প্রকাশ: মঙ্গলবার, ৯ জুলাই, ২০২৪, ১০:৩২ পিএম (ভিজিট : ২৮২)
বগুড়ার আদমদীঘির চাঁপাপুর ইসলামি ব্যাংক পিএলসির এজেন্ট আউটলেট গ্রাহকের আমানতের হিসাবের দেড় কোটি টাকা আত্মসাৎ করার ঘটনায় থানায় দায়েরকৃত দুই মামলায় প্রায় আটজন পলাতক আসামির মধ্যে ক্যাশিয়ার সুজন রহমানকে গ্রেফতার করেছে র্যাব।
সোমবার (৮ জুলাই) রাতে ঢাকার ধামরাইয়ের তালতলা এলাকা থেকে র্যাব—১২ বগুড়া ও র্যাব—৪ সাভারের যৌথ অভিযানে তাকে গ্রেফতার করা হয়। মঙ্গলবার (৯ জুলাই) দুপুরে বগুড়া র্যাব কার্যালয়ে প্রেস ব্রিফিংয়ের মাধ্যমে বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়েছে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ২০১৯ সালে জুলাই মাসে উপজেলার চাঁপাপুর বাজারে ইসলামী ব্যাংকের এজেন্ট আউটলেট চালু করেন গোবিন্দপুর গ্রামের নুরুল ইসলাম সোহাগ। তিনি ছয়জন কর্মচারী নিয়ে প্রায় পাঁচ বছর যাবত ব্যাংকিং কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছিলেন। বর্তমান আউট লেটটির গ্রাহকসংখ্যা সাড়ে তিন হাজার। আউট লেটটিতে প্রবাসীদের পাঠানো টাকা আর স্থানীয় ব্যবসায়ীদের জমা রাখা টাকার পরিমাণ বেশি ছিল। চলতি বছরের ২৩ মে হঠাৎ ক্যাশিয়ার সুজন সপরিবারে নিরুদ্দেশ হন। এরপর ২৬ মে ব্যাংকের কয়েকজন গ্রাহক সঞ্চয়ী হিসাব থেকে টাকা তুলতে এসে দেখেন তাদের অ্যাকাউন্টে টাকা জমা নেই। এতে সুজনের প্রতারণার বিষয়টি ছড়িয়ে পড়ে। পরে শতাধিক গ্রাহক টাকা ফেরত নিতে এসে দেখেন তাদের হিসাব নম্বরে জমাকৃত টাকা নেই। গত ২৮ মে এজেন্ট আউট লেটের স্বত্বাধিকারী নুরুল ইসলাম তার আপন ভাতিজা ক্যাশিয়ার সুজন ও তার বাবা—মায়ের বিরুদ্ধে থানায় মামলা করেন। এদিকে এজেন্ট নুরুল গ্রাহকের কাছে দায়বদ্ধ থাকলেও আমানতের টাকা ফেরত দিতে না পারায় গত ১১ জুন ইসলামি ব্যাংক পিএলসির দুপচাঁচিয়া শাখার ব্যবস্থাপক কাজী মিজানুর রহমান বাদী হয়ে নুরুল ইসলামসহ ৫ জনের বিরুদ্ধে থানায় একটি মামলা করেন। এরপর থেকে দুই মামলার সকল আসামি প্রায় দেড় মাস পলাতক রয়েছেন। গত ২৩ জুন গ্রাহকরা তাদের আমানতের টাকা ফেরত ও আসামি গ্রেফতারের দাবিতে এজেন্ট আউট লেটের মূল গেটে তালা ঝুলিয়ে বিক্ষোভ করেন। ঘণ্টা খানেক পর চাঁপাপুর এজেন্ট আউট লেটের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোমিনুল ইসলাম আমানতকারিদের বুঝিয়ে তালা খুলে ফের কার্যক্রম শুরু করেন।
বগুড়া র্যাব-১২ এর কোম্পানি কমান্ডার মীর মনির হোসেন জানান, র্যাবের যৌথ অভিযানে আদমদীঘির চাঁপাপুর ইসলামী ব্যাংকের এজেন্ট আউটলেট গ্রাহকের দেড় কোটি টাকা আত্মসাতের ঘটনায় মূল পরিকল্পনাকারী সুজনকে গ্রেফতার করা হয়। সুজনের স্বীকারোক্তিতে জানা যায়, হঠাৎ তার বড় চাচা নুরুল আর্থিক সংকটে পড়েন। এ কারণে তারা পরিকল্পনা করেন গ্রাহকের টাকা জমা নেওয়ার সময় রিসিপ্ট না দিয়ে টাকাগুলো আত্মসাৎ করবেন। সে অনুযায়ী টাকা গ্রাহকের একাউন্টে জমা না করে নিজেরা ভাগ করে নিতেন। অপরদিকে গ্রাহকের একাধীকবার ফিঙ্গারপ্রিন্ট নিয়ে তাদের একাউন্ট থেকে অধিক টাকা উত্তোলন করতেন।
আদমদীঘি থানার ওসি রাজেশ কুমার চক্রবর্তী জানান, থানায় দায়েরকৃত পৃথক দুটি মামলার আসামিদের মধ্যে ক্যাশিয়ার সুজনকে গ্রেফতার করেছে র্যাব। অন্য আসামিদের গ্রেফতারের জন্য অভিযান চলছে।
সময়ের আলো/আরআই