ই-পেপার সোমবার ৭ অক্টোবর ২০২৪
সোমবার ৭ অক্টোবর ২০২৪

পাল্টে যাচ্ছে মস্তিষ্কের নিউরনের কার্যক্রম
প্রকাশ: রবিবার, ৯ জুন, ২০২৪, ৫:২৪ এএম  (ভিজিট : ৭৬৬)
অতিমাত্রায় ইন্টারনেট ব্যবহারের ফলে মস্তিষ্কের নিউরন কোষের কার্যক্রম বদলে যাচ্ছে। এতে করে ধীরে ধীরে মানুষের দৈনন্দিন কার্যক্রম যেমন-খাদ্যাভ্যাস, ঘুমের ধরন, সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষমতা পরিবর্তন হয়ে যাচ্ছে। কিশোর-কিশোরীদের মধ্যে এ ধরনের পরিবর্তন সবচেয়ে বেশি দেখা যাচ্ছে।

নতুন এক গবেষণায় এ তথ্য সামনে এসেছে বলে এক খবরে জানিয়েছে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম ইন্ডিয়া টুডে। অনেকেই ইন্টারনেট আসক্তির ক্ষতিকর দিক সম্পর্কে জানার পরও ঘণ্টার পর ঘণ্টা ইন্টারনেট ব্যবহার করেন বা অনলাইনে গেম খেলেন। দীর্ঘ সময় ইন্টারনেট ব্যবহার আমাদের চিন্তা করার পদ্ধতিকে মারাত্মকভাবে প্রভাবিত করে। শুধু তা-ই নয়, স্মার্টফোন, ল্যাপটপ বা কম্পিউটারের পর্দার আলো আমাদের চোখেরও ক্ষতি করে থাকে।

নতুন গবেষণায় দেখা যাচ্ছে, ইন্টারনেট আসক্তির কারণে আমাদের মস্তিষ্কে থাকা নিউরনের কাজের ধরন পরিবর্তন হয়ে যাচ্ছে। ফলে মস্তিষ্কের যে অংশ সিদ্ধান্ত গ্রহণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে, সেগুলোর কাজের ধরন বদলে যাচ্ছে। পিএলওএস মেন্টাল হেলথ জার্নালে এ বিষয়ে একটি গবেষণাপত্র প্রকাশিত হয়েছে।

ইউনিভার্সিটি কলেজ লন্ডনের গবেষক ম্যাক্স চ্যাং বলেন, বয়ঃসন্ধিকাল জীবনের গুরুত্বপূর্ণ পর্যায়। এই বয়সে মানুষের ব্যক্তিত্ব-সংক্রান্ত উল্লেখযোগ্য পরিবর্তন হয়। এই সময়ে ইন্টারনেট আসক্তি তৈরি হলে মস্তিষ্ক ভিন্ন আচরণ শুরু করে। ইন্টারনেট আসক্তি মস্তিষ্কের একাধিক নিউরাল নেটওয়ার্কের কাজকে উল্লেখযোগ্যভাবে প্রভাবিত করছে। অতিরিক্ত ইন্টারনেট ব্যবহারের কারণে মানুষের স্নায়বিক পরিবর্তনও হতে পারে। মস্তিষ্কের রাসায়নিক পরিবর্তন কিশোর-কিশোরীদের সামাজিক আচরণ ও দৈনন্দিন অভ্যাসে প্রভাব ফেলছে।

আরেক গবেষক আইরিন লি বলেন, তরুণদের ইন্টারনেট ব্যবহারের কারণে মানসিক ও সামাজিক প্রতিক্রিয়া বদলে যাচ্ছে। বিভিন্ন বিষয়ে সচেতনতা কমে যাচ্ছে। ইন্টারনেট আসক্তি প্রতিরোধে অভিভাবক ও শিক্ষকদের ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ।

গবেষকরা উল্লেখ করেছেন, গত দশক থেকেই অতিরিক্ত ইন্টারনেট ব্যবহারের কারণে নানা আচরণগত অসংগতি উদ্বেগ সৃষ্টির বড় একটি উৎস হয়ে উঠেছে।

চীন হলো প্রথম দেশ যারা ইন্টারনেট আসক্তিকে জনস্বাস্থ্য সংকট হিসেবে ঘোষণা করেছে। যুক্তরাষ্ট্রে ইন্টারনেটের কথা সরাসরি না উল্লেখ থাকলেও ইন্টারনেট গেমিংয়ের কথা উল্লেখ আছে। গবেষক ম্যাক্স চাং বলেছেন, ইন্টারনেট আসক্তি প্রতিরোধে আমাদের এখন থেকেই সচেতন হতে হবে। তিনি মা-বাবাদের সন্তানের দিকে নজর রাখতে বলেছেন, সন্তান কোনো সম্পর্ক (আত্মীয়, বন্ধু-বান্ধব, ভাই-বোন ইত্যাদি) ত্যাগ করছে কি না সে বিষয়ে লক্ষ রাখার পরামর্শ দিয়েছেন। এমনকি তিনি ইন্টারনেট আসক্তিকে ড্রাগ ও জুয়ার সঙ্গেও তুলনা করেছন। জুয়া কিংবা মাদকের মতো এই আসক্তিও মস্তিষ্ককে পুনরুজ্জীবিত করে এবং ইন্টারনেট সম্পর্কিত উদ্দীপনা প্রতিরোধ করা কঠিন করে তোলে। কেউ আসক্ত হয়ে পড়লে তাকে চিকিৎসার পাশাপাশি অন্যান্য মানসিক স্বাস্থ্যের অবস্থাও পরীক্ষা করে দেখা উচিত।
 
এই আসক্তি প্রতিরোধ করতে হলে স্ক্রিনটাইম কমানো, টানা ইন্টারনেট ব্যবহার না করে বিরতি নেওয়া এবং ডুম স্ক্রলিং (নিউজফিড, রিলস, শর্টস, টাইমলাইন ইত্যাদি স্ক্রল করতেই থাকা) এড়িয়ে চলার পরামর্শ দিয়েছেন গবেষকরা।

সময়ের আলো/আরএস/ 




https://www.shomoyeralo.com/ad/1698385080Google-News-Update.jpg

সর্বশেষ সংবাদ

সর্বাধিক পঠিত


ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক: সৈয়দ শাহনেওয়াজ করিম, আমিন মোহাম্মদ মিডিয়া কমিউনিকেশন লিমিটেড এর পক্ষে প্রকাশক গাজী আহমেদ উল্লাহ
নাসির ট্রেড সেন্টার, ৮৯, বীর উত্তম সি আর দত্ত সড়ক (সোনারগাঁও রোড), বাংলামোটর, ঢাকা।

ফোন : +৮৮-০২-৯৬৩২৩৬৮-৭৪, ফ্যাক্স : +৮৮-০২-৯৬৩২৩৭৫ | ই-মেইল : shomoyeralo@gmail.com
close