ই-পেপার সোমবার ৭ অক্টোবর ২০২৪
সোমবার ৭ অক্টোবর ২০২৪

সদরঘাটে অগ্রিম টিকিটের প্রতি ঝোঁক নেই যাত্রীদের
*ঘটা করে বিক্রি হচ্ছে না অগ্রিম টিকিট *যাত্রীর চাপ বাড়লে চলবে বিশেষ লঞ্চ *৪১টি রুটে প্রায় ৬০টি লঞ্চ চলছে
প্রকাশ: সোমবার, ১০ জুন, ২০২৪, ৮:০৫ পিএম  (ভিজিট : ৪২৪)
এক সময় সদরঘাটে লঞ্চের একটি অগ্রিম টিকিট পাওয়ার জন্য থাকতো যাত্রীদের উপচে পড়া ভিড়। দীর্ঘ সময় অপেক্ষা করে কেবিনের টিকিট না পেয়ে অনেকের মুখ হতো মলিন। আবার টিকিট পেতে কখনো কখনো গুনতে হতো অতিরিক্ত টাকা। কিন্তু সে চিত্র এখন পাল্টেছে। ঘটা করে এখন আর অগ্রিম টিকিট বিক্রি হয় না। যাত্রীরা তাদের সময় সুযোগ বুঝে ফোনে অথবা ঘাটে এসে কেটে নিচ্ছে টিকিট।

সোমবার (১০ জুন) সদরঘাট লঞ্চ টার্মিনাল ঘুরে দেখা যায় ঘাটে সারি সারি লঞ্চ বাঁধা। আসন্ন ঈদুল আযহাকে ঘিরে সদরঘাট লঞ্চ টার্মিনালে নেই অগ্রিম টিকিটের চাপ। স্বল্প পরিসরে কিছু মানুষের ঈদ যাত্রা শুরু হলেও টিকিট কাউন্টারগুলোতে কাঙ্খিত যাত্রীর দেখা মিলছে না। এরমধ্যে যে সংখ্যক যাত্রী আছেন তার অধিকাংশই উঠছেন চাঁদপুর ও ইলিশা রুটের লঞ্চে। বর্তমানে এ রুটেই যাত্রী সংখ্যা বেশি। যাত্রার সময় মেনে ছেড়েছে অন্য লঞ্চও তবে এগুলোতে যাত্রী সংখ্যা খুবই কম।

সদরঘাটের কয়েকটি লঞ্চের সুপারভাইজার, টিকিট বিক্রেতা ও কর্মচারীদের সাথে কথা বলে জানা যায়, ঈদকেন্দ্রিক লঞ্চে যাত্রী এখনো বাড়েনি। কিছু কিছু লঞ্চে কিছু সংখ্যক অগ্রিম টিকিট বিক্রি হয়েছে। তবে ঈদের ৪-৫ দিন আগে যাত্রীদের চাপ বাড়বে বলে জানিয়েছেন তারা।

লঞ্চের ডেকে টেবিল নিয়ে কেবিনের টিকিট বিক্রি করছিলেন কর্ণফুলী-১০ লঞ্চের কেবিন ইনচার্জ মো. আবির। ঈদ কেন্দ্রিক যাত্রীদের চাপ কেমন জানতে চাইলে সময়ের আলোকে তিনি বলেন, এখনো পর্যন্ত ঘাটে তেমন কোনো চাপ নেই। তবে ঈদের ৪-৫ দিন আগে চাপ বাড়বে। ব্যবসায়ী ও চাকুরিজীবীরা এখনো ছুটি পাননি। তারা ছুটি পেলে কিছুটা চাপ আসবে।

ঈদের অগ্রিম টিকিট বিক্রি হচ্ছে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, যাত্রীরা অগ্রিম টিকিট চাইলে বিক্রি করছি। তবে সেভাবে চাপ নেই। ঘোষণা দিয়ে বিক্রি হচ্ছে এমন না। মূলত অগ্রিম টিকিট বুকিং হয় কেবিনের ক্ষেত্রে। আর ডেকতো এখন ফাকাই থাকে।

একই সুরে কথা বলেন, বেগদাদিয়া লঞ্চের মাস্টার সৈয়দ আলী কদর, সময়ের আলোকে তিনি বলেন, এখন যাত্রীর চাপ নেই। নিয়মিত যে যাত্রী হতো তেমনি হচ্ছে। গার্মেন্টসে ছুটি শুরু হলে ঈদ কেন্দ্রিক ভিড় কিছুটা বাড়বে। যাত্রী কম তাই ঘোষণা দিয়ে অগ্রিম টিকিট বিক্রি হচ্ছে না। তবে যাত্রীরা চাইলে আমরা টিকিট দিবো।

সদরঘাট থেকে চাঁদপুর ও ইলিশা এই দুই রুটে এখন লঞ্চ চলাচল বেশি। যাত্রীও মোটামুটি বেশ ভালো। চাঁদপুরের যাত্রীদের পাশাপাশি নোয়াখালী ও লক্ষ্মীপুরের যাত্রী থাকায় এ রুটের লঞ্চে মোটামুটি যাত্রী থাকে।

চাঁদপুর রুটের একটি লঞ্চ রফ রফ-৭। এ লঞ্চের এক কর্মী সময়ের আলোকে বলেন, আন্যান্য রুটের তুলনায় চাঁদপুর ও ইলিশা রুটে যাত্রী কিছুটা বেশি। তবে ঈদ কেন্দ্রিক যাত্রীদের চাপ এখনো শুরু হয়নি। রোজার ঈদের তুলনায় কোরবানির ঈদে মানুষের বাড়ি ফেরার প্রবণতা কম থাকে। তবে আশা করা যায় গার্মেন্টস ও অন্যান্য কোম্পানি থেকে কর্মীরা ছুটি পেলে ঘাটে চাপ বাড়বে।
অগ্রিম টিকিট বিক্রির বিষয়ে তিনি বলেন, এখন ঘোষণা দিয়ে অগ্রিম টিকিট বিক্রি হয় না। মালিকদের থেকেও ওরকম কোনো নির্দেশনা নেই। তবে টিকিট চাইলে আমরা দিতে পারছি। সদরঘাটে যাত্রীদের আগের মতো যাতায়াত নেই। অগ্রিম টিকিটের চাপও নেই।

সার্বিক বিষয়ে ঢাকা নদী বন্দর নৌযান চলাচল ব্যবস্থাপনা কমিটির আহ্বায়ক মো. মামুন-অর-রশিদ সময়ের আলোকে বলেন, আমাদের লঞ্চ ব্যবসা দক্ষিণাঞ্চল কেন্দ্রিক, গার্মেন্টস ছুটি হলে যাত্রীদের চাপ বাড়বে। এক সময় ঈদের দু’সপ্তাহ বা ১৫দিন আগে যাত্রীরা লঞ্চের অগ্রিম টিকিট কাটছে। এখন আর সে দিন নেই। অগ্রিম টিকিট কেনাবেচায় তেমন হিড়িক আর পড়ে না। পদ্মা সেতু হওয়ার পর লঞ্চ ব্যবসায় ধস নেমেছে। তেলের দাম বৃদ্ধিও লঞ্চ ব্যবসায় লোকসানের একটা বড় কারণ। গুলিস্তান থেকে সদরঘাট পর্যন্ত যে যানজট এতে অনেকে সদরঘাটমুখী হয় না। কারণ এখানে আসতে রাস্তায় যে সময় ব্যয় হয় তা ভোগান্তির। আমাদের লঞ্চ ছাড়ার জন্য নির্দিষ্ট সময় বাধা থাকে। কিন্তু বাস একটার পর একটা ছাড়তে থাকে, সবসময় পাওয়া যায়। যদি গুলিস্তান থেকে সদরঘাট পর্যন্ত যানজট কমানো যায় তাহলে লঞ্চে যাত্রী বাড়বে।

তিনি আরও বলেন, লঞ্চের স্টাফদের ২-৩ মাসের বেতন বাকি থাকে। ঈদের সময় আসলেই তারা লঞ্চ চালাবেনা বলে। টাকা চায়। সব লঞ্চ মালিকই লোকসানে আছে। কিন্তু আগে এমন হতো যে ঈদের সময় আসলে আমরা লোকসানগুলো পুশিয়ে নিতে পারতাম। এখন আর তা হচ্ছে না।

বিশেষ লঞ্চের বিষয়ে তিনি বলেন, প্রতিটি রুটে বিশেষ লঞ্চ আছে। প্রয়োজন বোধ হলে বিআইডব্লিউটিএ মালিক সমিতি সমন্বয় করে বিশেষ লঞ্চ দিবে।

সময়ের আলো/জেডআই




https://www.shomoyeralo.com/ad/1698385080Google-News-Update.jpg

সর্বশেষ সংবাদ

সর্বাধিক পঠিত


ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক: সৈয়দ শাহনেওয়াজ করিম, আমিন মোহাম্মদ মিডিয়া কমিউনিকেশন লিমিটেড এর পক্ষে প্রকাশক গাজী আহমেদ উল্লাহ
নাসির ট্রেড সেন্টার, ৮৯, বীর উত্তম সি আর দত্ত সড়ক (সোনারগাঁও রোড), বাংলামোটর, ঢাকা।

ফোন : +৮৮-০২-৯৬৩২৩৬৮-৭৪, ফ্যাক্স : +৮৮-০২-৯৬৩২৩৭৫ | ই-মেইল : shomoyeralo@gmail.com
close