ই-পেপার সোমবার ৭ অক্টোবর ২০২৪
সোমবার ৭ অক্টোবর ২০২৪

মায়ের থেকে ২ লাখ টাকা আদায়ে অপহরণ নাটক সাজিয়ে ধরা
প্রকাশ: বুধবার, ৩ জুলাই, ২০২৪, ৫:১০ পিএম  (ভিজিট : ২৩২)
বেশ কিছুদিন বিভিন্ন মুভি ও সিরিয়াল দেখে অপহরণ করার প্র্যাকটিস চলতো। কয়েকদিন পরেই দুই বন্ধু হাবিব ও পলাশ নেমে পড়েন কাজে। নিজেদের পরিবার থেকেই মুক্তিপণ আদায়ের জন্যই এক বন্ধু অপর বন্ধুকে অপহরণের নাটক সাজিয়ে মুক্তিপণ পরিশোধের আকুতি জানানো কয়েকটি ভিডিও ক্লিপ তার মায়ের কাছে পাঠানো হয়। পরিবারের লোকজন মুক্তিপণ পরিশোধের জন্য ব্যাকুল হয়ে পড়েন। তবে পুলিশের চৌকস তদন্তে বেরিয়ে আসে থলের বিড়াল। এমনই ভয়াবহ ঘটনাটি ঘটে মেহেরপুরের গাংনীর বামন্দীতে।

পলাশ গাংনী উপজেলার দেবীপুর গ্রামের মন্টু মিয়ার ছেলে ও হাবিব একই গ্রামের মৃত মাসুমের ছেলে। পুলিশ ওই দুই বন্ধুকে আটক করে মুচলেকা নিয়ে তাদের পরিবারের জিম্মায় ছেড়ে দেয়।

জানা গেছে, বামন্দী বাজারে পলাশের ওয়েল্ডিং কারখানায় কাজ করতেন তারই বন্ধু আহসান হাবীব। পলাশের নিজের দোকান থাকলেও হাবিবের ছিল না। পিতৃহারা হাবীব মায়ের কাছে ব্যবসার জন্য টাকা চাইলেও মায়ের সামর্থ্য ছিল না। মায়ের কাছ থেকে টাকা নিতে দুই বন্ধু মিলে একটি অপহরণের নাটক করে। পলাশের ওয়েল্ডিং দোকানে বসে টিকটক, মুভি আর সিনেমা দেখে রপ্ত করে অপহরণ নাটকের।

সে অনুযায়ী গত সোমবার (১ জুলাই) সন্ধ্যায় পলাশ তার বন্ধু হাবিবের মায়ের কাছে খবর দেওয়া হয় হাবিব অপহরণ হয়েছে। তাকে মুক্ত করতে হলে দুই লাখ টাকা মুক্তিপণ দিতে হবে। সাজানো নাটকের অংশ হিসেবে হাবীবকে কাপড় দিয়ে বেঁধে টাকা দেওয়ার আকুতি জানানো ভিডিও পাঠানো হয় মাসহ অন্যান্য আত্মীয় স্বজনের কাছে। যা দেখে প্রকৃত অপহরণ মনে করে দিশেহারা হয়ে পড়েন হাবীবের মাসহ আত্মীয় স্বজন। অপহরণের বিষয়টি জানানো হয় পুলিশকে।

গাংনী থানা পুলিশের ওসির নেতৃত্বে পুলিশের একটি চৌকস টিম শুরু করেন তদন্ত। ভিডিও বিশ্লেষণ ও তথ্য প্রযুক্তির সহায়তায় পলাশ ও হাবিবের অবস্থান নিশ্চিত হয় পুলিশ। পরে বামন্দী বাজারের একটি ঘর থেকে দু’জনকে আটক করা হয়। ব্যবসার টাকার জন্য মায়ের সাথে এই নাটক বলে স্বীকার করে তারা। আটক পলাশ ও হাবিবকে তাদের পরিবারের জিম্মায় ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।

গাংনী থানার ওসি তাজুল ইসলাম জানান, তথ্য প্রযুক্তি ছাড়াও ভিডিও বিশ্লেষণে অপহরণ নাটক বোঝা যায়। পরে দুই বন্ধুর মোবাইল ফোন ট্র্যাকিং করে তাদের অবস্থান নিশ্চিত হয়েই অভিযান চালিয়ে তাদেরকে আটক করা হয়। পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে তারা সব সত্যি স্বীকার করে। পরিবারের অসচেতনতা এবং তথ্য প্রযুক্তির অপব্যবহারে যুব সমাজ বিপথে যাওয়ার চিত্রই ফুটে উঠেছে এই অপহরণ নাটকের মধ্যে। এমনটিই মনে করছেন এই পুলিশ কর্মকর্তা।

মোবাইল প্রযুক্তির অপব্যবহার আর সমাজ বিগড়ে যাওয়ার মত কন্টেন্ট দেখে বেকার যুবকদের মধ্যে আরও হতাশা বৃদ্ধি পাচ্ছে। ফলে কখনও হচ্ছে অপহরণের নাটক আবার কখনও ঘটছে প্রকৃত অপহরণের মত ঘটনা। এসব ঘটনার মধ্য দিয়ে প্রতিনিয়ত সামাজিক অবক্ষয়ের চিত্র ফুটে উঠছে বলে মনে করছেন সচেতন মহল। এ থেকে পরিত্রাণ পেতে পারিবারিক সচেতনতা ও প্রশাসনিক পদক্ষেপ জরুরি বলেও মনে করছেন তারা।

সময়ের আলো/আরআই


আরও সংবাদ   বিষয়:  অপহরণ নাটক-মুক্তিপণ দাবি   মেহেরপুর   




https://www.shomoyeralo.com/ad/1698385080Google-News-Update.jpg

সর্বশেষ সংবাদ

সর্বাধিক পঠিত


ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক: সৈয়দ শাহনেওয়াজ করিম, আমিন মোহাম্মদ মিডিয়া কমিউনিকেশন লিমিটেড এর পক্ষে প্রকাশক গাজী আহমেদ উল্লাহ
নাসির ট্রেড সেন্টার, ৮৯, বীর উত্তম সি আর দত্ত সড়ক (সোনারগাঁও রোড), বাংলামোটর, ঢাকা।

ফোন : +৮৮-০২-৯৬৩২৩৬৮-৭৪, ফ্যাক্স : +৮৮-০২-৯৬৩২৩৭৫ | ই-মেইল : shomoyeralo@gmail.com
close