কক্সবাজার জেলাকে ভূমিহীন ও গৃহহীন মুক্ত জেলা হিসেবে ঘোষণা করলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এ জেলার তিন উপজেলায় আশ্রয়ণ প্রকল্প-২-এর অধীনে পঞ্চম পর্যায়ের দ্বিতীয় ধাপে ২৬১টি পরিবারকে জমিসহ ঘর হস্তান্তর করা হয়। এর মধ্য দিয়ে দেশের প্রধান পর্যটন জেলাকে পুরোপুরি ভূমিহীন ও গৃহহীনমুক্ত ঘোষণা করা হয়।
মঙ্গলবার (১১ জুন) প্রধানমন্ত্রীর গণভবন থেকে ভার্চ্যুয়ালি কক্সবাজারের ঈদগাও উপজেলার পূর্ব দরগাপাড়া আশ্রয়ণ প্রকল্প প্রান্তে যুক্ত হন প্রধানমন্ত্রী। এ সময় নতুন ২৬১টি পরিবারকে জমিসহ ঘর হস্তান্তর এবং এই জেলাকে ভূমিহীন ও গৃহহীনমুক্ত ঘোষণা করেন তিনি।
কক্সবাজার জেলা প্রশাসন জানায়, সম্প্রতি পঞ্চম পর্যায়ের দ্বিতীয় ধাপে কক্সবাজারের সদর উপজেলায় ৭৫টি, ঈদগাও উপজেলায় ১৪৬টি এবং মহেশখালী উপজেলায় ৪০টি, সর্বমোট ২৬১টি ঘরের নির্মাণকাজ শেষ হয়। এগুলো নির্বাচিত উপকার-ভোগীদের মাঝে হস্তান্তর করা হলো আজ। ফলে এ জেলায় তালিকাভুক্ত আর কোনও ভূমিহীন পরিবার না থাকায় ভূমিহীন-গৃহহীন মুক্ত ঘোষণা করা হয়েছে।
নির্মিত প্রতিটি ঘরের সঙ্গে পরিবার প্রতি ২ শতাংশ খাসজমি বিনামূল্যে বন্দোবস্ত দেওয়া হয়েছে, সে হিসাবে এখন পর্যন্ত ৯৮ দশমিক ৫০ একর খাসজমি বন্দোবস্ত দেওয়া হয়েছে। যার আনুমানিক মূল্য ১০০ কোটি টাকারও বেশি। এ ছাড়া আশ্রয়ণ প্রকল্পগুলোয় প্রায় ২২ একর জমি কমন স্পেস হিসেবে উপকারভোগীরা ব্যবহার করছেন। এর বাইরে ১৬০৪ জন উপকারভোগীর মাঝে বিভিন্ন ধরনের প্রশিক্ষণ (হাঁস-মুরগি পালন, গরু মোটাতাজাকরণ, মাছ চাষ, সবজি চাষ, অর্গানিক সবজি উৎপাদন, সেলাই ও ব্লক বাটিক প্রশিক্ষণ, কারিগরি প্রশিক্ষণ, হস্তশিল্প বিষয়ক প্রশিক্ষণ প্রভৃতি) প্রদান করা হয়েছে।
কক্সবাজারের জেলা প্রশাসক মুহম্মদ শাহীন ইমরান বলেন, কক্সবাজারের উখিয়ায় গৃহহীন ও ভূমিহীনরা জমি ও ঘর পেয়ে জীবনমানের উন্নয়ন করেছে। তাদের আত্মসম্মান ও আত্মমর্যাদা বেড়েছে। অনেকে তাদের ছেলে-মেয়ে বিয়ে দিতে পারতো না। তাদের মাথা গোঁজার ঠাঁই হওয়ায় এখন ছেলে-মেয়েদের বিয়ে দিতে সমস্যা হবে না। ইতোমধ্যে যারা ঘর ও জমি পেয়েছেন, তাদের জন্য বিভিন্ন প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা হয়েছে। কাউকে সেলাইয়ের প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে। আবার কেউ আদা, হলুদ ও সবজি চাষ এবং কেউ গরু-ছাগল পালন করেও উপার্জন করছেন। তাদের কেউ সর্বজনীন পেনশন স্কিমে আওতাভুক্ত হয়েছেন। তারা এখন প্রতিদিন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জন্য দোয়া করেন।
সময়ের আলো/এএ/