ই-পেপার সোমবার ৭ অক্টোবর ২০২৪
সোমবার ৭ অক্টোবর ২০২৪

হাইকোর্টের নির্দেশনাও মানছে না কোম্পানিগুলো
এক মাসে ওষুধের দাম বৃদ্ধি ১০ থেকে ৪০ শতাংশ
প্রকাশ: শনিবার, ১ জুন, ২০২৪, ১২:৫১ এএম  (ভিজিট : ৪৯৮)
ইচ্ছামতো সব ধরনের ওষুধের মূল্যবৃদ্ধি ঠেকাতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। তার পরও থেমে নেই ওষুধের দাম বাড়ার প্রতিযোগিতা। বরং প্রস্তুতকারক কোম্পানিগুলো উৎপাদন ব্যয়ভারের নানা খোঁড়া অজুহাত দেখিয়ে ইচ্ছামতো বাড়িয়ে চলেছে প্রয়োজনীয় ওষুধের দাম। গত ১৫ দিন থেকে এক মাসের মধ্যে বেশকিছু ওষুধের দাম ১০ শতাংশ থেকে সর্বোচ্চ ৪০ শতাংশ বেড়েছে। এ ওষুধের মধ্যে রয়েছে অ্যান্টিবায়োটিক, ব্যথানাশক ট্যাবলেট এবং ডায়াবেটিকস রোগীর কোলেস্টেরল কমানোর বিভিন্ন ধরনের জীবনরক্ষাকারী ওষুধ।

শুক্রবার রাজধানীর বংশাল, ঢাকা মেডিকেল কলেজ এলাকা, ফার্মগেট, শাহবাগ এবং বিভিন্ন পাড়া-মহল্লার দোকান ঘুরে এসব তথ্য পাওয়া গেছে।

চলতি বছরের শুরু থেকে এখন পর্যন্ত দুই শতাধিক ওষুধের দাম বেড়েছে বাজারে। এসব ওষুধের দাম ৫ শতাংশ থেকে শুরু ১৪০ শতাংশ পর্যন্ত বেড়েছে। এর মধ্যে জ্বর-সর্দির ট্যাবলেট-ক্যাপসুল থেকে শুরু করে অ্যান্টিবায়োটিক, ডায়াবেটিস রোগীদের ইনসুলিন ও ইনজেকশনের দাম সবচেয়ে বেশি বাড়ানো হয়েছে। আর ওষুধের মূল্যবৃদ্ধিতে রোগীদের চিকিৎসা খরচও বেড়েছে। আবার অনেককেই কাটছাঁট করে ওষুধ কিনতেও দেখা গেছে।

এদিকে আবারও ওষুধের দাম বাড়াতে তোড়জোড় শুরু করেছেন বাংলাদেশ ওষুধ শিল্প সমিতির নেতারা। তারা বলছেন, বিদেশ থেকে আমদানি করা কাঁচামালের খরচ প্রায় ৩৫ শতাংশ বেড়েছে। একইভাবে গ্যাস-বিদ্যুৎ বা জ্বালানি খরচ দ্বিগুণের বেশি হয়েছে। তাই ওষুধের দাম বৃদ্ধি ছাড়া কোনো উপায় দেখছেন না তারা।

ওষুধের খুচরা বিক্রেতা অর্থাৎ ফার্মেসি মালিকরা বলছেন, মূল্য নির্ধারণে সরকারের তেমন কোনো ভূমিকা না থাকায়ই ওষুধের দাম বাড়ে কোম্পানিগুলোর ইচ্ছামাফিক। যে ওষুধের দাম এখনও বাড়েনি তা নতুন করে বাড়ানোর জন্য কোম্পানি থেকে মোবাইলে মেসেজ পাঠাচ্ছে। ফলে আসন্ন বাজেটের পর আরও একদফা ওষুধের দাম বাড়বে এমন আশঙ্কার কথা জানিয়েছেন তারা।

তবে এ বিষয়ে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বাজারে এমনিতেই সব জিনিসের দাম বাড়তি, এ অবস্থায় ওষুধের দাম বাড়লে চিকিৎসা বড় সংকটে পড়বে। দাম বাড়ার কারণে দরিদ্র, অতিদরিদ্র ও নিম্ন মধ্যবিত্ত মানুষ প্রয়োজনীয় স্বাস্থ্যসেবা পাবে না। চিকিৎসা বৈষম্য আরও বাড়বে। সাধারণ মানুষ স্বাস্থ্যসেবা বঞ্চিত হবে। ওষুধের দাম বাড়ার পেছনে উৎপাদন খরচ মুখ্য হতে পারে না। তাই জনগণের ক্রয়ক্ষমতা, আর্থসামাজিক অবস্থা বিবেচনা করে ওষুধের দাম নির্ধারণ হওয়া উচিত।

শুক্রবার রাজধানীতে গত এক মাসের ব্যবধানে যেসব ওষুধ ও সিরাপের দাম বেড়েছে তা হলো-ড্রাগ ইন্টারন্যাশনাল লিমিটেডের অ্যান্টিবায়োটিক ফুক্ল্যাভ ৫০০ মি.গ্রা.+১২৫ মি.গ্রা. ট্যাবলেট প্রতি পিস ৫১ টাকা থেকে বেড়ে ৫৭ টাকা হয়েছে। আগে এক পাতা ৭টি বিক্রি হতো ৩৫৭ টাকায় আর এখন বিক্রি হচ্ছে ৩৯৯ টাকায়। অর্থাৎ বেড়েছে প্রায় ১২ শতাংশ। এরিস্টোফার্মা লিমিটেডের চোখের ড্রপ টাফলান ০.০০১৫ পার্সেন্ট সল্যুশন ৩ এমএমের দাম ৫০০ টাকা থেকে ২০০ টাকা বেড়ে হয়েছে ৭০০ টাকা। বেড়েছে ৪০ শতাংশ। কোষ্ঠকাঠিন্যজনিত সমস্যায় একই কোম্পানির এভোল্যাক ৩.৩৫ গ্রাম/৫ মি.লি. ওরাল সল্যুশন ১০০ এমএল সিরাপ ১৭০ টাকা থেকে বেড়ে ২০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। বেড়েছে প্রায় ১৮ শতাংশ। বীকন ফার্মাসিউটিক্যালস লিমিটেডের অ্যান্টিবায়োটিক ওষুধ জিরোটিল প্লাস ৫০০ মি.গ্রা.+১২৫ মি.গ্রা. ট্যাবলেট প্রতি পিস ৬০ টাকা থেকে ১০ বেড়ে ৭০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। চৌদ্দটির এক বক্সের দাম ৮৪০ টাকা থেকে ৯৮০ টাকা হয়েছে। বেড়েছে প্রায় ১৭ শতাশ। এসিআই লিমিটেডের ব্যথানাশক ফেবুস ৪০ মি.গ্রাম ট্যাবলেট প্রতিপিস ১২ থেকে ১৫ টাকা হয়েছে। ১০টির এক পাতার দাম ১২০ টাকা থেকে বেড়ে ১৫০ টাকা হয়েছে। বেড়েছে ২৫ শতাংশ। সার্ভিয়ার বাংলাদেশ অপারেশন কোম্পানির ডায়াবেটিকসের ওষুধ ডাইমাইক্রন এমআর ৬০ মি.গ্রা. ট্যাবলেট প্রতি পিস ১৮ থেকে বেড়ে ২২ টাকা হয়েছে। ১৫টির প্রতি পাতার দাম ২৭০ টাকা থেকে বেড়ে ৩৩০ টাকা হয়েছে। বেড়েছে ২২ শতাংশের ওপরে। একমি ল্যাবরেটরিজ লিমিটেডের অ্যান্টিবায়োটিক ট্যাবলেট এজিন ৫০০ মি.গ্রামের ট্যাবলেট প্রতি পিস ৫০ থেকে বেড়ে ৫৫ টাকা হয়েছে। ছয়টির এক পাতার দাম ৩০০ টাকা থেকে বেড়ে ৩৩০ টাকা হয়েছে। বেড়েছে ১০ শতাংশ। জেনারেল ফার্মাসিউটিক্যালস লিমিটেডের রক্তের কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণে এবং হৃদরোগীর জন্য ব্যবহৃত ১০ মি.গ্রাম রসুজেন প্রতি পিস ট্যাবলেট ২৩ টাকা থেকে বেড়ে ২৭ টাকা হয়েছে। আগে ৩০টি ট্যাবলেটের এক বক্স বিক্রি হতো ৬৯০ টাকা। এখন বিক্রি হচ্ছে ৮১০ টাকায়। প্রতি বক্স বেড়েছে ১২০ টাকা। এ ছাড়াও অ্যান্টিবায়োটিক ফেমিসেফ ৭০ মিলির বোতলের দাম ২৮২ টাকা থেকে বাড়িয়ে ৩২৫ টাকা করা হয়েছে। বাতের চিকিৎসায় বহুল ব্যবহৃত ওষুধ আর্থ-এটিএস (জেনেরিক গ্লুকোস্যামিন সালফেট+কনড্রয়টিন) ৬০০+৭৫০ মিলিগ্রাম ট্যাবলেটের দাম ২৫ টাকা থেকে বাড়িয়ে ৩০ টাকা করা হয়েছে। রুসট্যাব (জেনেরিক রসুভাসটাটিন) ২০ মিলির ট্যাবলেটের দাম আগে ছিল ২৫ টাকা। বর্তমানে তা ৩০ টাকা করা হয়েছে।

এ ব্যাপারে পুরান ঢাকার আলাউদ্দিন রোডের বিসমিল্লাহ ফামের্সির মালিক মো. হাসিব হোসেন সময়ের আলোকে বলেন, গত কয়েক মাসে প্রায় সব ওষুধের দামই বেড়েছে। গত কয়েক দিনেও বেশ কিছু কোম্পানির ওষুধের দাম বেড়েছে। এখন কোম্পানি দাম বাড়ালে আমাদেরও বেশি দামে বিক্রি করতে হয়। কিন্তু ঘন ঘন দাম বাড়ালে ক্রেতাদের সঙ্গে ঝামেলা হয় আমাদের।

শাহবাগ বিপণিবিতান মার্কেটের হ্যাপি ড্রাগসের কর্মচারী শাকিল হোসেন সময়ের আলোকে বলেন, অ্যান্টিবায়োটিক, গ্যাস্ট্রিক, ভিটামিনসহ অনেক ওষুধেরই দাম বেড়েছে। কোনটা রেখে কোনটার নাম বলব। আমাদের কাছে বিভিন্ন কোম্পানির প্রতিনিধিরা বলছেন বাজেটের পর আবারও বেশকিছু ওষুধের দাম বাড়বে।

শাহবাগের নওয়ার হাবিবুল্লাহ রোডে সোল ফার্মার ওষুধের দোকানের এক কর্মচারী নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসের মতো ওষুধের দামও বাড়ছে। এক কোম্পানির ওষুধ ১ টাকা বাড়ালে অন্য সব কোম্পানিও দাম বাড়াতে প্রতিযোগিতায় নামে। আবার দাম বেশি হওয়ায় অনেকেই দেখা যাচ্ছে কাটছাঁট করে ওষুধ নিচ্ছেন। ক্রেতারা ওষুধ কিনতে এসে প্রায়ই দুঃখ প্রকাশ করেন আমাদের কাছে।
গত ২৯ এপ্রিল দেশে ওষুধের দাম খেয়ালখুশিমতো বৃদ্ধি রোধে কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। কনজ্যুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ ক্যাবের এক রিট আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ওষুধ কোম্পানিগুলোর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে এবং তা আগামী ৩০ দিনের মধ্যে জানাতে ঔষধ প্রশাসন অধিদফতরের মহাপরিচালককে বলা হয়েছে। এ ছাড়াও সরকারের অনুমোদন ছাড়া ফার্মাসিউটিক্যালস কোম্পানিগুলো যাতে কাঁচামাল আমদানি করতে না পারে সে ব্যাপারেও বলা হয়েছে। একই সঙ্গে অব্যাহতভাবে ওষুধের দাম বৃদ্ধি রোধে কর্তৃপক্ষের নিষ্ক্রিয়তা কেন অবৈধ হবে না তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেছেন আদালত।

অন্যদিকে বৃহস্পতিবার এক সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশ ওষুধ শিল্প সমিতির সিনিয়র সহ-সভাপতি এবং ইনসেপ্টা ফার্মাসিউটিক্যালস লিমিটেডের চেয়ারম্যান ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক আবদুল মুক্তাদির বলেন, গত তিন বছরে ক্রমবর্ধমান হারে টাকার অবমূল্যায়ন হয়েছে। ডলার ৮০ টাকা থেকে বেড়ে ১১৭ টাকা ৫০ পয়সা হয়েছে। আমাদের কিনতে হচ্ছে আরও বেশি দিয়ে। এতে বিদেশ থেকে আমদানি করা কাঁচামালের খরচ প্রায় ৩৫ শতাংশ বেড়েছে। একইভাবে গ্যাস-বিদ্যুৎ বা জ্বালানি খরচ দ্বিগুণের বেশি হয়েছে। এতে লোকসানের আশঙ্কায় রয়েছেন বিনিয়োগকারীরা। তাই ওষুধের দাম বৃদ্ধি ছাড়া বিকল্প কোনো উপায় নেই।
এ প্রসঙ্গে বাংলাদেশ ওষুধ শিল্প সমিতির মহাসচিব এসএম সফিউজ্জামান সময়ের আলোকে বলেন, গত কয়েক বছরে দেশে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম শতকরা প্রায় ১০০ ভাগ পর্যন্ত বেড়েছে; সেই তুলনায় ওষুধের দাম বাড়েনি। বিশ্ববাজারে কাঁচামালের দাম বৃদ্ধি, এলসি জটিলতা, গ্যাস-বিদ্যুতের দাম বৃদ্ধি এবং উৎপাদন ব্যয়সহ সার্বিকভাবে সবকিছুর খরচ বেড়েছে। আগে ডলারের রেট ছিল ৮০ টাকা এখন তা বেড়ে ১২০ টাকা হয়েছে। আর ডলারের প্রভাবে ওষুধের কাঁচামাল আমদানির ব্যয় বেড়েছে। তাই এখন ওষুধের দাম না বাড়ালে প্রতিষ্ঠানের টিকে থাকা মুশকিল হয়ে পড়বে। 

ওষুধের দাম বৃদ্বি প্রসঙ্গে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বাস্থ্য অর্থনীতি ইনস্টিটিউটের অধ্যাপক ড. সৈয়দ আবদুল হামিদ সময়ের আলোকে বলেন, দেশে এমনিতেই সব জিনিসের দাম বাড়তি। আবার ওষুধের দাম বাড়লে সাধারণ মানুষের বিপদ হবে। চাল বা আটার দাম বেড়ে গেলে কম দামি খাওয়া যায় কিন্তু ওষুধের ক্ষেত্রে তো তা না। কারণ ওষুধের তো কোনো বিকল্প নেই। চিকিৎসা বৈষম্য আরও বাড়বে। সাধারণ মানুষ স্বাস্থ্যসেবা বঞ্চিত হবে।

তিনি বলেন, ওষুধ হচ্ছে কর্মাশিয়াল প্রোডাক্ট। স্বাভাবিকভাবেই দাম বাড়বে। ওষুধের দাম বাড়াটা অযৌক্তিক না। কিন্তু প্রশ্ন হচ্ছে ওষুধের দাম নিয়ন্ত্রিতভাবে বাড়ছে কি না। আর নিয়ন্ত্রিতভাবে বাড়ার জন্য সরকার ঔষুধ প্রশাসন অধিদফতর করেছে। যদিও তার মূল কাজ ওষুধের দাম নির্ধারণ করা না। তার কাজ হলো ওষুধের স্ট্যার্ন্ডাড বা কোয়ালিটি ঠিক আছে কি না, তা দেখার। কিন্তু তাকে এ দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। তাই ওষুধ প্রশাসনকে ঢেলে সাজাতে হবে।

ড. সৈয়দ আবদুল হামিদ বলেন, ফার্মাসিউটিক্যাল কোম্পানিগুলো বিদেশ থেকে কাঁচামাল আমদানি করছে। তারা দেখায় এক রকমের দাম। তারা ওষুধের দাম নির্ধারণের ভুল তথ্য দেখিয়ে বেশি দাম দেখাচ্ছে। এ ক্ষেত্রে ওষুধ প্রশাসনের খতিয়ে দেখা উচিত আসলে কাঁচামাল কোন দামে আনছে এবং তার মূল্য কত? কোম্পানিগুলো জেনেরিক ওষুধের যে ফর্মুলা রয়েছে তা থেকে বেরিয়ে ইচ্ছামতো দাম নির্ধারণ করে থাকে। 
এ বিষয়ে ঔষধ প্রশাসন অধিদফতরের পরিচালক (প্রশাসন) সালাউদ্দিন আহমেদকে একাধিকবার ফোন করা হলে তিনি কল রিসিভ করেননি।

সময়ের আলো/আরএস/ 




https://www.shomoyeralo.com/ad/1698385080Google-News-Update.jpg

সর্বশেষ সংবাদ

সর্বাধিক পঠিত


ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক: সৈয়দ শাহনেওয়াজ করিম, আমিন মোহাম্মদ মিডিয়া কমিউনিকেশন লিমিটেড এর পক্ষে প্রকাশক গাজী আহমেদ উল্লাহ
নাসির ট্রেড সেন্টার, ৮৯, বীর উত্তম সি আর দত্ত সড়ক (সোনারগাঁও রোড), বাংলামোটর, ঢাকা।

ফোন : +৮৮-০২-৯৬৩২৩৬৮-৭৪, ফ্যাক্স : +৮৮-০২-৯৬৩২৩৭৫ | ই-মেইল : shomoyeralo@gmail.com
close