প্রকাশ: সোমবার, ৮ জুলাই, ২০২৪, ১১:০০ পিএম (ভিজিট : ৩০০)
চুয়াডাঙ্গার আলমডাঙ্গায় বিভিন্ন এনজিওর কিস্তির বোঝা সহ্য করতে না পেরে তাসলিমা নামের এক বিধবা নারী গলায় ফাঁস লাগিয়ে আত্মহত্যা করেছে। সোমবার (৮ জুলাই) দুপুরে বাড়িতে কেউ না থাকার সুযোগে নিজ ঘরের আড়াই রশি দিয়ে গলায় ফাঁস লাগিয়ে আত্মহত্যা করে। এ বিষয়ে আলমডাঙ্গা থানায় একটি অপমৃত্যু মামলা দায়ের করা হয়েছে।
আত্মহত্যাকারী বিধবা নারী তাসলিমা খাতুন (৫৫) আলমডাঙ্গা পৌর এলাকার পশুহাট মিয়াপাড়ার মৃত মতিয়ার রহমানের স্ত্রী। বিধবা তাসলিমা খাতুনের ৫ ছেলে। দুই ছেলে প্রবাসী, এক ছেলে রাজ মিস্ত্রি, এক ছেলে পাখিভ্যান চালায় ও ছোট ছেলে ষষ্ঠ শ্রেণিতে লেখাপড়া করে।
জানা গেছে, তাসলিমা খাতুনের স্বামীর মৃত্যুর পর ৫ ছেলেকে নিয়ে সংসার চালিয়ে বড় করেছে। আলমডাঙ্গার ব্রাক, আশা, দিশা, পদক্ষেপসহ বেশ কিছু এনজিও থেকে ঋণ নিয়ে দুই ছেলেকে বিদেশ পাঠিয়েছে। সব মিলিয়ে প্রায় ১০ থেকে ১৫ লাখ টাকা ঋণ নেওয়া আছে। প্রায়ই প্রতিদিনই কিস্তির টাকা পরিশোধ করতে হয় তাকে। ছেলেরা বিদেশ গিয়ে ভাল কাজ না পাওয়ায় বাড়িতে টাকা দিতে পারে না। আরেক ছেলেকে বিদেশ পাঠানোর জন্য গত রোববার ব্রাক থেকে ৩ লাখ টাকা ঋণ নিয়েছে তাসলিমা।
প্রতিবেশীরা জানান, তাসলিমা খাতুন ৫ ছেলে নিয়ে বসবাস করে আসছিল। এনজিও থেকে ঋণ নিয়ে দুই ছেলেকে বিদেশ পাঠিয়েছে। বাড়িতে ৩ ছেলে ও মেজো ছেলের স্ত্রী এবং একটি নাতছেলে নিয়ে বসবাস করে। আজ (সোমবার) দুপুরে তাসলিমা খাতুন ও মেজো ছেলের স্ত্রী বাড়িতে ছিল। মেজো ছেলের একটি সন্তান আছে। ছেলের স্ত্রী তার বাচ্চাকে ভাত খাওয়ানোর জন্য বাড়ির বাইরে যায়। এই সুযোগে তাসলিমা খাতুন তার ঘরের আড়ার সাথে দড়ি দিয়ে ফাঁস লাগিয়ে আত্মহত্যা করে।
আলমডাঙ্গা পৌরসভার প্যানেল মেয়র খন্দকার মজিবুল ইসলাম জানান, তাসলিমা খাতুনের স্বামী মারা যাওয়ার পর ছেলেদেরকে কষ্ট করে বড় করেছে। এনজিও থেকে ঋণ নিয়ে দুই ছেলেকে বিদেশ পাঠিয়েছে। আরেক ছেলেকে বিদেশ পাঠানোর জন্য ব্রাক থেকে ঋণ নিয়েছে। ঋণের টাকার বোঝা সইতে না পেরে তাসলিমা গলায় দড়ি দিয়ে আত্মহত্যা করেছে।
আলমডাঙ্গা থানার অফিসার ইনচার্জ শেখ গণি মিয়া ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে জানান, তাসলিমা খাতুন নামের এক নারী গলায় ফাঁস লাগিয়ে আত্মহত্যা করেছে। এ বিষয়ে থানায় একটি অপমৃত্যু মামলা দায়ের করেছে। ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছে।
সময়ের আলো/আরআই