প্রকাশ: সোমবার, ২৪ জুন, ২০২৪, ৮:৪১ পিএম (ভিজিট : ৩৬২)
ভোলা সদর উপজেলা নৌ-থানা পুলিশের ওসির রুমেই পুলিশের এক কর্মকর্তা পিস্তলের গুলিতে গুলিবিদ্ধ হওয়ার ঘটনায় সর্বত্র চলছে আলোচনা ও সমালোচনা। উপজেলার পূর্ব ইলিশা নৌ-থানার মধ্যে নিজের পিস্তল থেকে বের হওয়া গুলিতে আহত হন পুলিশের সহকারী উপ-পরিদর্শক (এএসআই) মো. মোক্তার হোসেন মিঞা (৪৫)। তিনি বরিশালে মেডিকেলে চিকিৎসাধীন রয়েছে। তবে তিনি এখনো শঙ্কামুক্ত নন।
জানা গেছে, তার পেটের সামনে দিয়ে গুলি ঢুকে পেছন দিয়ে বের হয়েছে। শেবাচিম হাসপাতালে টানা ৫ ঘণ্টা তার অস্ত্রোপচার হয়। অস্ত্রোপচার শেষে চিকিৎসক জানিয়েছেন এখনো শঙ্কামুক্ত নন তিনি।
সোমবার (২৪ জুন) দুপুর ১টার দিকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন নৌ-পুলিশের বরিশাল অঞ্চলের পুলিশ সুপার মো. কাফিল উদ্দিন।
তিনি জানান, মোক্তার হোসেন মিঞা গুলিবিদ্ধ হওয়ার পর প্রথমে তাকে ভোলা সদর হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখান থেকে তাৎক্ষণিক তাকে বরিশাল শেরে-বাংলা (শেবাচিম) হাসপাতালে নিয়ে ভর্তি করা হয়। রাত ৯টার দিকে গুলিবিদ্ধ স্থানে তার অস্ত্রোপচার শুরু হয়। প্রায় ৫ ঘণ্টা অস্ত্রোপচার শেষে রাত ১টা ৪৫ মিনিটের দিকে অপারেশন থিয়েটার থেকে বের করা হয়। এরপর তাকে নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্র (আইসিইউ) রাখা হয়। এখনো তার জ্ঞান ফেরেনি। চিকিৎসক জানিয়েছে, তিনি এখনো শঙ্কামুক্ত নন। সকালে তাকে আরও ৫টি টেস্ট দেওয়া হয়েছে। এখন সেই পরীক্ষাগুলো করানো হচ্ছে।
পুলিশের এ কর্মকর্তা আরও জানান, মোক্তার হোসেন মিঞাসহ আরও দুই পুলিশ কনস্টেবলের ডিউটি পড়েছে চট্টগ্রামের কাপ্তাই লেকে। এটি নিয়মিত ডিউটি। নৌ-পুলিশকে মাঝেমধ্যে এক জায়গা থেকে অন্য জায়গায় গিয়ে ডিউটি করতে হয়। কয়েকদিন ডিউটি করে তিনি সঙ্গীয় ফোর্স নিয়ে পুনরায় ইলিশা নৌ-থানায় চলে আসার কথা ছিল। তারই ধারাবাহিকতায় গতকাল (রোববার ঘটনার দিন) বিকেলে তিনিসহ তার সঙ্গীয় ফোর্স কাপ্তাইয়ের উদ্দেশ্যে বের হওয়ার সময় নিজেদের নামে ইস্যুকৃত অস্ত্র বুঝে নেয়। মোক্তার হোসেন মিঞার অস্ত্রটি ছিল তারাশ পিস্তল ৯ এম এম। টেবিল থেকে অস্ত্রটি নেওয়ার সময় ট্রিগারে হাত লেগে একটি মিস ফায়ার হয়ে যায়। গুলিটি তার পেটের ডান পাশ দিয়ে ঢুকে, কোমড়ের কাছাকাছি বাম পাশ হয়ে পেছন দিয়ে বের হয়ে যায়। এতে তার পেটের মধ্যে ক্ষত সৃষ্টি হয়। যেহেতু গুলিটি এক পাশ দিয়ে ঢুকে, আরেক পাশ দিয়ে বের হয়েছে। সেহেতু বিষয়টি খুবই জটিল। চিকিৎসক বলছে, এখনো তাকে শঙ্কামুক্ত বলা সম্ভব না। বাকিটা আল্লাহর হাতে।
ডিউটি সংক্রান্ত কোনো বিরোধ নিয়ে থানার ওসি অথবা অন্য কারো সঙ্গে মনোমালিন্যর জেরে এ ঘটনা ঘটেছে কিনা, জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘না, এমন কোনো ঘটনা ঘটেনি। এটি একটি মিস ফায়ার। এছাড়া অন্য কিছু না।’ যে পিস্তল থেকে গুলি বের হয়েছে, সেটি কেন লোড করা ছিল, জানতে চাইলে কফিল উদ্দিন বলেন, পিস্তলটি লোড কিভাবে-কেন হয়েছে, তা ঠিক এ মুহূর্তে বলা যাচ্ছে না। সেফটি লক করা থাকলে ট্রিগারে ভুলবশত চাপ পড়লেও গুলি বের হয়ে আসবে না। তারপরও আসলে ঘটনাটি কিভাবে ঘটল- কেন ঘটল এটি তদন্তের বিষয়। এ ঘটনায় অবশ্যই তদন্ত হবে। তদন্ত শেষে আপনার এসব প্রশ্নের উত্তর দেয়া যাবে।
উল্লেখ, গতকাল রোববার (২৩ জুন) বিকেল ৪টার দিকে ভোলা সদর উপজেলার পূর্ব ইলিশা নৌ-থানার মধ্যে নিজের নামে ইস্যু করা তারাশ পিস্তল থেকে গুলিবিদ্ধ হন ওই থানায় কর্মরত পুলিশের সহকারী উপ-পরিদর্শক (এএসআই) মোক্তার হোসেন মিঞা। তিনি দুই বছর ধরে ওই থানায় কর্মরত। তার গ্রামের বাড়ি চট্টগ্রামের মিরসরাই।
সময়ের আলো/আরআই