প্রকাশ: সোমবার, ৮ জুলাই, ২০২৪, ১:১১ এএম (ভিজিট : ৩১৪)
বৃক্ষমেলার মূল লক্ষ্য হচ্ছে দেশের প্রতিটি গ্রাম থেকে শহর পর্যন্ত সর্বস্তরের মানুষকে বৃক্ষ রোপণের প্রতি আগ্রহী করে তোলা। শরীয়তপুর জেলার গোসাইরহাট উপজেলায় স্থানীয় শহিদ মিনার প্রাঙ্গণে ১ জুলাই থেকে উপজেলা পরিষদের উদ্যোগে ১০ দিনব্যাপী বন বিভাগের বৃক্ষমেলা শুরু হয়েছে। বৃক্ষমেলায় প্রসাধনী, ফুসকা-চটপটিসহ বিভিন্ন সামগ্রীর দোকান সাজানো হয়েছে। অন্যদিকে মেলার এক কোণে গাছের চারা বিক্রির একটি মাত্র দোকান দেখা গেছে।
ভৌগোলিক অবস্থানের কারণে বাংলাদেশ জলবায়ুর ঝুঁকিতে থাকা একটি দেশ। প্রতিনিয়তই প্রাকৃতিক দুর্যোগের মুখোমুখি হচ্ছে দেশটি।
তাই প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবিলায় প্রাণ-প্রকৃতি প্রতিবেশ রক্ষা ও জীববৈচিত্র্যসমৃদ্ধ পরিবেশ এবং আর্থসামাজিক উন্নয়নে বনায়ন কর্মসূচি সম্প্রসারণ করতে হবে।
বৃক্ষমেলার নামে ১০ দিনব্যাপী যা শুরু হয়েছে, তাকে বৃক্ষমেলা না বলে বারোয়াড়ি মেলা বললে ভুল হবে না। স্থানীয় বৃক্ষপ্রেমিকদের এই মেলাকে ঘিরে যেমন ক্ষোভ রয়েছে, তেমনি উপজেলা প্রশাসন ও বন বিভাগের কাণ্ডজ্ঞানহীন কার্যক্রমে এলাকাজুড়ে বিরূপ প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়েছে।
গাছ রোপণের মৌসুম চলছে। এ সময় বৃক্ষমেলা থেকে মানুষ বিভিন্ন প্রজাতির গাছ সংগ্রহ করে তা নিজের মতো করে লাগিয়ে থাকে। সে দিক বিবেচনায় বৃক্ষমেলার এটাই মোক্ষম সময়। কিন্তু বৃক্ষমেলার উদ্যোক্তারা সঠিক কাজটি না করে বৃক্ষমেলাকে তামাশায় পরিণত করেছে।
এ বিষয়ে শরীয়তপুর বন বিভাগের বন কর্মকর্তা মো. সালাহ উদ্দিন বলেন, মূল ফটকে কী লেখা রয়েছে তা আমার জানা নেই। গোসাইরহাটে মেলা করার জন্য বন বিভাগের কোনো বরাদ্দ নেই। কোনো আয়োজনও বন বিভাগ করেনি। করেছে উপজেলা প্রশাসন। তারা বন বিভাগের নাম ভুলে ব্যবহার করছে।
একটি দেশে পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষায় মোট আয়তনের ২৫ ভাগ বনায়ন থাকার কথা। সে তুলনায় আমাদের বনাঞ্চল খুব কম। এদিকে প্রাকৃতিক ভারসাম্যহীনতার জন্য বিশ্বজুড়ে চলছে প্রকৃতির বিরূপ আচরণ। তার জন্য সরকারি ও ব্যক্তিক পর্যায়ে বেশি করে গাছ লাগানোর উদ্যোগ গ্রহণ করা হচ্ছে। সে সময় গোসাইরহাট উপজেলা প্রশাসন ও বন বিভাগের আয়োজনে এমন বৃক্ষমেলা কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। বৃক্ষমেলার নামে এ ধরনের মেলা কতটা যৌক্তিক? এ ব্যাপারে জবাবদিহিতা নিশ্চিত করা জরুরি।
প্রতিটি জেলা-উপজেলা পর্যায়ে নার্সারি গড়ে উঠলে স্থানীয় লোকজন বৃক্ষ রোপণের প্রতি আরও বেশি আগ্রহী হয়ে উঠবে। এ বিষয়ে মানুষকে সচেতন করার পাশাপাশি সংশ্লিষ্টরা কার্যকর ও বেশি দায়িত্বশীল ভূমিকা রাখবেন-এটাই আমাদের প্রত্যাশা।
সময়ের আলো/আরএস/