ই-পেপার সোমবার ৭ অক্টোবর ২০২৪
সোমবার ৭ অক্টোবর ২০২৪

খুলনায় কুরবানির পশুর চামড়া নিয়ে বিপাকে ব্যবসায়ীরা
প্রকাশ: বুধবার, ১৯ জুন, ২০২৪, ৬:৪৭ পিএম  (ভিজিট : ৩৮৮)
খুলনা শেখপাড়া চামড়াপট্টিতে এখন কোনো চামড়ার দোকান নেই। চামড়া ব্যবসায়ীরা রাস্তার পাশে দাঁড়িয়ে চামড়া সংরক্ষণ করেছেন। গত পাঁচ বছরে চামড়া বেচাকেনার জন্য নতুন কোনো বাজারও তৈরি হয়নি। ফলে সংরক্ষণের জায়গা না থাকায় প্রতিবছর কুরবানির ঈদে বিপুল সংখ্যক চামড়া নিয়ে বিপাকে পড়ছেন ব্যবসায়ীরা। এ অবস্থায় এবারও শেরে বাংলা সড়ক এবং শেখপাড়া বি কে রায় সড়কেই চামড়া সংরক্ষণের করছেন তারা।

কুরবানির পশুর চামড়া বিক্রি হয়েছে সর্বনিম্ন ১০০ থেকে ১ হাজার টাকা পর্যন্ত। পাইকারদের সঙ্গে দর কষাকষি করেই চামড়া কেনা-বেচা করেছেন মৌসুমি ব্যবসায়ীরা। 

লবণচরা হাজী আব্দুল মালেক ছালেহিয়া দারুস সুন্নাত দাখিল মাদরাসার ভারপ্রাপ্ত সুপার মাওলানা মো. শাফায়াতুল ইসলাম বলেন, ‘এ বছর তাদের প্রতিষ্ঠান মোট ১০১টি গরুর চামড়া সংগ্রহ করেছে। যার মধ্যে ছোট সাইজের প্রতিটি গরুর চামড়া ৩০০ টাকা এবং বড় সাইজের চামড়া প্রতিটি সাড়ে ৫০০ টাকা করে বিক্রি করেছেন।’

ব্যবসায়ীরা জানান, সংরক্ষণের স্থানে দুর্গন্ধ তৈরি হওয়ায় আবাসিক এলাকায় কেউ চামড়ার দোকান ভাড়া দিতে চান না। খুলনা সিটি করপোরেশনের (কেসিসি) কাছে বারবার তারা চামড়া বেচাকেনার জন্য পৃথক মার্কেট তৈরির দাবি জানাচ্ছেন। কিন্তু আশ্বাস দিয়েও কেসিসি তা রাখেনি। এর মধ্যেই আরেকটি কুরবানির ঈদ চলে আসায় এবারও বিপুল সংখ্যক চামড়া সংরক্ষণ নিয়ে সমস্যায় পড়তে হবে তাদের।

এ ছাড়া খুলনার চামড়া ব্যবসায়ীদের বিপুল পরিমাণ টাকা ঢাকার ট্যানারি মালিক ও আড়তদারদের কাছে বকেয়া রয়েছে। এ ঈদে ও টাকা কেউ পরিশোধ করেননি। ফলে এ বছর চামড়া কেনার মতো পুঁজি ছিলনা। কেউ কেউ সুদে টাকা ধার নিয়ে চামড়া কিনছেন। ব্যাংকও চামড়া ব্যবসায়ীদের ঋণ দেয় না। ফলে সংরক্ষণের জায়গার মতো পুঁজি সংকটে ভুগছেন তারা।

চামড়া ব্যবসায়ীরা জানান, বর্তমানে নগরীর জিরো পয়েন্টে দুটি গুদামে এবং নগরীর ট্রাক টার্মিনালের পাশে এক ব্যবসায়ীর বাড়িতে চামড়া মজুত করা হয়। ছোট ব্যবসায়ীরা সারা বছর চামড়া কিনে এ দুই স্থানেই মজুত করেন। কিন্তু কুরবানির ঈদে বিপুল পরিমাণ চামড়া আসায় সেখানে মজুত রাখা সম্ভব হচ্ছে না।

খুলনা কাঁচা চামড়া ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক কার্তিক ঘোষ বলেন, সংরক্ষণের জায়গা না থাকায় প্রতিদিন কসাইখানা থেকেই চামড়া বিক্রি করে দেওয়া হয়। কিছু কসাই মাংসের দোকানে স্বল্প পরিসরে চামড়া সংরক্ষণ করেন। সংরক্ষণের জায়গা না থাকায় অধিকাংশ ব্যবসায়ী ব্যবসা থেকে নিজেদের গুটিয়ে নিয়েছেন। 

কাঁচা চামড়া ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি আবদুস সালাম ঢালী বলেন, এ বছর ৫০ হাজার থেকে ৬০ হাজার টাকা মূল্যের গরুর চামড়া ১০০ থেকে ২০০ টাকা, ৮০ হাজার থেকে ৯০ হাজার টাকা মূল্যের গরুর চামড়া ৫০০ টাকা এবং লাখ বা তার ওপরের চামড়া সর্বোচ্চ ৬০০ টাকা করে প্রতি পিস কেনা হয়েছে। তারপরও প্রতিটি চামড়া সংরক্ষণ করতে ২০০ থেকে ৩০০ টাকা খরচ রয়েছে। কুরবানির ঈদকে টার্গেট করে প্রতি বছরের মত এবারও বস্তা প্রতি ২০০ টাকা থেকে ১ হাজার টাকা পর্যন্ত লবণের দাম বাড়ানো হয়েছে। ফলে জরুরি প্রয়োজনে চামড়া ব্যবসায়ীরা অতিরিক্ত অর্থেই লবণ কিনতে বাধ্য হয়েছেন।

তিনি আরও বলেন, সরকারের বিভিন্ন দপ্তরের কর্মকর্তাদের অবহেলায় খুলনার চামড়া ব্যবসা ধ্বংস হয়ে গেছে। গত সাত-আট বছর ধরে আমরা চামড়ার জন্য পৃথক মার্কেট তৈরির দাবি জানাচ্ছি। কেউ আমাদের ডাকে সাড়া দেয় না। এ অবস্থায় চামড়া ব্যবসার জন্য পৃথক মার্কেট, ঈদে চামড়া সংরক্ষণে নির্ধারিত জায়গা, ট্যানারি মালিক ও আড়তদারের কাছ থেকে বকেয়া পরিশোধের উদ্যোগ নিতে হবে।

এ বিষয়ে খুলনা সিটি মেয়র তালুকদার আবদুল খালেক মোবাইল ফোনে বলেন, বিশ্বব্যাংকের অর্থায়নে খুলনায় আধুনিক কসাইখানা নির্মাণের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এর আশপাশে চামড়ার জন্য পৃথক মার্কেট তৈরির বিষয়টি বিবেচনায় রয়েছে।

সময়ের আলো/আরআই


আরও সংবাদ   বিষয়:  কুরবানির পশুর চামড়া   চামড়া ব্যবসা   ট্যানারি শিল্প   খুলনা  




https://www.shomoyeralo.com/ad/1698385080Google-News-Update.jpg

সর্বশেষ সংবাদ

সর্বাধিক পঠিত


ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক: সৈয়দ শাহনেওয়াজ করিম, আমিন মোহাম্মদ মিডিয়া কমিউনিকেশন লিমিটেড এর পক্ষে প্রকাশক গাজী আহমেদ উল্লাহ
নাসির ট্রেড সেন্টার, ৮৯, বীর উত্তম সি আর দত্ত সড়ক (সোনারগাঁও রোড), বাংলামোটর, ঢাকা।

ফোন : +৮৮-০২-৯৬৩২৩৬৮-৭৪, ফ্যাক্স : +৮৮-০২-৯৬৩২৩৭৫ | ই-মেইল : shomoyeralo@gmail.com
close