ই-পেপার সোমবার ৭ অক্টোবর ২০২৪
সোমবার ৭ অক্টোবর ২০২৪

সংসদে দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি নিয়ে সমালোচনা
বাজার নিয়ন্ত্রণ না করায় বিপদে আছে সরকার
প্রকাশ: বুধবার, ৩ জুলাই, ২০২৪, ১২:৪৯ এএম  (ভিজিট : ২৬৮)
ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশনের সচিব পদের নাম পরিবর্তন করে আইন সংশোধন করা হয়েছে। মঙ্গলবার জাতীয় সংসদে ‘বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশন (সংশোধন) বিল-২০২৪’ পাস হয়। বিলটি পাসের আলোচনায় অংশ নিয়ে দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতিতে জাতীয় সংসদে সমালোচনা করেছেন জাপা ও স্বতন্ত্র সংসদ সদস্যরা।

তারা বলেছেন, সিন্ডিকেট ভেঙে দিয়ে গরিব মানুষের কাছে নিত্যপণ্যকে সহজলভ্য করা বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব। কিন্তু সিন্ডিকেট ভাঙা, দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণের মতো ক্ষমতা বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের নেই। বাজার নিয়ন্ত্রণ না করায় সরকার বিপদের মধ্যে আছে।

বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী আহসানুল ইসলাম বিলটি পাসের জন্য সংসদে তোলেন। বিলের ওপর আনা জনমত যাচাই-বাছাই কমিটিতে প্রেরণ ও সংশোধনী প্রস্তাবগুলো নিষ্পত্তি শেষে বিলটি কণ্ঠভোটে পাস হয়।
নতুন আইন অনুযায়ী বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশনের সচিব পদের নাম হবে ‘পরিচালক (প্রশাসন ও অর্থ)’। এর আগে বিলের ওপর সংশোধনী আলোচনায় জাতীয় পার্টির এমপি হাফিজ উদ্দিন আহম্মেদ বলেন, বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের কাজ হচ্ছে দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণ করা। টিসিবি নামে একটা সংস্থা আছে যারা বাজারে ন্যায্যমূল্যে পণ্য বিক্রি করে। উপজেলা পর্যায়ে দেখেছি একটা কার্ড দেওয়া হয়েছে, এটি দিয়ে পাঁচ-ছয়টা পণ্য কিনতে হবে। অনেক মানুষ এটি নিতে পারে না। যার যেটি প্রয়োজন নেই সেটিও টিসিবির কাছ থেকে নিতে হবে। এটি হচ্ছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের কাজ! যেখানে যা প্রয়োজন নেই সেটিও নিতে হবে, যা প্রয়োজন তাও নিতে হবে। এ আইন না এনে বাজার নিয়ন্ত্রণ করার কোনো আইন নিয়ে আসতেন, সিন্ডিকেট ভাঙার মতো কোনো আইন আনতেন-তা হলে মনে করতাম বাণিজ্য মন্ত্রণালয় ভালো কোনো কাজ করছে। বিভিন্ন সময় তারা বাজার নিয়ন্ত্রণ করার চেষ্টা করে। যখন তারা যান তখন বাজারটা ঠিক আছে। কিন্তু তারা চলে এলে আবার যে অবস্থায় ছিল সেই অবস্থায় চলে যায়। দ্বিগুণ বাড়ে। সিন্ডিকেট ভাঙা, দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণের মতো ক্ষমতা বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের আছে বলে আমার জানা নেই।

বাজারে সব পণ্যের দাম বেড়েছে বলে জানান হাফিজ উদ্দিন আহম্মেদ। তিনি বলেন, ওষুধের দাম লাগামহীনভাবে বাড়ছে। কোম্পানিগুলো কোটি কোটি টাকা লাভ করে কোথায় নিয়ে যাবে জানি না। ওষুধ কোম্পানিগুলো শুল্ক ফাঁকি দিয়ে, কম শুল্ক দিয়ে কাঁচামাল নিয়ে আসে কিন্তু আমাদের দেশে দাম বেশি। ওষুধের দাম নিয়ন্ত্রণ করা গেলে মানুষ সুচিকিৎসা পেত। আইন করে ক্যানসারের ওষুধের দাম, কিডনি চিকিৎসা কমাবার কথা বলা হচ্ছে। এ কোম্পানিগুলো কি বাইরের? এটি কি ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি? আমাদের দেশি মালিক। এদের কি বিবেক নেই। কত শতাংশ লাভ করছে? ১০০ শতাংশ লাভ করে। যারা দোকানে বিক্রি করে ৩০-৪০ শতাংশ কর দেয়। অনেক ওষুধের মধ্যে দাম লেখা থাকে না। সে জন্য বাণিজ্য মন্ত্রণালয়কে অনুরোধ করব বাজার নিয়ন্ত্রণ করুন। মানুষের যে হাহাকার অবস্থা। আওয়ামী লীগের এত উন্নয়ন ও অর্জনের পরেও বাজার নিয়ন্ত্রণ না করায় সরকার বিপদের মধ্যে আছে।

স্বতন্ত্র এমপি পংকজ নাথ বলেন, বিলটিতে জনগণের স্বার্থ নেই। এখানে শুধু শব্দের পরিবর্তন। জনগণের স্বার্থ তখনই থাকত যদি ট্যারিফ কমিশনের দায়িত্ব ভোগ্যপণ্য, নিত্যপণ্যের দাম নির্ধারণ, বাজারে সহজলভ্যতা, আমদানি ও উৎপাদন সমন্বয় করে মানুষের কাছে সহজে পৌঁছে দেওয়া। সিন্ডিকেট ভেঙে দিয়ে গরিব মানুষের কাছে নিত্যপণ্যকে সহজলভ্য করা। সে ক্ষেত্রে সরকারকে পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে ট্যারিফ কমিশনের কাজ বাড়াতে। ট্যারিফ কমিশন তা না করে শুধু সচিবের পদ। গতকালও আমরা ইউনিয়ন পরিষদে সচিব শব্দ বাদ দিয়ে কর্মকর্তা লিখলাম। একটা কাজ করা যায় সংসদের মতো গুরুত্বপূর্ণ জায়গায় পয়সা খরচ না করে একটি প্রশাসনিক আদেশে বলে দেই সব সচিব কোথায় কোথায় বলতে হবে, মন্ত্রিসভা বলে দিক, সচিব বলে দিক, আমরা করে দেই। যেখানে জনগণের স্বার্থ নেই, একটা মাত্র সচিবের পদ থেকে কর্মকর্তা এ শব্দের পরিবর্তন করার জন্য সংসদের সাড়ে তিনশ এমপিকে ডেকে এনে, প্রধানমন্ত্রীকে সামনে রেখে শব্দ পরিবর্তন করে অর্থের অপচয়।

সময়ের আলো/আরএস/ 




https://www.shomoyeralo.com/ad/1698385080Google-News-Update.jpg

সর্বশেষ সংবাদ

সর্বাধিক পঠিত


ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক: সৈয়দ শাহনেওয়াজ করিম, আমিন মোহাম্মদ মিডিয়া কমিউনিকেশন লিমিটেড এর পক্ষে প্রকাশক গাজী আহমেদ উল্লাহ
নাসির ট্রেড সেন্টার, ৮৯, বীর উত্তম সি আর দত্ত সড়ক (সোনারগাঁও রোড), বাংলামোটর, ঢাকা।

ফোন : +৮৮-০২-৯৬৩২৩৬৮-৭৪, ফ্যাক্স : +৮৮-০২-৯৬৩২৩৭৫ | ই-মেইল : shomoyeralo@gmail.com
close