ই-পেপার সোমবার ৭ অক্টোবর ২০২৪
সোমবার ৭ অক্টোবর ২০২৪

প্রতিবন্ধীর ভাতা নিয়ে নয়ছয়, ভুল নাম্বারে যাচ্ছে ভুক্তভোগীদের টাকা
প্রকাশ: রবিবার, ২৩ জুন, ২০২৪, ৪:১৫ পিএম আপডেট: ২৩.০৬.২০২৪ ৪:১৯ পিএম  (ভিজিট : ৬০৩)
রাজশাহীর মোহনপুর উপজেলার অসুস্থ প্রতিবন্ধীদের ভাতার টাকা প্রতারণার মাধ্যমে হাতিয়ে নিচ্ছে একটি চক্র। সম্প্রতি এমন কয়েকটি ঘটনার অভিযোগ পাওয়া গেছে। ভুক্তভোগীদের অভিযোগ, নিজের ব্যবহৃত ফোন নাম্বার দিয়ে আবেদন করেও তারা ভাতার টাকা পাচ্ছেন না। তাদের টাকা প্রতারণা করে অন্য নাম্বারে নিচ্ছেন একটি চক্র। সমাজসেবা অফিস সংশ্লিষ্টরা মোবাইল নাম্বার চেঞ্জ করে এমন প্রতারণা করছেন বলেও অভিযোগ করছেন ভুক্তভোগীরা।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, অসুস্থ প্রতিবন্ধীদের ১০ হাজার ২০০ টাকা ভাতা প্রদান করছে সরকার। আর কাগজপত্র যাচাই-বাছাই করে কেবল যারা অসহায় ও অসুস্থ বা কঠিন দুরারোগ্যে ভুগছেন তারাই পাচ্ছেন চিকিৎসা সেবার সহায়তা ভাতা। অসুস্থ ব্যক্তি কিন্তু তার চিকিৎসা খরচের জোগাড় নেই এমন ব্যক্তির বাইরে ভাতা পাওয়ার কোন সুযোগ নেই। তারা একটি চক্রের প্রতারণার শিকার হচ্ছেন। কেননা তাদের নামে বরাদ্দকৃত টাকা সরকার ঠিকঠাক দিলেও তা পাচ্ছেন অন্য কেউ।

জানা গেছে, উপজেলার কেশরহাট পৌরসভার ফুলশো গ্রামের বাসিন্দা মতিউর রহমান। তিনি দীর্ঘদিন ধরেই অসুস্থ। চিকিৎসা ব্যয় মেটাতে ছেলে মোমিনকে দিয়ে চিকিৎসার কাগজপত্র পাঠিয়ে ভাতার আবেদন করেন। এরপর তাকে উপজেলা সমাজসেবা অফিস থেকে একটি পরিচয় পত্র প্রদান করা হয়। নির্ধারিত সময় পার হলে তিনি সমাজসেবা অফিসে যোগাযোগ করেন। সমাজসেবা অফিস জানায় যে, তিনি টাকা পেয়েছেন। এরপর তিনি সমাজসেবা অফিসের কর্মকর্তাকে টাকা পাননি জানালে কাগজপত্র ঘেটে তারা জানায় টাকা অন্য এক বিকাশ নাম্বারে ঢুকে গেছে। এর কারণ জানতে চাইলে ভুক্তভোগীর সাথে খারাপ আচরণ করেন সমাজসেবায় কর্মরত স্টাফরা। একপর্যায়ে ভুক্তভোগী মতিউর থানা পুলিশের দ্বারস্থ হলে জানতে পারেন, তার নামে বরাদ্দকৃত টাকা চলে গেছে পার্শ্ববর্তী ধুরইল ইউপির অন্য কারো বিকাশ একাউন্টে। ঐ ফোন নাম্বারে যোগাযোগ করা হলে সে টাকা পাওয়ার বিষয়টি প্রথমে শিকার করলেও পরবর্তী ফোন নাম্বারটি অনবরত বন্ধ পাওয়া যায়।

সম্প্রতি এমন ঘটনার শিকার হয়েছেন একই এলাকার আরও কয়েকজন ভুক্তভোগী। বাকশিমইল ইউপির মতিহার গ্রামের মমতাজ বিবি ও সাহিনা খাতুন। তাদেরও এ একই হাল। ঠিকঠাক আবেদন করে কাগজপত্র জামা দিয়েছেন। কিন্তু শেষ পর্যন্ত তারা টাকা পাননি। সেই টাকা পান অন্য কেউ। এমন কয়েকটি অভিযোগ উপজেলা সমাজসেবা অফিসে আসলে তারা ফোন নাম্বারটি পরিবর্তনের আবেদন করতে বলে একটি আবেদন ফরম হাতে ধরিয়ে দিয়ে তা পূরণ করে আনতে বলেন। তবে অন্য নাম্বারে চলে যাওয়া টাকা ভুক্তভোগীরা আর ফেরত পাননি। এমনকি সে বিষয়ে কোন পদক্ষেপ নিতে দেখা যায়নি সমাজসেবা সংশ্লিষ্টদের। এক উপজেলায় অন্তত বেশ কয়জন ভুক্তভোগী এ প্রতারণার শিকার হয়েছেন। প্রতারণার শিকার ভুক্তভোগীরা এর থেকে পরিত্রাণ চেয়েছেন।

এ ঘটনায় উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা ইমাম হাসান শামীম বলছেন, যেসব নম্বর সঠিক নয় বলে ভাতাভোগীরা দাবি করছেন- সেসব নম্বরের ট্রানজেকশন বন্ধ রাখা হয়েছে কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে। কিছুদিন পর সে টাকাগুলো প্রকৃত ভাতাভোগীদের ফিরিয়ে দেওয়া হবে মোবাইল ব্যাংকিং কোম্পানির সহায়তায়। তবে আমরা মোবাইল ব্যাংকিং কোম্পানির কাছে চিঠি পাঠিয়েছি। আশা করছি আগামী সপ্তাহে ভুল নাম্বারে চলে যাওয়া টাকা ভুক্তভোগীরা ফেরত পাবে। ১৪ হাজার ভাতাভোগীর ফোন নাম্বার তুলতে গিয়ে হয়তো ২/১ টা ভুল হয়েছে। এখন পর্যন্ত ৬/৭ টা অভিযোগ এসেছে। এছাড়াও হ্যাকাররা ফোন নাম্বার হ্যাক করে নাম্বার চেঞ্জ করে ফেলছেন।

বিষয়টি খতিয়ে দেখবেন বলে তিনি জানান। অনেকক্ষেত্রে আবেদনের সময় নাম্বার ভুল করা হচ্ছে। যারা আবেদন করে দিচ্ছেন তারা একাজে জড়িত বলে ধারণা করা হচ্ছে।

সময়ের আলো/আরআই


আরও সংবাদ   বিষয়:  প্রতিবন্ধীর ভাতা নিয়ে নয়ছয়   মোহনপুর-রাজশাহী  




https://www.shomoyeralo.com/ad/1698385080Google-News-Update.jpg

সর্বশেষ সংবাদ

সর্বাধিক পঠিত


ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক: সৈয়দ শাহনেওয়াজ করিম, আমিন মোহাম্মদ মিডিয়া কমিউনিকেশন লিমিটেড এর পক্ষে প্রকাশক গাজী আহমেদ উল্লাহ
নাসির ট্রেড সেন্টার, ৮৯, বীর উত্তম সি আর দত্ত সড়ক (সোনারগাঁও রোড), বাংলামোটর, ঢাকা।

ফোন : +৮৮-০২-৯৬৩২৩৬৮-৭৪, ফ্যাক্স : +৮৮-০২-৯৬৩২৩৭৫ | ই-মেইল : shomoyeralo@gmail.com
close