ই-পেপার সোমবার ৭ অক্টোবর ২০২৪
সোমবার ৭ অক্টোবর ২০২৪

দুগ্ধ উৎপাদনে পিছিয়ে হবিগঞ্জ
প্রকাশ: বুধবার, ৫ জুন, ২০২৪, ১:১২ এএম  (ভিজিট : ২৮২)
দুগ্ধ উৎপাদনের ক্ষেত্রে লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে পিছিয়ে আছে হবিগঞ্জ। জেলায় মোট দুধের চাহিদা ২ লাখ ৬৫ হাজার টন। চাহিদার বিপরীতে উৎপাদন হচ্ছে ১ লাখ ৭০ হাজার টন। এ হিসাবে ঘাটতি রয়েছে ৯৫ হাজার টন দুধের। বিগত কয়েক বছর থেকেই এ ঘাটতি রয়েছে জেলায়। এ অবস্থা থেকে উত্তরণের কোনো উপায় বের করতে পারছে না জেলা প্রাণিসম্পদ অধিদফতর।

এ বিষয়ে জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. মোহাম্মদ আবদুল কাদের বলেন, হবিগঞ্জ জেলায় কাঁচা ঘাসের অভাব রয়েছে। এ ছাড়া পশু খাদ্যের দামও বেশি। তার ওপর গাভির রোগ প্রতিকারের জন্য পর্যাপ্ত ওষুধের সরবরাহ নেই। আরেকটি সমস্যা হলো-খামারিরা গরুর কৃত্রিম প্রজননে রাজি হতে চান না। কৃত্রিম প্রজননে একটি ষাঁড় থেকে একবার সংগৃহীত সিমেন দিয়ে কয়েকশ গাভি প্রজনন করানো যায়। স্থানীয় খামারিরা গরুর কৃত্রিম প্রজননে বাধা না দিলে দুধের ঘাটতি পূরণ করা অনেকটাই সহজ হয়ে যাবে।

হবিগঞ্জ জেলা প্রাণিসম্পদ অধিদফতর বলছে, দুধ উৎপাদনে পিছিয়ে থাকার জন্য দায়ী স্থানীয় খামারিরা। দুধ উৎপাদনে তারা একেবারেই আগ্রহী নন। মূলত এ কারণেই দুধ উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করা সম্ভব হচ্ছে না। অন্যদিকে খামারিরা বলছেন, সংশ্লিষ্ট দফতরের কাছ থেকে পর্যাপ্ত সহযোগিতা না পাওয়ায় তারা দুধ উৎপাদনে আগ্রহ হারিয়ে ফেলেছেন। তাদের দাবি, সরকারিভাবে পৃষ্ঠপোষকতা করা হলে অবশ্যই দুধ উৎপাদনে জেলার লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে যাবে।

স্থানীয়রা বলছেন, বাংলাদেশের অন্যান্য জেলায় সম্ভব হলেও হবিগঞ্জ জেলায় কেন সম্ভব না? সংশ্লিষ্ট বিভাগের কর্মকর্তাদের দায়সারা মনোভাবের কারণে বছরের পর বছর জেলায় দুধ উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা পূরণ হচ্ছে না। এতে করে হবিগঞ্জবাসীকে দুধের পুষ্টি থেকে বঞ্চিত থাকতে হচ্ছে।

জেলা প্রাণিসম্পদ কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, জেলার ৯টি উপজেলায় নিবন্ধিত খামারের সংখ্যা ৪২৪টি। এ ছাড়া অনিবন্ধিত খামার রয়েছে ৫ হাজার ৭৩৭টি। স্থানীয় খামারিরা গাভি লালন-পালনের চেয়ে বাছুর লালন-পালনে বেশি আগ্রহী। এ কারণে প্রতি বছর দুধের ঘাটতি থেকেই যাচ্ছে।

হবিগঞ্জ সদর উপজেলার নিজামপুর ইউনিয়নের খামারি অনুকুল ভট্টাচার্য বলেন, দুধের উপযুক্ত মূল্য না পাওয়ায় গাভি লালন-পালনে আগ্রহ হারিয়ে ফেলেছি। এ ছাড়া সরকারিভাবে সুযোগ-সুবিধা নেই বললেই চলে। উপজেলা প্রাণিসম্পদ অফিসে গেলে তারা স্লিপ লিখে দেয়, কোনো ওষুধ দেয় না।

নবীগঞ্জ উপজেলার সাতাইহাল গ্রামের রুমন মিয়া বলেন, গাভির রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা অনেক কম। অল্পতেই অসুস্থ হয়ে পড়ে। কিন্তু উপজেলা প্রাণিসম্পদ অফিসে ওষুধ পাওয়া যায় না। অফিসের লোকজন বলে, সরকারিভাবে ওষুধের সরবরাহ নেই। কয়েক বছর লোকসান দিয়েও গাভি লালন-পালন করেছি। শেষ পর্যন্ত বাধ্য হয়েই বন্ধ করে দিয়েছি।

চুনারুঘাট উপজেলার শ্রীকুটা গ্রামের পাবেল আহমদ বলেন, গরুর খাবার ও ওষুধের দাম বেশি। তা ছাড়া উপযুক্ত মূল্যে দুধ বিক্রি করতে পারি না। গাভি লালন-পালন করে শুধু শুধু লোকসান আর কতদিন দেব। এ জন্য এখন শুধু বাছুর লালন-পালন করি। বছর শেষে টাকা আসে।

সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন) জেলা সভাপতি অ্যাডভোকেট ত্রিলোক কান্তি চৌধুরী বিজন বলেন, বাংলাদেশের অন্যান্য জেলায় দুধ উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে যায়। হবিগঞ্জ জেলা তো বাংলাদেশের বাইরের কোনো জেলা নয়। নিশ্চয়ই সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের দায়সারা মনোভাবের কারণে লক্ষ্যমাত্রা পূরণ হয় না।

সময়ের আলো/আরএস/ 




https://www.shomoyeralo.com/ad/1698385080Google-News-Update.jpg

সর্বশেষ সংবাদ

সর্বাধিক পঠিত


ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক: সৈয়দ শাহনেওয়াজ করিম, আমিন মোহাম্মদ মিডিয়া কমিউনিকেশন লিমিটেড এর পক্ষে প্রকাশক গাজী আহমেদ উল্লাহ
নাসির ট্রেড সেন্টার, ৮৯, বীর উত্তম সি আর দত্ত সড়ক (সোনারগাঁও রোড), বাংলামোটর, ঢাকা।

ফোন : +৮৮-০২-৯৬৩২৩৬৮-৭৪, ফ্যাক্স : +৮৮-০২-৯৬৩২৩৭৫ | ই-মেইল : shomoyeralo@gmail.com
close