প্রকাশ: মঙ্গলবার, ৯ জুলাই, ২০২৪, ৯:৩১ পিএম (ভিজিট : ২৭৪)
কুড়িগ্রামে সার্বিক বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি হয়েছে। এখনও ব্রহ্মপুত্র ও দুধকুমার নদের পানি বিপৎসীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। কমেছে ধরলা নদের পানি। ধরলা নদীর পানি সেতু পয়েন্টে সামান্য হ্রাস ১ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। ব্রহ্মপুত্র নদের পানি চিলমারী পয়েন্টে বিপদসীমার ৪৮ সেন্টিমিটার, হাতিয়া পয়েন্টে ২৬ সেন্টিমিটার, নুন খাওয়া পয়েন্টে ২৪সেন্টিমিটার ও দুধকুমার নদের পানি সোনাহাট সেতু পয়েন্টে ১ সেন্টিমিটার দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। অন্য নদ নদীর পানি অপরিবর্তিত রয়েছে।
বন্যা পরিস্থিতি অপরিবর্তিত থাকায় জেলার নদ-নদীর অববাহিকার চরাঞ্চল ও নিম্নাঞ্চলে ৮ দিন ধরে বন্যা কবলিত হয়ে পড়েছে প্রায় দেড় লক্ষাধিক মানুষ। অনেকেই ঘর-বাড়ি ছেড়ে গবাদি পশু নিয়ে উঁচু সড়ক ও বাঁধে আশ্রয় নিয়ে মানবেতর জীবন-যাপন করছেন।
চরাঞ্চলের বন্যা কবলিতরা বিশুদ্ধ খাবার পানি ও শুকনো খাবার চরম সংকটে পড়েছেন। পাশাপাশি গবাদি পশুর খাদ্য সংকট নিয়েও বিপাকে পড়েছেন তারা। তবে বানভাসি মানুষের মাঝে সরকারি ভাবে কিছু ত্রাণ সহায়তা লক্ষ্য করা গেলেও বেসরকারি ভাবে তেমন ত্রাণ সহায়তা দেখা যায়নি।
উলিপুর উপজেলার বেগমগঞ্জ ইউনিয়নের নয়ারহাট এলাকার বাসিন্দা করিমল হোসেন বলেন, গত ৮ দিন ধরে আমার চরের সব বাড়িতে পানি উঠেছে। গরু-ছাগল হাস-মুরগী নিয়ে চরম বিপাকে রয়েছি। পাশের উঁচু একটি স্কুলে আশ্রয় নিয়েছি। চাল নেই, চুলা নেই। ছোঁয়া দোয়া নিয়ে ভীষণ কষ্টে দিন পার করছি।
জেলা সদরের ঘোগাদহ ইউনিয়নের ষাটোর্ধ সহিরন বেওয়া জানায়, ৮ দিন থেকে রাস্তাঘাট তলিয়ে আছে। বাড়ি থেকে বের হলে হাঁটু জল। এখনও কোন চাউল আটা কিছুই পাইলং না। কেমন করে বাঁচি বাবা। চেয়ারম্যান মেম্বারদের একটু বলেন বাবা হামার গুলার কথা।
শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলা নিয়ে জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা নবেজ উদ্দিনের সাথে কথা হলে তিনি জানান, বন্যার পানি কমে গেলে সার্বিক পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করে তারপর বিদ্যালয় খুলে দেয়ার সিদ্ধান্ত নেয়া হবে।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক আব্দুল্লাহ আল মামুন জানান, বন্যায় এ পর্যন্ত ৬ হাজার ৬৬০ হেক্টর ফসলি জমি, বীজতলা ও শাকসবজি বন্যার পানিতে তলিয়ে গেছে। তবে বন্যার পানি কমে যাওয়ার পর ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ নির্ধারণ করা যাবে।
জেলা ত্রাণ ও পূর্নবাসন কর্মকর্তা মো. আব্দুল হাই সরকার জানান, বন্যা মোকাবেলায় ৩১৭ মেট্রিক টন চাল, ২১ লাখ ৮৫ হাজার টাকা ও ১৯ হাজার ৩০ প্যাকেট শুকনো খাবার বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। যা বিতরণ চলমান আছে।
জেলা প্রশাসক মো. সাইদুল আরীফ জানান, পরিস্থিতি মোকাবিলায় সব ধরনের প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে। কোথায়ও কোন অসঙ্গতি থাকলে আমাদেরকে জানালে দ্রুত ব্যবস্থা নেয়া হবে।
সময়ের আলো/আরআই