ই-পেপার সোমবার ৭ অক্টোবর ২০২৪
সোমবার ৭ অক্টোবর ২০২৪

দাফনের ৩৬ দিন পর যুবকের মরদেহ উত্তোলন, চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে মামলা
চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা দায়ের
প্রকাশ: বুধবার, ১২ জুন, ২০২৪, ৬:৩২ পিএম  (ভিজিট : ২০২)
নোয়াখালীর কবিরহাট উপজেলায় মৃত্যুর ৩৬ দিন পর মো.আলাউদ্দিন (২৫) নামে এক যুবকের মরদেহ কবর থেকে উত্তোলন করা হয়েছে।
 
বুধবার (১২ জুন) দুপুরের দিকে উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট অমৃত দেবনাথের উপস্থিতিতে উপজেলার বাটইয়া ইউনিয়নের ২ নম্বর ওয়ার্ডের বাটইয়া গ্রামের একটি কবরস্থান থেকে মরদেহটি উত্তোলন করা হয়। এর আগে, গত ১ মে উপজেলার যাদবপুর গ্রামে কবিরহাট উপজেলার নরোত্তমপুর ইউনিয়নের বর্তমান চেয়ারম্যান এ.কে.এম সিরাজ উল্যার বাড়িতে মৃত যুবককে নির্যাতনের ঘটনা ঘটে। পূর্বে চিকিৎসাধীণ অবস্থায় ৬ মে চট্রগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে মারা যায় আলাউদ্দিন। নিহত আলাউদ্দিন উপজেলার বাটইয়া গ্রামের মহিন উদ্দিনের ছেলে।

জানা যায়, এ ঘটনায় গত ৩ জুন নিহতের মা নুরজাহান বেগম বাদী হয়ে নরোত্তমপুর ইউনিয়নের বর্তমান চেয়ারম্যান এ.কে.এম সিরাজ উল্যাকে প্রধান আসামি করে নোয়াখালীর সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ৪নং আমলি আদালতে সিআর মামলা দায়ের করেন। মামলায় চেয়ারম্যানের সহযোগী নিশান (২২), কবির (৩০) দুইজনের উল্লেখ করে ও অজ্ঞাত নামা আরো ৫/৬ জনকে আসামি করা হয়। পরে আদালতের নির্দেশে কবিরহাট থানার পুলিশ হত্যা মামলা দায়ের করেন।  

নিহতের বাবা মহিন উদ্দিন অভিযোগ করে বলেন, আমাদের বাড়ির জায়গা নিয়ে সমস্যা হলে নরোত্তমপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান এ.কে.এম সিরাজ উল্যার কাছে বিচার প্রার্থনা করি। এরপর তিনি নিজেই জায়গাটি ক্রয় করে নিতে চায়। কিন্তু আমরা জায়গাটি বিক্রয় করতে অপরগতার প্রকাশ করি। গত ১ মে রাত ৯টার দিকে চেয়ারম্যান সিরাজ আমার ছেলে আলাউদ্দিনকে তার বাড়িতে ডেকে নেয়। এরপর সেখানে দুই দিন আটকে রেখে তার অনুসারী নিশান ও কবিরসহ আরো কয়েকজন তারা আমার ছেলেকে বেধড়ক পিটিয়ে শরীরের বিভিন্নস্থানে জখম করে। পরে কে বা কাহারা গুরুত্বর আহত অবস্থায় আলাউদ্দিনকে কবিরহাট উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে। তার অবস্থার অবনতি হলে ৫ মে উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে চট্রগ্রাম মেডিকেল হাসপাতালে নিয়ে যাই। ৬ মে ভোর রাতে সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়। ৭ মে তাকে পারিবারিক করস্থানে দাফন করা হয়।  

তিনি অভিযোগ করে আরও বলেন, আমার ছেলের মৃত্যুর সংবাদ সিরাজ চেয়ারম্যানের বড় ভাই আওয়ামী লীগ নেতা ডা.জাফর উল্যাহকে জানালে তিনি বিষয়টি বাড়িতে এসে সুরাহা করবেন বলে জানায়। কিন্তু তিনি চট্রগ্রাম মেডিকেল কলেজ কর্তৃপক্ষকে বাধ্য করে চিকিৎসার কাগজপত্র না দিয়ে শুধু মাত্র আমার ছেলের মৃত্যুর সনদ দিয়ে রিলিজ করে দেয়। ডা. জাফরের কালক্ষেপণের কারণে আমাদের মামলা করতে বিলম্ব হয়। তিন বছর আগে এই সিরাজ চেয়ারম্যান আমাকেও তুলে নিয়ে মারধর করে।  

অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে ডা. জাফর উল্যাহ বলেন, এ বিষয়ে আমি কিছুই জানিনা। আমার এলাকার লোকজন আমার কাছে কোনো কাজে আসলে আমি সাহায্য করি।  
 
নরোত্তমপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান এ.কে.এম সিরাজ উল্যা বলেন, এক সময় তারা জমি বিক্রি করতে চাইলে আমি ক্রয় করিনি। আমি এক একজন জনপ্রতিনিধি। আমার কাজ হচ্ছে মানুষের জানমাল রক্ষা করা। আমি কোন ভাবেই এই ঘটনার সাথে জড়িত নেই। ইনশাআল্লাহ একদিন এটা প্রমাণ হবে।    

কবিরহাট থানার ওসি হুমায়ন কবির বলেন, নিহতের মা আদালতে মামলা দায়ের করলে আদালত থানায় মামলাটি রুজু করার নির্দেশ দেয়। আদালতের আদেশে তিনজনকে আসামি করে থানায় মামলা রের্কড করা হয়েছে। একই সাথে আদালতের নির্দেশে মামলার তদন্তের স্বার্থে কবর থেকে ভিকটিমের মরদেহ উত্তোলন করা হয়েছে। মৃতদেহের সুরতহাল প্রতিবেদন তৈরি করে ময়নাতদন্তের জন্য ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। পরবর্তীতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

সময়ের আলো/জিকে




https://www.shomoyeralo.com/ad/1698385080Google-News-Update.jpg

সর্বশেষ সংবাদ

সর্বাধিক পঠিত


ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক: সৈয়দ শাহনেওয়াজ করিম, আমিন মোহাম্মদ মিডিয়া কমিউনিকেশন লিমিটেড এর পক্ষে প্রকাশক গাজী আহমেদ উল্লাহ
নাসির ট্রেড সেন্টার, ৮৯, বীর উত্তম সি আর দত্ত সড়ক (সোনারগাঁও রোড), বাংলামোটর, ঢাকা।

ফোন : +৮৮-০২-৯৬৩২৩৬৮-৭৪, ফ্যাক্স : +৮৮-০২-৯৬৩২৩৭৫ | ই-মেইল : shomoyeralo@gmail.com
close