ই-পেপার সোমবার ৭ অক্টোবর ২০২৪
সোমবার ৭ অক্টোবর ২০২৪

সাড়ে ছয় বছরের ভাড়া ১ হাজার টাকা মাত্র!
পৌরসভা কার্যালয়ে বসতি গড়েছেন কর্মকর্তারা
প্রকাশ: মঙ্গলবার, ১১ জুন, ২০২৪, ২:২৫ এএম  (ভিজিট : ৪০০)
নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করে নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁ পৌরসভা কার্যালয়ে বসতি গড়ে তুলেছেন পৌর নির্বাহী কর্মকর্তা, সহকারী প্রকৌশলী, হিসাবরক্ষক এবং কনজার্ভেন্সি ইন্সপেক্টর। একইসঙ্গে এই চার কর্মকর্তা পৌর কার্যালয়ের বিদ্যুৎ, গ্যাস, পানিসহ সব সুযোগ-সুবিধা ভোগ করছেন। এমনকি নিজেদের রান্নাবান্নার কাজও সেরে নিচ্ছেন চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারীর মাধ্যমে। ওই চার কর্মকর্তা দীর্ঘদিন ধরে পৌরসভায় বসবাস করলেও গত মে মাসে প্রতি কক্ষের জন্য মাত্র এক হাজার টাকা করে ভাড়া পরিশোধ করেছেন।

এ বিষয়ে জানার জন্য পৌর প্রশাসক ও সোনারগাঁ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আবদুল্লাহ আল মাহফুজের মোবাইলে যোগাযোগ করা হলে তিনি বিষয়টি অবগত নন বলে জানান। সরেজমিন সোনারগাঁ পৌরসভা কার্যালয়ে গিয়ে জানা যায়, পৌরসভার সহকারী প্রকৌশলী তানভির আহমেদ তার কর্মজীবনের অর্ধযুগের পুরোটা সময় পৌরসভা কার্যালয়ে বসবাস করে আসছেন। তার সঙ্গে পাল্লা দিয়ে পৌরসভার কনজার্ভেন্সি ইন্সপেক্টর মো. সেলিম তিন বছর, হিসাবরক্ষক গোলাম হাসনাইন ছয় মাস ও পৌর নির্বাহী কর্মকর্তা মাশরেকুল আলম দেড় বছর ধরে এখানে বসবাস করছেন। তারা কার্যালয়ের চারটি কক্ষে থেকে বাসাবাড়ির মতোই বিদ্যুৎ, গ্যাস ও পানিসহ সব সুযোগ-সুবিধা ভোগ করে আসছেন। পৌরসভার অর্থায়নে মাস্টাররোলে কাজ করা চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারী রেখা আক্তারকে দিয়ে নিজেদের রান্নাবান্নার কাজও করিয়ে নিচ্ছেন।

সরেজমিন পৌর কার্যালয়ের দ্বিতীয় তলায় উপস্থিত হলে রেখা আক্তারকে ওই চার কর্মকর্তার রান্নার কাজে ব্যস্ত থাকতে দেখা যায়। এ সময় তিনি বলেন, পৌরসভার স্যারদের জন্য রান্না করছি। এ ছাড়া নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক পৌরসভার এক কর্মচারী জানান, সহকারী প্রকৌশলী তানভির আহমেদ পৌর কার্যালয়ের দ্বিতীয় তলায় বসবাস করার সুবাদে নিজের মন-মর্র্জি মতো অফিস করেন। প্রায় সময়েই তিনি মধ্যাহ্ন ভোজ সেরে দুপুর ২টার দিকে অফিসে ঢোকেন। পৌরসভার এই কর্মকর্তা রাতে কার্যালয়ে অবস্থানকালে অফিস স্টাফ নন এমন লোকজনও তার কক্ষে আসা-যাওয়া করে। এমনকি তার বিরুদ্ধে পৌর কার্যালয়ে অস্থায়ী ভিত্তিতে নিয়োগকৃত সাবেক এক নারী কর্মচারীর সঙ্গে অশালীন আচরণ করার অভিযোগও রয়েছে।

ভাড়া দিয়ে পৌর কার্যালয়ে থাকার বিষয়ে জানতে চাইলে হিসাবরক্ষক গোলাম হাসনাইন জানান, চলতি বছরের মে মাস থেকে তারা পৌর প্রশাসকের লিখিত অনুমতি নিয়ে এক হাজার টাকা ভাড়ার বিনিময়ে কার্যালয়ের দ্বিতীয় তলার পৃথক কক্ষে বসবাস করছেন। এ মর্মে চারটি অনুমতি পত্র দেখান তিনি। তবে এই ভাড়া বৃদ্ধি করা উচিত বলে তিনি মনে করেন। মে মাসের পূর্ববর্তী সময়ে বিনা ভাড়ায় থাকার বিষয়ে জানতে চাইলে কোনো সদুত্তর দিতে পারেননি তিনি। একইভাবে পৌরসভার অর্থায়নে অস্থায়ীভাবে নিয়োগকৃত এক নারী কর্মচারীকে দিয়ে রান্না করানোর কথাও স্বীকার করেন তিনি।

সহকারী প্রকৌশলী তানভির আহমেদ দীর্ঘ ৬ বছর ৭ মাস কর্মজীবনের পুরোটা সময় পৌর কার্যালয়ে অবৈধভাবে বসবাস করছেন। তার স্বেচ্ছাচারিতায় ক্ষুব্ধ পৌর কর্মচারীদের অনেকেই। কিন্তু কোনো প্রতিবাদ করার সাহস পাচ্ছেন না তারা। তাদের অভিযোগ, নামমাত্র এক হাজার টাকায় বাসা ভাড়ার মধ্যে গ্যাস, পানি, বিদ্যুৎ ও রান্নার কাজ করিয়ে নেওয়া সম্পূর্ণ অনৈতিক কাজ। এ বিষয়ে পৌর প্রশাসকের জরুরি হস্তক্ষেপ কামনা করেন তারা। এ ব্যাপারে সহকারী প্রকৌশলী তানভির আহমেদ জানান, তিনি ভাড়া দিয়েই পৌরসভায় বসবাস করে আসছেন। এ সময় তিনি তার বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ অস্বীকার করেন।

সময়ের আলো/আরএস/ 




https://www.shomoyeralo.com/ad/1698385080Google-News-Update.jpg

সর্বশেষ সংবাদ

সর্বাধিক পঠিত


ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক: সৈয়দ শাহনেওয়াজ করিম, আমিন মোহাম্মদ মিডিয়া কমিউনিকেশন লিমিটেড এর পক্ষে প্রকাশক গাজী আহমেদ উল্লাহ
নাসির ট্রেড সেন্টার, ৮৯, বীর উত্তম সি আর দত্ত সড়ক (সোনারগাঁও রোড), বাংলামোটর, ঢাকা।

ফোন : +৮৮-০২-৯৬৩২৩৬৮-৭৪, ফ্যাক্স : +৮৮-০২-৯৬৩২৩৭৫ | ই-মেইল : shomoyeralo@gmail.com
close