিম, আমিন মোহাম্মদ মিডিয়া কমিউনিকেশন লিমিটেড এর পক্ষে প্রকাশক গাজী আহমেদ উল্লাহ
নাসির ট্রেড সেন্টার, ৮৯, বীর উত্তম সি আর দত্ত সড়ক (সোনারগাঁও রোড), বাংলামোটর, ঢাকা।

ফোন : +৮৮-০২-৯৬৩২৩৬৮-৭৪, ফ্যাক্স : +৮৮-০২-৯৬৩২৩৭৫ | ই-মেইল : shomoyeralo@gmail.com
close