ই-পেপার সোমবার ৭ অক্টোবর ২০২৪
সোমবার ৭ অক্টোবর ২০২৪

নবনিযুক্ত সেনাপ্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান
দেশ ও জনগণের প্রয়োজনে সেনাবাহিনী সর্বদা প্রস্তুত
প্রকাশ: সোমবার, ২৪ জুন, ২০২৪, ১:৫০ এএম আপডেট: ২৪.০৬.২০২৪ ৪:০১ এএম  (ভিজিট : ৪৯১)
দেশ ও জনগণের প্রয়োজনে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী সর্বদা প্রস্তুত রয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন নবনিযুক্ত সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান। বাংলাদেশ সেনাবাহিনী প্রধানের দায়িত্ব গ্রহণের পরই রোববার বিকালে সেনাসদরে নিজ কার্যালয়ে গণমাধ্যমকর্মীদের উদ্দেশে তিনি এ কথা বলেন।

এ বিষয়ে তিনি বলেন, দেশ ও জনগণের প্রয়োজনে যখনই প্রয়োজন হবে জাতীয়তার স্বার্থে আমরা (সেনাবাহিনী) সর্বদা নিয়োজিত থাকব। ফলে সেভাবেই সেনাবাহিনীকে সার্বক্ষণিক প্রস্তুত রাখা হয়েছে। দেশ-জাতি গঠনে যখনই আমাদের নিয়োগ দেওয়া হবে সে কাজগুলো আমরা যথাযথভাবে করব।

প্রধান কাজ সেনাবাহিনীকে সবসময় যুদ্ধের জন্য প্রস্তুত রাখা : সেনাবাহিনী প্রধান বলেন, সেনাপ্রধান হিসেবে আমার প্রধান কাজ হচ্ছে সেনাবাহিনীকে সবসময় যুদ্ধের জন্য প্রস্তুত রাখা। বিভিন্ন চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় প্রস্তুত রাখা। সেই কাজটিই ইনশাআল্লাহ আমি করে যাব। এ ছাড়াও সেনাবাহিনী ‘ইন এইড টু সিভিল পাওয়ার’ এর দায়িত্ব পালন করে থাকে। সরকার যদি আমাদের সেই দায়িত্ব দেয় তা হলে আমরা নিষ্ঠার সঙ্গে সেটি পালন করব। দুর্যোগ মোকাবিলায় যখন সরকার কোনো দায়িত্ব দেবে সেটিও আমরা আরও ভালোভাবে পালন করব। জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান আরও বলেন, বিশ্ব শান্তির জন্য আমরা কাজ করে যাচ্ছি। আমরা জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনে নিযুক্ত থেকে অপারেশন পরিচালনাসহ শান্তিরক্ষায় কাজ করে যাচ্ছি। ইতিপূর্বে যারা সেনাবাহিনীর নেতৃত্বে ছিলেন তারা নিজেদের মেধা ও শ্রম দিয়ে সেনাবাহিনীকে অনেকটা এগিয়ে নিয়ে গেছেন। সেনাবাহিনীকে একটি সুন্দর জায়গায় পেয়েছি। ভবিষ্যতে সেনাবাহিনীকে আরও এগিয়ে নিয়ে যেতে চাই।

মিয়ানমার বাড়াবাড়ি রকমের কিছু করবে না, তবুও সেনাবাহিনী প্রস্তুত আছে : সাম্প্রতিক সময়ে সেন্টমার্টিনের আশপাশে মিয়ানমারের সামরিক বাহিনীর অবস্থান ও রোহিঙ্গা সংকটের প্রসঙ্গ আনলে সেনাবাহিনী প্রধান বলেন, আমরা সব দেশের সঙ্গে যুক্ত আছি। মিয়ানমারের সঙ্গেও আমরা যুক্ত আছি এবং আমাদের ভালো যোগাযোগ আছে। প্রতিনিয়ত তাদের সরকারের সঙ্গে আমাদের যোগাযোগ আছে। আমাদের মধ্যে বোঝাপড়াও আছে। তারা নিজেরাই নিজেদের দেশের ভেতরে ‘সিভিল ওয়ারে’ নিয়োজিত আছে। ফলে অন্তত আমি মনে করি না যে, তারা আমাদের সঙ্গে অতি বাড়াবাড়ি রকমের কিছু করবে।তারপরও সেনাবাহিনী সবসময় এ বিষয়ে প্রস্তুত আছে। নৌবাহিনী সেখানে আছে, তারাও সেখানে টহল বাড়িয়েছে। তারা ‘ফ্রিগেড’ পাঠিয়ে সবসময় ‘পেট্রোলিং’ করছে। সেন্টমার্টিনসেও তারা মোতায়েন আছে, যেখানে আগেও ছিল।

সেনাপ্রধান বলেন, ‘আমরা কোনো বৈরী পরিস্থিতি বাড়াতে চাচ্ছি না। তা ছাড়া তাদের প্রতি আমাদের অন্য কোনো ধরনের বিদ্বেষ বা সমস্যা আমি দেখি না। এখানে ‘ডিফেন্স ডিপ্লোমেসি’ বলে একটি কথা আছে। যখন দুই দেশের বাহিনী একে অন্যের সঙ্গে যোগাযোগ করে, আলোচনার মধ্যে থাকে; তখন হঠাৎ করে কোনো ফোর্সের পক্ষে যুদ্ধ শুরু করা খুব কঠিন। এটি হয় না। ডিফেন্স ডিপ্লোমেসি খুব গুরুত্বপূর্ণ, আমরা সেটি অব্যাহত রেখেছি। আমরা কখনো হতাশ নই। আমি মনে করি, একদিন না একদিন এ সমস্যার সমাধান হবে। এ জন্য আমরা তাদের সঙ্গে যুক্ত আছি এবং শান্তিপূর্ণ উপায়ে আমরা রোহিঙ্গাদের ইস্যুটির সমাধান করতে চাচ্ছি।’

সেনাবাহিনীকে সুশৃঙ্খল রাখতে কাজ করে যাব : সেনাপ্রধান হিসেবে এ মুহূর্তে বড় চ্যালেঞ্জ কোনট-এমন প্রশ্নে সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান বলেন, ‘আমার আগে, অতীতে যারা সেনাপ্রধান হিসেবে কাজ করেছেন তারা ভালোভাবে কাজ করেছেন। তারপরও শৃঙ্খলার একটি ইস্যু থেকেই যায়। সেনাবাহিনীকে সবসময় সুশৃঙ্খল রাখতে আমি কাজ করে যাব। এ ছাড়া প্রশিক্ষণ আমরা সবসময় করছি, এই প্রশিক্ষণ যাতে সবসময় চালু থাকে সে দিকটা আমি দেখব।’ তিনি বলেন, আমরা বর্হিবিশ্ব নিয়ে সবসময় চ্যালেঞ্জিং দায়িত্ব পালন করছি। আমাদের অফিসার সৈনিকরা সবসময় কাজ করে যাচ্ছে। এটিকে একটা চ্যালেঞ্জ হিসেবে নিয়ে সামনে এগিয়ে যাব। যদিও এসবকে আমি চ্যালেঞ্জ হিসেবে দেখছি না।

গণমাধ্যম সেনাবাহিনীর জন্য গুরুত্বপূর্ণ ব্যাপক রাখে : গণমাধ্যমের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে নবনিযুক্ত সেনাপ্রধান বলেন, অতীতে সেনাবাহিনী প্রধানরা এভাবে গণমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলেননি। বিগত দুজন সেনাপ্রধান কেবল গণমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলেন। সেখান থেকে আমি অনুধাবন করেছি যে, গণমাধ্যম সেনাবাহিনীর জন্য, দেশের জন্য সবসময় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। তাই গণমাধ্যমের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি। ভবিষ্যতে আমরা একসঙ্গে দায়িত্ব পালন করব। সেনাবাহিনী থেকে কোনো বিকৃত বা অসত্য তথ্য দেওয়া হবে না। সবসময় সঠিক ও সত্য তথ্যই দেওয়া হবে। তবে সেনাবাহিনী যেহেতু রাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ তাই অনেক সময় কিছু সংবেদনশীল তথ্য প্রচারের ক্ষেত্রে গণমাধ্যমকে দায়িত্বশীল আচরণ করতে হবে। ওই তথ্য প্রচারের কারণে যাতে কোনোভাবেই সৈনিকদের মনোবল ভেঙে না পড়ে। সেনাবাহিনীর মনোবল ভেঙে পড়বে এমন কোনো তথ্য বা খবর প্রচার না হয় সেদিকে আপনারা (গণমাধ্যমকর্মী) বিশেষ খেয়াল রাখবেন, সে অনুরোধ রইল। প্রয়োজনে যেকোনো তথ্য পেলে তা যাচাই করতে বা যথাযথ বক্তব্যের সরাসরি ‘আইএসপিআরে’ যোগাযোগ করতে হবে। তারা এ জন্য দায়িত্বশীল হিসেবে সঠিক তথ্য দেবে।

প্রধানমন্ত্রীর প্রতি বিশেষ কৃতজ্ঞতা প্রকাশ : সেনাবাহিনী প্রধানের দায়িত্ব দেওয়ায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রতি বিশেষ কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান। এ সময় তিনি আরও বলেন, আমি বঙ্গবন্ধুর প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি। কেননা তিনি স্বাধীন বাংলাদেশ এনে না দিলে আজ আমি স্বাধীন দেশের সেনাবাহিনী প্রধান হতে পারতাম না। কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি আমার সব কমান্ডিং অফিসার ও সিনিয়রদের, যাদের কাছ থেকে আমি নিষ্ঠার সঙ্গে, দক্ষতার সঙ্গে দায়িত্ব পালন করতে শিখেছি।

ঢাকা সেনানিবাসে সেনাসদরে সেনাবাহিনী প্রধানের কার্যালয়ে আয়োজিত ওই মতবিনিময়কালে আরও উপস্থিত ছিলেন সেনাবাহিনী সদর দফতরের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা, আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদফতরের (আইএসপিআর) পরিচালক লে. কর্নেল আবু হায়দার মোহাম্মদ রাসেলুজ্জামান, ডিফেন্স জার্নালিস্ট অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ডিজাব) সভাপতি ও দৈনিক সময়ের আলোর বার্তা প্রধান আলমগীর হোসেন, ডিজাবের সাবেক সভাপতি ও ইত্তেফাকের সিটি এডিটর আবুল খায়েরসহ প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক্স মিডিয়ার সাংবাদিকরা।

সময়ের আলো/আরএস/ 





https://www.shomoyeralo.com/ad/1698385080Google-News-Update.jpg

সর্বশেষ সংবাদ

সর্বাধিক পঠিত


ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক: সৈয়দ শাহনেওয়াজ করিম, আমিন মোহাম্মদ মিডিয়া কমিউনিকেশন লিমিটেড এর পক্ষে প্রকাশক গাজী আহমেদ উল্লাহ
নাসির ট্রেড সেন্টার, ৮৯, বীর উত্তম সি আর দত্ত সড়ক (সোনারগাঁও রোড), বাংলামোটর, ঢাকা।

ফোন : +৮৮-০২-৯৬৩২৩৬৮-৭৪, ফ্যাক্স : +৮৮-০২-৯৬৩২৩৭৫ | ই-মেইল : shomoyeralo@gmail.com
close