ই-পেপার সোমবার ৭ অক্টোবর ২০২৪
সোমবার ৭ অক্টোবর ২০২৪

ভয়াবহ জলাবদ্ধতার শঙ্কা
পলি জমে ভরাট ভবদহের পাঁচ নদী
প্রকাশ: মঙ্গলবার, ৪ জুন, ২০২৪, ৬:০০ এএম  (ভিজিট : ৩০২)
যশোরের ভবদহ অঞ্চলের পাঁচ নদী হরিহর, আপার-ভদ্রা, হরি, গ্যাংরাইল ও বুড়িভদ্রা পলিতে ভরাট হয়ে গেছে। বর্ষা মৌসুমে ভারী বৃষ্টিপাত শুরু হলে পানি নিষ্কাশিত হতে না পেরে ভবদহ অঞ্চলে ভয়াবহ জলাবদ্ধতার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। সে ক্ষেত্রে পানিবন্দি হয়ে পড়বেন এই পাঁচ নদী অববাহিকায় বসবাসকারী লাখ লাখ মানুষ।

পানি উন্নয়ন বোর্ড কর্তৃপক্ষও বলছে নদ-নদী খনন করা না হলে বর্ষা মৌসুমে এ এলাকায় জলাবদ্ধতা দেখা দেবে। এ বিষয়ে যশোর পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপবিভাগীয় প্রকৌশলী সুমন সিকদার বলেন, হরিহর নদের ৪০ কিলোমিটার, আপার-ভদ্রার ১৮ কিলোমিটার, বুড়িভদ্রার ১২ কিলোমিটারসহ হরি ও গ্যাংরাইল নদী পলিতে ভরাট হয়ে গেছে। বর্ষা মৌসুম শুরুর আগেই এসব নদ-নদী খনন করা না হলে নদী অববাহিকায় জলাবদ্ধতা দেখা দেওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

যশোর পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপবিভাগীয় প্রকৌশলী সুমন সিকদার আরও বলেন, ইতিমধ্যে এসব নদ-নদী খননের জন্য ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করা হয়েছে। শিগগির এসব নদ-নদী খনন করা সম্ভব হবে কি না তা এখনই নিশ্চিত করে বলতে পারছি না। তবে ভবদহ ২১ ব্যান্ড স্লুইস গেটের উজানে ১০ কিলোমিটার খননের সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত হয়েছে বলে জানান তিনি।

পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্রে জানা গেছে, যশোর, খুলনা ও সাতক্ষীরার ৯টি উপজেলার পানি নিষ্কাশন হয় মূলত যশোরের ভবদহ থেকে হরি নদী পর্যন্ত ১৮ কিলোমিটার অংশ দিয়ে। হরিহর নদের ৪০ কিলোমিটার, আপার ভদ্রার ১৮ কিলোমিটার, বুড়িভদ্রার ১২ কিলোমিটার নদ-নদীর তলদেশ পলিতে ভরাট হয়ে গেছে। 

পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্রে আরও জানা গেছে, হরিহর, আপার-ভদ্রা ও বুড়িভদ্রা নদীর তলদেশে ৫ ফুট পলি জমেছে। হরি নদী পলিতে ভরাট হয়ে নালায় পরিণত হয়েছে। এ ছাড়াও গ্যাংরাইল নদীর খর্ণিয়া ব্রিজের নিচ থেকে চটচটিয়া ব্রিজ পর্যন্ত অংশ পলিতে ভরাট হয়ে গেছে।

হরি-গ্যাংরাইল নদী অববাহিকা অঞ্চলের জলাবদ্ধতা নিরসন কমিটির পক্ষ থেকে দাবি করা হয়েছে, সংশ্লিষ্ট নদ-নদীসহ বিভিন্ন ক্যানেলে পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্মিত ৮০টি স্লুইস গেট রয়েছে। এসব স্লুইস গেট দিয়ে ১ লাখ ৫ হাজার হেক্টর এলাকার পানি নিষ্কাশন হয়ে থাকে। 

কিন্তু নদ-নদী পলি দিয়ে ভরাট হয়ে যাওয়ায় এসব স্লুইস গেটের অধিকাংশই কোনো কাজে আসছে না। এ বিষয়ে হরি-গ্যাংরাইল নদী অববাহিকা অঞ্চলের জলাবদ্ধতা নিরসন কমিটির সাধারণ সম্পাদক সিদ্দিকুর রহমান জানান, এলাকায় টিআরএম চালুসহ নদ-নদী খননের দাবিতে সভা-সমাবেশ অব্যাহত রাখা হয়েছে। জনমত গঠনের মাধ্যমে আগামীতে বৃহত্তর কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে।

হরি-গ্যাংরাইল নদী অববাহিকা অঞ্চলের জলাবদ্ধতা নিরসন কমিটির সভাপতি মহির উদ্দীন বিশ্বাস বলেন, বর্ষা মৌসুম শুরুর আগেই হরি, আপার-ভদ্রা, বুড়িভদ্রা, গ্যাংরাইল ও হরিহর নদ খনন না করা হলে ভারী বর্ষায় কেশবপুর, মণিরামপুর, অভয়নগর, ডুমুরিয়া, ফুলতলার পূর্বাংশ ও তালা উপজেলার উত্তরাংশে জলাবদ্ধতা দেখা দেবে। পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা করা না হলে এসব অঞ্চলের প্রায় ১০ লাখ মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়বেন। নদ-নদী খননের পাশাপাশি নদী সংলগ্ন যেকোনো একটি বিলে রিভার টাইডাল ম্যানেজমেন্ট (টিআরএম) চালু করা না হলে নদীতে পানির প্রবাহ ধরে রাখা সম্ভব হবে না। সে ক্ষেত্রে শুধু নদী খনন করলেই হবে না। টিআরএম ছাড়া এ এলাকায় জলাবদ্ধতা নিরসন সম্ভব নয়।

ভবদহ পানি নিষ্কাশন কমিটির কেশবপুর উপজেলার আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট আবু বকর সিদ্দিকও দাবি করেন, ভবদহ এলাকার হরি নদী সংলগ্ন বিলে টিআরএম করা না হলে এ অঞ্চলের মানুষ জলাবদ্ধতার হাত থেকে রক্ষা পাবেন না। তিনি বলেন, আগামী বর্ষা শুরুর আগেই নদী খনন করা না হলে কেশবপুরের পাশাপাশি পাশের উপজেলাগুলোর বিস্তীর্ণ অঞ্চল পানিতে তলিয়ে যাবে। সে ক্ষেত্রে এ অঞ্চলের মানুষ মহাবিপাকের ভেতরে পড়ে যাবেন। ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হবে। এতে এলাকার কৃষককে পড়তে হবে বেকায়দায়। 

অ্যাডভোকেট আবু বকর সিদ্দিক আরও বলেন, বর্তমানে নদ-নদীগুলো কচুরিপানায় ভরে গেছে। নদী না অন্য কিছু তা চেনা বড় মুশকিল হয়ে পড়েছে। কচুরিপানা অপসারণ করা না হলে নদ-নদীর সৌন্দর্য ফেরানো সম্ভব নয় বলেও মন্তব্য করেন তিনি।

সময়ের আলো/জিকে




https://www.shomoyeralo.com/ad/1698385080Google-News-Update.jpg

সর্বশেষ সংবাদ

সর্বাধিক পঠিত


ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক: সৈয়দ শাহনেওয়াজ করিম, আমিন মোহাম্মদ মিডিয়া কমিউনিকেশন লিমিটেড এর পক্ষে প্রকাশক গাজী আহমেদ উল্লাহ
নাসির ট্রেড সেন্টার, ৮৯, বীর উত্তম সি আর দত্ত সড়ক (সোনারগাঁও রোড), বাংলামোটর, ঢাকা।

ফোন : +৮৮-০২-৯৬৩২৩৬৮-৭৪, ফ্যাক্স : +৮৮-০২-৯৬৩২৩৭৫ | ই-মেইল : shomoyeralo@gmail.com
close